
সংগৃহীত
একটি ব্রেন টিউমার কেবলমাত্র মাথাব্যথা দিয়ে নয়, আরও কিছু নিঃশব্দ উপসর্গের মাধ্যমে শরীরে জানান দেয়। চিকিৎসকদের মতে, অনেক সময় এসব লক্ষণকে গুরুত্ব না দিলে সমস্যাটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, নিচের ৫টি লক্ষণ দীর্ঘদিন থাকলে ব্রেন টিউমার পরীক্ষার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত:
১. দীর্ঘস্থায়ী বা বেড়ে চলা মাথাব্যথা
- সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধেও উপশম হয় না এমন মাথাব্যথা, বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠে শুরু হলে তা বিপদের ইঙ্গিত হতে পারে। হঠাৎ হাঁচি, কাশি বা ঝুঁকে পড়লে মাথাব্যথা বেড়ে যাওয়া এই টিউমারের লক্ষণ হতে পারে।
২. দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তিতে পরিবর্তন
- চোখে ঝাপসা দেখা, ডাবল ভিশন বা পার্শ্বদৃষ্টিতে সমস্যা
- কানে বাজা বা একপাশের শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া
- এসব পরিবর্তন মস্তিষ্কে টিউমার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে নার্ভে চাপ পড়ার ফলেও হতে পারে।
৩. হঠাৎ দুর্বলতা, অসাড়তা বা ভারসাম্যহীনতা
- শরীরের এক পাশ হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়া
- হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খাওয়া বা মৃদু কাজেও হাত কাঁপা
- টিউমার মস্তিষ্কের মোটর কন্ট্রোল অংশে চাপ ফেললে এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়।
৪. খিঁচুনি বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
- প্রথমবারের মতো খিঁচুনি হওয়া বা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ব্রেন টিউমারের সূচনালক্ষণ হতে পারে, বিশেষত প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে।
৫. ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন বা স্মৃতিভ্রংশ
- মনোযোগ কমে যাওয়া, কথা খুঁজে পেতে সমস্যা হওয়া
- মেজাজে হঠাৎ পরিবর্তন, যেমন অতিরিক্ত রাগ বা উদ্বেগ
- গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ভুলে যাওয়া
- মস্তিষ্কের সামনের অংশে টিউমার হলে এমন আচরণগত পরিবর্তন হতে পারে।
হেলথ কেয়ার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব উপসর্গ যদি একাধিকবার দেখা দেয়, তবে এমআরআই বা সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে বিস্তারিত পরীক্ষা জরুরি। কারণ, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে চিকিৎসা অনেক বেশি কার্যকর হয়।
"ব্রেন টিউমার মানেই মৃত্যু নয়, তবে দেরি করলে ঝুঁকি বাড়ে," বলছেন নিউরো সার্জন ডা. অরিজিৎ মুখার্জি।
ব্রেন টিউমারের উপসর্গগুলো অনেক সময় অন্যান্য সাধারণ অসুস্থতার মতো মনে হলেও, সতর্ক না হলে তা ভয়াবহ হতে পারে। তাই শরীরের ভাষা বুঝে যথাসময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
হ্যাপী