বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কাশফুলের শুভ্রতা ছড়াতে শুরু করে
সকালে সূর্য যখন পূর্বদিকে উঁকি মারে ঠিক তখন থেকেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কাশফুলের শুভ্রতা ছড়াতে শুরু করে। দিন যতই যাচ্ছে ৫০ একরের ববি ক্যাম্পাস ক্রমশ যেন এক সাদা স্বর্গরাজ্যে পরিণত হচ্ছে। প্রতিটি শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক সকলেই নিয়ম করে প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের এই শুভ্র শরতের কাশফুলের উষ্ণমাখা আর্দ্রতা অনুভব করছে। বিনা মূল্যে যান্ত্রিক শহরে এমন শুভ্র ও স্বর্গীয় আনন্দ আকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছে ববি ক্যাম্পাসের কাশফুলেরা।
এই কাশফুলের সৌন্দর্যকে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখার জন্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়ে রংবেরঙের পোশাকে পরিধান করে কাশফুলের রাজ্যে নিজেদের মেলে ধরছে আর ছবি তুলছে। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বেশ ছড়িয়ে পড়েছে। এমন মুহূর্তগুলোই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার মতো! কারণ এরকম মানুষজন নেই, যাদের মন চাই না স্নিগ্ধ বিকেলে নরম ও কোমল মাখা কাশফুলের পরশ পেতে। যদি এমন মানুষজন থেকেও থাকে, তবে তাদের সংখ্যা খুবই কম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে নানান রকমের শাড়ি চুরি পরে নিজেদের পরিপাটি করে একরাশ আনন্দ উপভোগের জন্য গোধূলী লগ্ন পর্যন্তও কাশফুলের রাজ্যে বিচরণ করছে। এক্ষেত্রে ছেলে শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে নেই, ক্যাম্পাসের কাশফুলের মাঝে বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে। এমন পরিস্থিতিগুলোর মাঝে শিল্পীর রংতুলি দিয়ে আঁকানো দৃশ্য খুবই তুচ্ছ।
প্রকৃতির শুভ্র এই স্বর্গরাজ্য নিঃসন্দেহে ববি ক্যাম্পাসের জন্য এক প্রকৃতি প্রদত্ত উপকার। শহরের কোলাহলময় পরিবেশে প্রকৃতির এই উপকার ববি ক্যাম্পাসের তরুণ শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আহরণ, বিতরণ এবং সৃষ্টিতে বেশ সহায়ক। যার উপকারিতা কলমের খোঁচায় দু’লাইন লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। আমরা সকলেই জানি, গুণগত পড়াশোনা এবং গবেষণার জন্য একটি সুন্দর এবং নিরিবিলি পরিবেশ লাগে। শরতকালের কাশফুলে মুড়ানো এই পুরো ববি ক্যাম্পাস গুণগত পড়াশোনা এবং গবেষণা নিশ্চিত এক অনন্য নজির হয়ে যাচ্ছে।
কাশফুল যেন শরতকালের শ্রেষ্ঠ উপহার। কাশফুল ছাড়া শরতকালের অস্তিত্ব নেই। আবার শরতকাল ছাড়া কাশফুল একেবারই অর্থহীন। তাইতো, শরতকাল এবং কাশফুল উভয়ই যেন একে অন্যের পরিপূরক । এই পরিপূরকের মেলবন্ধনে ববি ক্যাম্পাস নিজেকে স্বচ্ছ সাদা বোরকায় আবৃত করে রেখেছে। যে দৃশ্য দেখলে চোখ দুটোও প্রশান্তি পাই এবং হৃদয়টাও কোমল হয়ে যায়। উল্লেখ্য, শরতকালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনাজুড়ে থাকা প্রতিটি কাশফুল হলো এক একটি ভালবাসা।
মানুষ তো সেই জিনিসকেই ভালবাসে যা আমাদের হৃদয়ে শান্তি আর তৃপ্তির প্রত্যাশা ছড়িয়ে দেয়। কথায় আছে, কাশফুলের সাদার শুভ্রতায় মন চায় হারিয়ে যাই অজানায়। এমন অজানায় হারিয়ে যাওয়ার জন্য বরিশালের আশপাশ থেকে অসংখ্য লোকজন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ববির ক্যাম্পাসে ভিড় জমাচ্ছেন। এতে করে ববি ক্যাম্পাস সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত হচ্ছে। সর্বোপরি, ঢলে ঢলে মানুষের আগমনে ববির কাশফুল যেন সৌন্দর্যের এক অনন্য মাত্রা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।