স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ৪০ হাজার টাকায় আপস-রফা করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার দুদিন পর স্থানীয়ভাবে সালিশের নামে ধর্ষকের বাড়ির সামনের রাস্তায় ডেকে নিয়ে ওই কিশোরীর বাবার কাছ থেকে সাদা (কিছু না লেখা) ষ্ট্যাম্পে জোর পূর্বক স্বাক্ষরও নিয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে ওই স্কুল ছাত্রীকে এলাকার বাইরে এক আত্মিয়ের বাড়িতে পাঠিয়েছে তার পরিবার। সেখান থেকে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। স্থানীয় প্রভাব ও পারিপার্শ্বিক চাপে রাতে বাড়ি থাকতে পারছেন না ওই কিশোরীর পরিবার।
মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) বিকেলে ওই কিশোরীর বাবা বলেন, আমি দিনমজুরির কাজ করে সংসার চালাই। গত বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) কাজের কারণে বাগেরহাটে ছিলাম। বাড়িতে না থাকার সুযোগে ওই রাতে প্রতিবেশি গৌরঙ্গ দাস (৩২) আমার মেয়েকে অচেতন করে ঘরের জানালা ভেঙে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ভোর রাতে মেয়েকে বাড়ির পাশের একটি পুকুর সংলগ্ন বাগানে খুঁজে পাওয়া যায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা যুবক গৌরঙ্গের একাধিক বিয়ে আছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মেয়েদের উত্যক্ত করাসহ নানা অভিযোগও রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই ছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তোড়জোড় শুরু করে স্থানীয়ভাবে বিএনপি নেতা পরিচয় দেওয়া কিছু ব্যক্তি। তাদের মাঝে ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য হুমায়ুন মোড়ল ও কামরানের চাপে রবিবার বেলা ১১টার দিকে ধর্ষকের বাড়ির সামনের রাস্তায় সালিশ বৈঠক হয়। সেখানেই জোর করে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়ের বাবার হাতে ৪০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। হুমায়ুন মোড়ল বেতাগা ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক। তবে কামরানের দলীয় পদ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
ওই কিশোরীর বাবা আরও বলেন, হুমায়ুন মোড়ল ও কামরান মিলে মেয়েকে ধর্ষণের বিষয়টি মিট-মিমাংশা করে। প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে। পরে স্ট্যাম্পে সই নিয়ে ৪০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেয়। ‘আত্মঙ্কে আমি বাড়ি-ঘরে থাকতে পারতিছি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা হুমায়ুন মোড়ল বলেন, ‘কে বলিছে আপনারে। অভিযোগকারীর কাছে খোঁজ করেন, সেটা আমারে বলে কোন প্রয়োজন আছে। আমি কিছু জানি না।’ বলে ফোন কেটে দেন।
স্থানীয়রা বলছেন, ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তারা টাকা নেওয়ার পাশাপাশি এ নিয়ে মামলা হতে না দেওয়ার শর্তে জমি লিখে নেওয়ারও চেষ্টা করছে।
ফকিরহাট থানার ওসি আশরাফুল আলম বলেন, এখনও এ ধরণের কোন অভিযোগ কেউ করেনি। তাদের নির্ভয়ে থানায় আসতে বলেন। আমরা ব্যবস্থা নেব।
শহিদ