সেন্টমার্টিন দ্বীপ। ছবি:সংগৃহীত
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কাজ করবে প্রাণ-আরএফএল ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। এ লক্ষ্যে দু’টি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ‘সেন্টমার্টিনের পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই অর্থনীতি' শীর্ষক একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে সেন্টমার্টিনে উদ্যোগটির উদ্বোধন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ সোলায়মান হায়দার।এ উদ্যোগের অধীনে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পবিবেশ দূষণকারী বর্জ্য সংগ্রহ, সংগৃহীত বর্জ্য পরবর্তীতে রিসাইক্লিং করা হবে। এছাড়া দ্বীপের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনে সহায়তা করা হবে। এই উদ্যোগের আওতায় দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে নানা ধরনের কর্মসূচি এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দ্বীপে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ সোলায়মান হায়দার বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটকদের যাতায়াত, অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ, পরিবেশ দূষণ, পর্যটকদের অসচেতনতার কারণে এখানকার পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্বীপ রক্ষায় নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণ-আরএফএল ও ইউএনডিপি'র যৌথ উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সবার সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমেই কেবল সেন্টমার্টিনকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশের সুরক্ষা নিয়ে নানা ধরনের কাজ করছে প্রাণ-আরএফএল। এর জন্য 'লেটস সেভ দ্য প্লানেট' নামে একটি প্লাটফর্ম রয়েছে। এ প্লাটর্ফম পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে জীবন-জীবিকা, ব্যবসা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে টেকসই করতে কাজ করছে।
ইউএনডিপির হেড অব এক্সপেরিমেন্টেশন ড. রমিজ উদ্দিন বলেন, টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতে ইউএনডিপি সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। ইউএনডিপি প্রথমে দ্বীপে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করতো, এরপর প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ যুক্ত হওয়ায় এ কাজের গতি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রুপটি দ্বীপের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে আরো ভূমিকা রাখাবে বলে আশা করি।
এর আগে পরিবেশে দূষণ রোধে দ্বীপবাসী ও পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে বিচ ক্লিনিং কর্মসূচি পালন করা হয়। সোমবার সকালে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ ও মাই সেন্টমার্টিনের সহযোগিতায় এ আয়োজনে পর্যটক ও দ্বীপের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
অংশগ্রহণকারীরা সেন্টমার্টিন দ্বীপের জাহাজ ঘাট থেকে শুরু করে দ্বীপের পশ্চিম বিচ পর্যন্ত সৈকতে পড়ে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করেছেন এবং সচেতনতা তৈরির জন্য র্যালি, বিভিন্ন ধরনের লিফলেট বিতরণ ও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো এবং স্থানীয় লোকজনকে এই কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
বিচ ক্লিনিং কর্মসূচিতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব কর্পোরেট ব্র্যান্ড নুরুল আফসার, হেড অব সাসটেইনেবিলিটি সুমাইয়া তাবাস্সুম আহমেদ, ইউএনডিপি'র ডেটা অ্যানালিটিকস কর্মকর্তা আহমেদ উল্লাহ কবির এবং মাই সেন্টমার্টিনের প্রতিনিধিবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
তাবিব