আইসিবির ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ গ্যারান্টিতে সরকারের সায়
তারল্য সংকট কাটানো ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ পাইয়ে দিতে গ্যারান্টার হতে সায় দিয়েছে সরকার। এতে সরকার সার্বভৌম (সভরেইন) গ্যারান্টার হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ পাওয়ার দরজা খুললো আইসিবির।
সরকারের গ্যারান্টিপত্র পেয়ে অর্থ পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করবে আইসিবি। গ্যারান্টি থাকায় কোনো কারণে আইসিবি ঋণের অর্থ ফেরত দিতে না পারলে সরকারকে তা পরিশোধ করতে হবে। এ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার পর আইসিবি দাপ্তারিক প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ।
গত ২৯ আগস্ট চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়া এই অধ্যাপক বলেন, অনেক চেষ্টার পর সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি এ টাকা দিলে আইসিবি সামনে এগোতে পারবে। অর্থ উপদেষ্টা সহযোগিতা করেছেন ঋণ পাইয়ে দিতে। অর্থ পেলে পুঁজিবাজারেও তারল্য বাড়বে। আবু আহমেদ বলেন, আগে তো আইসিবির অর্থের অপব্যবহার হয়েছে। কিছু পচা শেয়ারে বিনিয়োগ করেছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসবে আইসিবি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাওয়া ঋণের অর্থ ব্যবহারের একটি খসড়া পরিকল্পনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিল আইসিবি। সেই পরিকল্পনার আলোকে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে আইসিবিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। গত বুধবার ঋণের গ্যারান্টার হতে সম্মতিপত্র ও সেই প্রতিবেদন চেয়ে আইসিবিকে চিঠি দেওয়া হয়।
ঋণের অর্থের ব্যবহারের পরিকল্পনা বিষয়ে আবু আহমেদ বলেন, কিছু উচ্চ সুদের আমানত আছে আইসিবিতে। তাতে সুদ বাবদ বছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়। সেই উচ্চ সুদের আমানতের একটি অংশের ধারাবাহিকতা রাখবে না আইসিবি। অবশিষ্ট অর্থ ধাপে ধাপে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়ছিল। কিন্তু সেই ধারা ছিল কেবল দুই সপ্তাহ। ১৪ আগস্টের পরে বাজারে ধারাবাহিক পতন শুরু হয়। এমনকি একদিনে সূচকের একশ পয়েন্ট হারানোর ঘটনাও বিনিয়োগকারীরা দেখেছেন।
পতনের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাজারে তারল্য প্রবাহে সংকট রয়েছে ও আইসিবিও বিনিয়োগ করতে পারছে না এমন দাবি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তিন হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি চায় প্রতিষ্ঠানটি।