ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

তুলা ও কৃত্রিম আঁশ আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করল এনবিআর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:৩২, ১৯ জুলাই ২০২৫

তুলা ও কৃত্রিম আঁশ আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করল এনবিআর

তুলা ও কৃত্রিম আঁশ আমদানিতে সম্প্রতি আরোপিত ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর

পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত তুলা ও কৃত্রিম আঁশ আমদানিতে সম্প্রতি আরোপিত ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। টেক্সটাইল শিল্পখাতের পক্ষ থেকে জোরালো আপত্তির পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি জারি করা এক গেজেটে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে এই কর ছাড় শুধুমাত্র শিল্পখাতের আমদানি নিবন্ধন সনদ (আইআরসি)ধারীদের জন্য প্রযোজ্য; বাণিজ্যিক আমদানিকারকরা এর সুবিধা পাবেন না।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তুলা ও কৃত্রিম আঁশসহ ১৫০টির বেশি আমদানিকৃত কাঁচামালের ওপর এই ২ শতাংশ অগ্রিম কর আরোপ করা হয়েছিল। এনবিআর আশা করেছিল, এসব পণ্যে কর আরোপের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা রাজস্ব আসবে। তবে এনবিআরের এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায় দেশের টেক্সটাইল মিল মালিকরা। তারা অভিযোগ করেন, এর ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অনেক স্পিনিং মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে, যা দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বাংলাদেশ প্রতিবছর গার্মেন্ট রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে ব্যবহৃত তুলার প্রায় ৯৯ শতাংশ আমদানি করে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)-এর তথ্যমতে, ২০২৪ সালে দেশে আমদানি হয়েছে ৮৩ লাখ ২১ হাজার বেল তুলা। এর মধ্যে ৪৩ শতাংশ এসেছে আফ্রিকা থেকে, পাশাপাশি ভারত, সিআইএস দেশ, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকেও তুলা আসে। যুক্তরাষ্ট্র থেকেই এসেছে ৭ শতাংশের বেশি তুলা। অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত কৃত্রিম আঁশ এবং এর কাঁচামাল যেমন অ্যাক্রিলিক, সিনথেটিক, নাইলন, পলিয়েস্টার ইত্যাদির আমদানির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেগুলোর বেশিরভাগই আসে চীন থেকে।
বিটিএমএর সহ-সভাপতি ও এনজেড টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালেউদ জামান খান এনবিআরের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সরকারি হিসেবে করের হার ২৭ শতাংশ হলেও, ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর যুক্ত হলে আমার কারখানার ওপর কার্যত কর হার দাঁড়াত ৬৪ শতাংশ। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের তুলা ও কৃত্রিম আঁশ আমদানি করে। এই কর বহাল থাকলে টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে যেত। শুধু তুলা আমদানির জন্য বছরে ৩২ কোটি টাকা কর দিতে হতো, যা কোনো কারখানাই আয় করে না।’
এনবিআর কর্মকর্তারা অবশ্য এই করের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছিলেন, এটি শেষ পর্যন্ত আয়ের ওপর কর হিসেবে সমন্বয় করা যাবে। এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, আমদানির সময় কর দিলেও, বছরের শেষে লাভ হলে তা সমন্বয় করে ফেলা যায়।

প্যানেল হু

×