গত ১৬ বছরে আর্থিক খাতে নজরদারির অভাবে ঋণ খেলাপির পরিমাণ অতিরিক্ত হারে। ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের গত জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ছে ২ লাখ ১২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতে বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৯ কোটি এবং ফাইন্যান্সে বেড়েছে ২৪ হাজার ১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী এ খেলাপি ঋণের তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যাংকারদের মতে, খেলাপি বৃদ্ধির প্রকৃত অবস্থা আরও ভয়াবহ। অনেককেই এই ঋণ খেলাপির আওতাভুক্ত করা হয়নি।
২০০৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের শুরুতে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি । যা গত জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। পূর্বের তুলনায় এর পরিমাণ বেড়েছে সাড়ে ৮ গুণ বেড়েছে।
ফাইন্যান্সে শুরুতে খেলাপি ঋণ ছিল ৭১০ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। যা পূর্বের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৩৫ গুণ।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এক প্রতিবেদনে জানায়, গত ১৬ বছরে ব্যাংক খাতে ২৪টি ঋণ কেলেঙ্কারিতে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি আত্মসাৎ করা হয়েছে।
সরকার পতনের পর থেকে এসব জালিয়াতির তথ্য সামনে আসছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঋণখেলাপিদের পক্ষে কাজ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। ফলে খেলাপিরা ঋণ শোধ না করেই একের পর এক ছাড়ের সুবিধা নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে।
সূত্র মতে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ব্যাংক খাতের লুটপাটের তথ্য সামনে আসছে সব। আগে জানা গিয়েছিল ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এখন জানা যাচ্ছে ৭৫ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। যার মধ্যে ২৮ হাজার কোটি টাকা খেলাপির পথে রয়েছে।
অর্ধনীতিবীদদের মতে, খেলাপির যোগ্য ঋণকে খেলাপি না করা, আদালতের নির্দেশে ঋণ খেলাপি না করাসহ নানা কারণে অনেক ঋণ নিয়মিত রয়েছে। এসবে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ এখন ৫ লাখ কোটির বেশি ।
তানজিলা