ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

উচ্চ মূল্যের বাজারেও দুই টাকার সিঙ্গাড়া! সাফল্যের গল্প মনিরুল ইসলামের

আকিমুল ইসলাম সাজু ,কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার,কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ২২:৫০, ১৯ জুলাই ২০২৫

উচ্চ মূল্যের বাজারেও দুই টাকার সিঙ্গাড়া! সাফল্যের গল্প মনিরুল ইসলামের

দৈনিক জনকণ্ঠ

উচ্চমূল্যের এই বাজারেও মাত্র দুই টাকায় সিঙ্গাড়া বিক্রি করে আলোচনায় এসেছেন কোটচাঁদপুরের মনিরুল ইসলাম (৩৫)। দীর্ঘ ১৫ বছরের চেষ্টায় তিনি হয়ে উঠেছেন একজন সফল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

কোটচাঁদপুর কলেজ বাসস্ট্যান্ড পাড়ার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম প্রথমে নিজের তৈরি সিঙ্গাড়া ট্রেনে বিক্রি করতেন। সেখান থেকেই শুরু হয় তার ব্যবসার পথচলা। অল্প পুঁজি আর সীমিত লাভে ব্যবসা চালিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন নিজের সংসার, কিনেছেন জমি, নির্মাণ করেছেন বাড়ি।

গত দুই মাস ধরে কোটচাঁদপুর সরকারি কলেজ সড়কে একটি পাকা দোকানে স্থায়ীভাবে সিঙ্গাড়া বিক্রি করছেন তিনি। দোকানে ঝুলছে একটি সাইনবোর্ড—“সিঙ্গাড়া মাত্র ২ টাকা!” আর এই স্বল্প মূল্যের সিঙ্গাড়ার দোকানে প্রতিদিনই ভিড় করছেন ক্রেতারা।

মনিরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে  জানান, প্রতিদিন তিনি ৫ কেজি ময়দা, ৫ কেজি আলু এবং ৪ কেজি তেল ব্যবহার করে তৈরি করেন প্রায় ১,০০০ পিস সিঙ্গাড়া। প্রতিটি সিঙ্গাড়া বিক্রি হয় মাত্র দুই টাকায়, যার মোট আয় ২,০০০ টাকা। সেই অর্থ থেকেই পরের দিনের খরচ ও সংসারের ব্যয় মেটান তিনি।

স্থানীয় ক্রেতারা তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। গুড়পাড়া গ্রামের রোকনুজ্জামান বলেন, "এই বাজারে দুই টাকার সিঙ্গাড়া পাওয়া অভাবনীয়, মনিরুল ভাইয়ের উদ্যোগ প্রশংসার যোগ্য।"
রেজাউল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, “সিঙ্গাড়া যেমন স্বাদের, তেমনি দামে সাশ্রয়ী। এমন উদ্যোগ যেন অন্যরাও নেয়।”

মনিরুল ইসলাম জানান, ২০১০ সালে মাত্র ১,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেন সিঙ্গাড়া ব্যবসা। প্রথমে একাই বানাতেন এবং বিক্রি করতেন ট্রেনে। এখন স্ত্রী আসমা খাতুন তার সহযোগী। আসমা বলেন, “স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করে আজ আমরা ভালোই আছি।”

এই সফলতার গল্প অনেক বেকার যুবকের জন্য হতে পারে অনুপ্রেরণার উৎস। মনিরুল ইসলাম দেখিয়ে দিয়েছেন—সৎ ইচ্ছা আর পরিশ্রম থাকলে, সামান্য পুঁজিতেও গড়া যায় একটি স্বপ্নময় ভবিষ্যৎ।

হ্যাপী

×