ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রং পরিবর্তনে সক্ষম প্রাণী

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ৬ মার্চ ২০২০

রং পরিবর্তনে সক্ষম প্রাণী

প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষ সময়ে সময়ে নিজেদের পরিবর্তন করে থাকে। তবে শরীরের রং পরিবর্তন করার ক্ষমতা কিন্তু মানুষের মাঝে নেই। যে বিশেষ ক্ষমতাটি রয়েছে জীবজগতের গুটিকয়েক প্রাণীর। শরীরের রং পরিবর্তনে সক্ষম এমনই কিছু প্রাণী নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। লিখেছেন -মুনতাসির সিয়াম সি হর্স আকারে বেশ ছোট সি হর্স নামের প্রাণীটি। মূলত শিকারিকে এড়িয়ে চলতেই এরা গায়ের রং পরিবর্তন করে। তবে এর বাইরেও সম গোত্রীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে, শিকার ধরতে এবং সঙ্গীকে মুগ্ধ করতে গায়ের রং পরিবর্তন করে থাকে। বিপজ্জনক মুহূর্তে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানেই একটি সি হর্স রঙের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। কিন্তু সঙ্গীকে আকর্ষিত করার সময় এদের রং পরিবর্তনে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। আর্কটিক ফক্স এটি পৃথিবীর অন্যতম একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী, যাদের শীতকালে গায়ের লোমের রং পরিবর্তন হয়। তবে এই পরিবর্তন হয় তুলনামূলক দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে। রং পরিবর্তন করতে পারায় খুব সহজেই এরা শিকারির চোখকে ফাঁকি দিতে পারে। কাজেই বরফাচ্ছন্ন মৌসুমে আর্কটিক ফক্সকে সাধারণত সাদা রং ধারণ করতে দেখা যায়। ঠা-া আবহাওয়ায় শরীরে বেশি তাপমাত্রা ধরে রাখার কৌশল হিসেবেও এরা নিজেদের গায়ের রং পরিবর্তন করে থাকে। পিকক ফ্লাউন্ডার মহাসাগরের গভীর তলে বসবাস পিকক ফ্লাউন্ডারের। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিজেদের গায়ের রং পরিবর্তন করতে পারে এরা। শিকার ধরার বেলায় রং পরিবর্তনের মাধ্যমে ছদ্মবেশ ধারণ করা এদের অন্যতম কৌশল। গবেষকদের মতে, আশপাশের অবস্থা বিবেচনা করে পিকক ফ্লাউন্ডারের চোখ তাদের মাথায় বার্তা প্রেরণ করে। আর সেই বার্তা অনুযায়ী হরমোন নিঃসরণ শুরু হওয়ার পর ত্বকের পৃষ্ঠে প্রয়োজনীয় রঙের যোগান পেয়ে থাকে পিকক ফ্লাউন্ডার। মিমিক অক্টোপাস ইংরেজী মিমিক শব্দের অর্থ অনুকরণ করা। নিজেদের শরীরের রং পরিবর্তনের পাশাপাশি, এদের মধ্যে রয়েছে অন্যান্য প্রাণীর অনুকরণ করারও এক বিশেষ ক্ষমতা। মিমিক অক্টোপাস খুব সহজেই নিজেদের শরীরের রং এবং আকৃতি পরিবর্তন করে ভাসমান প্রবাল, লায়ন ফিশ, জেলিফিশ, সামুদ্রিক বিভিন্ন সাপসহ প্রভৃতি প্রাণীর রূপ ধারণ করতে পারে। রূপ পরিবর্তন করে শিকারিদের চোখকে ফাঁকি দেয়ার বেলায় এদের জুড়ি মেলা সত্যিই ভার। ক্যামেলিয়ন ক্যামেলিয়নের গায়ের রং পরিবর্তনটা নির্ভর করে মূলত এদের মেজাজ, পরিবেশের তাপমাত্রা এবং আলোর উজ্জ্বলতার ওপর। এদের শরীরের চামড়ার নিচে এক প্রকার বিশেষ পিগমেন্ট ধারণকারী কোষ থাকে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ক্যামেলিয়ন তার মস্তিষ্ক থেকে সেই পিগমেন্টে বার্তা প্রদান করার ফলে বিভিন্ন রং প্রকাশ পায়। শিকারিদের কাছ থেকে বাঁচার জন্য এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে এদের সর্বোচ্চ ২০ সেকেন্ডের মতো সময়ের প্রয়োজন হয়। কাটল ফিশ আট বাহু বিশিষ্ট সমুদ্রের কাটল ফিশ নামের অমেরুদণ্ডী প্রাণীটি তাদের বুদ্ধিমত্তার জন্য বেশ প্রশংসিত। শরীরের রং পরিবর্তন করে ছদ্মবেশ ধারণ করার বেলায় এদের প্রতিভা অসাধারণ। গবেষকদের মতে, শত্রুর কবল থেকে বাঁচতে কাটল ফিশ প্রয়োজনীয় রং ও আকৃতি ধারণ করতে সক্ষম। কিন্তু এরা নিজেরাই কালার ব্লাইন্ড প্রকৃতির প্রাণী। সমবর্তিত আলোর মাধ্যমে এরা দেখে থাকে, যা কিনা সাধারণভাবে মানুষের দৃষ্টিসীমার বাইরে।
×