ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবার রোজিনা

এনআই বুলবুল

প্রকাশিত: ০১:৫৭, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩

আবার রোজিনা

আশির দশকের ঢাকাই সিনেমার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী রোজিনা

আশির দশকের ঢাকাই সিনেমার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী রোজিনা। ১৯৭৬ সালে ‘জানোয়ার’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে নাম লেখান তিনি। এরপর এফ কবীর পরিচালিত ‘রাজমহল’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘সাহেব’, ‘তাসের ঘর’, ‘হাসু আমার হাসু’, ‘হিসাব চাই’, ‘বন্ধু আমার’, ‘কসাই’, ‘জীবনধারা’। দীর্ঘ সময় এ অভিনেত্রী সিনেমা থেকে দূরে ছিলেন।

তবে করোনার আগ থেকে আবারও নিয়মিত হয়েছেন বলে জানান। বর্তমানে তিনি চলচ্চিত্রের সেন্সর বোর্ডেরও সদস্য। এ কারণে এ সময়ের সিনেমাগুলোও নিয়মিত দেখা হয় বলে জানান। তিনি বলেন, সেন্সর বোর্ডের সদস্য হওয়ায় আমাকে অনেক সিনেমা দেখতে হয়। আমি খুব আশাবাদী আমাদের সিনেমা আরও অনেক দূর যাবে। শেষ কিছু সিনেমা দেখলে সেটি সহজে বোঝা যায়। বাজেট সংকটসহ আরও অনেক সমস্যা এখন আমাদের সিনেমা। এর মধ্যেও ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে বলতে হয়। অনেক সময় দেখি কম বাজেটের সিনমাগুলোও দারুণ হচ্ছে।’

 ১৯৮০ সালে রোজিনা ‘কসাই’ ছবির জন্য জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন এবং ১৯৮৮ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ‘জীবন ধারা’ ছবির জন্য পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি বাচসাস পুরস্কারও লাভ করেন। অভিনয়ের জন্য তিনি ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ হতে ছোট বড় প্রায় ১৫টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। এ সময়ের অভিনেত্রীদের ঝুড়িতে এমন সাফল্য খুব কমই দেখা যায়। নতুন প্রজন্মের অনেকে সিনেমার চেয়ে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বেশি আলোচিত। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে গণমাধ্যমেও তাদের নিয়ে খবরের শিরোনাম করছে।

এসব নিয়ে রোজিনার মন্তব্য কী? উত্তরে তিনি বলেন, যারা সিনেমার চেয়ে নিজেকে অন্যভাবে বেশি প্রমোট করছে তারা সিনেমার পরিবশে নষ্ট করছে। যখন কেউ সিনেমায় আসবে তখন তার সিনেমার কাজকেই বেশি ফোকাস করা উচিত। তাহলেই সাধারণ দর্শকের মনে তারা জায়গা করে নিতে পারবে। এরপরেও কেউ যদি এমনটা না  করে সেটা তাদের বিষয়। আমাদের সিনিয়র শিল্পীদের দিকে তাকালে দেখতে পাই তারা কিভাবে সিনেমাকে ভালোবেসেছে। বিশেষ করে শাবানা আপা, কবরী আপা, রাজ্জাক ভাই, ওয়াসিম ভাই তাদের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।

আমার নিজেরই শাবানা আপাকে দেখে নায়িকা হবার ইচ্ছে জাগে। কিন্তু এখনকার কতজনকে নতুন প্রজন্ম এভাবে অনুসরণ করে? ক্যারিয়ারের এ সময়ে এসেও অভিনেত্রী তার অভিনয়ের অতৃপ্তির কথা জানান। কাজী নজরুল ইসলামের রাক্ষুসী গল্পে অভিনয় করেন তিনি। তবে নজরুলের বাইরে রবীন্দ্রনাথসহ এমন বিখ্যাত মানুষদের গল্পে কাজ করার তার সুপ্ত বাসনা।’ এদিকে প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্র পরিচালনা করছেন রোজিনা। সিনেমাটির নাম ‘ফিরে দেখা’। পরিচালনার পাশাপাশি এতে তিনি অভিনয়ও করেছেন। এ সিনেমার মধ্য দিয়ে তিনি সিনেমার লাইট-ক্যামেরার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

সরকারি অনুদানের এ সিনেমায় আরও অভিনয় করছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, নিরব ও অর্চিতা স্পশিয়াসহ অনেকে। সিনেমাটির সর্বশেষ খবর জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন সিনেমার ভালো একটা পরিবেশ যাচ্ছে। আমার সিনেমাটিও মুক্তির পরিকল্পনা করছি। খুব শিগগিরই মুক্তি পাবে। শোবিজের বাইরে এ অভিনেত্রী সামাজিক কাজের সঙ্গেও যুক্ত আছেন। নিজ এলাকা রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নিজস্ব অর্থায়নে দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের এ নায়িকা। গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লার পাড়ায় প্রায় ৭ শতাংশ জায়গার ওপর ১ হাজার ৬০০ বর্গফুটের দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদ রোজিনার মায়ের নামে নামকরণ করা হয়েছে। মসজিদটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দশগম্বুজ মা খাদিজা জামে মসজিদ’।

×