ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জোর করে কারো কাছ থেকে রাজস্ব আহরণ করা যায় না

রাজস্ব আদায়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ১৮:৫৭, ৫ জুলাই ২০২২; আপডেট: ১৯:২৬, ৫ জুলাই ২০২২

রাজস্ব আদায়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘জোর করে কারো কাছ থেকে রাজস্ব আহরণ করা যায় না। সে জন্য জনগণকে সচেতন করতে হবে।’

জনগণ সহজেই যেন কর দিতে পারে সে জন্য সংস্কারের মাধ্যমে রাজস্বব্যবস্থাকে বদলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জোর করে কারো কাছ থেকে রাজস্ব আহরণ করা যায় না। সে জন্য জনগণকে সচেতন করতে হবে।’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা জোর দিয়েছি সিস্টেমের ওপর। সিস্টেম যাতে সহজ হয় সে জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।’

এ সময় এনবিআরের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ১৮তম লটারির ড্রয়ের পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রহমাতুল মুনিম জানান, গত তিন বছর পর পর করহার কমানো হয়েছে। ধারণা করা হয়, করহার কমলে রাজস্ব আহরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু এটা ঠিক নয়, বরং করহার কমালে ও আদায় প্রক্রিয়া সহজ করলে রাজস্ব আদায় বাড়ে। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে এনবিআর কাজ করছে।

বর্ধিত কর আহরণের জন্য নেট বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান দেশে করদাতা শনাক্তকারী নম্বর বা টিআইএনধারীর সংখ্যা অনেক বেশি হলেও সে অনুযায়ী রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা কম বলে জানান তিনি

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, রিটার্ন জমার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে নতুন অর্থবছরে। সেটি হলো রিটার্ন দাখিলের সঙ্গে আগের বছরের দলিলপত্র ও আনুষঙ্গিক প্রমাণাদি জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে করে আশা করা হচ্ছে, রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বাড়বে।

তিনি বলেন, 'উপজেলা পর্যন্ত নতুন করদাতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সে জন্য আমরা উপজেলা পর্যন্ত কর অফিস সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছি এবং এ বিষয়ে সম্প্রসারণ প্রস্তাব জনপ্রশাসনের জমা দেয়া হয়েছে। আশা করছি, এটি কার্যকর হলে উপজেলা পর্যায়ে করদাতা শনাক্ত করা সহজ হবে।'

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আয়কর, মূল্য সংযোজন কর ও কাস্টমসে আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলছে। ফলে গোটা রাজস্বব্যবস্থা বদলে যাবে। রাজস্ব আহরণে বাড়বে গতি। সামগ্রিকভাবে দেশের চেহারা বদলে দেয়ার জন্য এনবিআর বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে আগামী দিনে।

ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস বা ইএফডি নিয়ে কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এটি একটি নতুন প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগবে। সারা দেশে ৭ হাজার ভ্যাট মেশিন বসানো হয়েছে। যদিও গত বছর পর্যন্ত টার্গেট ছিল ১০ হাজার মেশিন বসানোর।

চেয়ারম্যান জানান, ইএফডি মেশিন ব্যবহার উৎসাহিত করতে লটারি সিস্টেম চালু করা হলেও এর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ তেমন নেই। কেন আগ্রহ নেই সেটি বোধগম্য নয় বল জানান তিনি।

এ বিষয়ে তিনি আরো জানান, লটারি ড্রর পর পুরস্কারের জন্য আবেদন জমা হয়েছে প্রায় ১৮০০। কিন্তু দাবি এসেছে মাত্র একটি। অবশ্য পুরস্কারের জন্য দাবি কেন কম পড়েছে তার ব্যাখ্যা দেননি এনবিআর চেয়ারম্যান।

খুচরা পর্যায় ভ্যাট আদায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এই খাতে ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়া এখনো অস্বচ্ছ চেষ্টা করা হচ্ছে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার কিন্তু সফল হতে পারছি না এর একটি কারণ হতে পারে, খুচরা ব্যবসায়ীদের সংখ্যা অনেক বেশি যে কারণে তাদের কাছ থেকে যথাযথ ভ্যাট আদায় করা কঠিন

তিনি বলেন, এখানে তদারকি ব্যবস্থা দুর্বল। এটি শক্তিশালী করা গেলে খুচরা পর্যায়ে ভ্যাট আদায়ের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। এ জন্য অটোমেশনে কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।

×