ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত থেকে আমদানি বাড়ানোর পরামর্শ

কাঁচা মরিচে ডাবল সেঞ্চুরি 

মসুর ডাল ও ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও কমেছে চাল তেল ও পেঁয়াজের

প্রকাশিত: ১৮:২৯, ২৯ জুলাই ২০২২

কাঁচা মরিচে ডাবল সেঞ্চুরি 

কাঁচা মরিচ

সরবরাহ কমে যাওয়ায় কাঁচা বাজারের রাজা এখন কাঁচা মরিচ। প্রতিকেজি মরিচ কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ২০০ টাকায়।  ডাবল সেঞ্চুরি হওয়ার কারণে স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ৫০, ১০০ এবং ২৫০ গ্রাম করে কাঁচা মরিচ কিনছেন খুচরা বাজার থেকে। বৃষ্টিপাত ও বর্ষার কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সাগর ও নদীতে বিপুল পরিমাণ ইলিশ মাছ ধরা পড়লেও খুচরা বাজারে দাম কমছে না। ভরা মৌসুমেও ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়ে ইলিশ মাছ কিনতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের বাজারে মসুর ডাল ও ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও কিছুটা কমেছে চাল, ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের দাম। প্রতিকেজি প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। চিনির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। 


শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, কাপ্তান বাজার, যাত্রাবাড়ি বাজার, মুগদা বড় বাজার ও খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা বাজারে মরিচের ঝাল আরও বেড়েছে। প্রতিকেজি মরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা, গত এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সহসা দাম কমার কোন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্ট মাসে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ে। দেশে এই সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া বন্যায় সাধারণত সবজিখেত নষ্ট হয়ে যায়। ফলে দেশে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমে যায়। এ প্রসঙ্গে ফকিরাপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা খলিল সেক বলেন, পাইকারি বাজারে মরিচের সরবরাহ কমে গেছে, বেড়েছে দামও। এর প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। ওই বাজার থেকে মরিচ কিনছিলেন, কমলাপুরের বাসিন্দা সেকেন্দার আলী। তিনি জানান, কাঁচা মরিচ এখন কাঁচা বাজারের রাজা। দাম এত বেশি যে, বেশিরভাগ ক্রেতা গ্রাম হিসেবে করে মরিচ কিনছেন। এদিকে, শীঘ্রই চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে মরিচ আমদানির ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের নীতিগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। 


এদিকে, বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ মাছের সরবরাহ থাককেও দাম কমছে না। ইলিশের বাজারে মনিটরিং না থাকায় দাম কমছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমান প্রতিকেজি ইলিশ আকার ও সাইজভেদে ৬০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মাছ বিক্রেতা জমির উদ্দিন বলেন, আড়তে ইলিশ মাছের দাম বেশি। এ কারণে খুচরায় দাম কমছে না। দাম কমাতে হলে আগে পাইকারি বাজারের মনিটরিং প্রয়োজন। এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর অন্যান্য পণ্যের দাম কমাতে বাজারে অভিযান পরিচালনা করলেও মাছের বাজারের দিকে নজর  নেই সংস্থাটির। যে কারণে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। দ্রুত মাছের বাজারের দিকে নজর বাড়ানো প্রয়োজন। ওই বাজার থেকে মাছ কিনছিলেন, তিলপা পাড়ার বাসিন্দা রশিদ পাটোয়ারি। তিনি জানান, সাগর ও  নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে এ খবর শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বাজারে এর কোন প্রতিফলন নেই। মাছের দাম কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। 


এদিকে নিত্যপণ্যের বাজারে কিছুটা কমেছে চালের দাম। নাজিরশাইল ও মিনিকেট জাতের সরু চাল ৬৫-৭৫, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৫০-৫৬ এবং স্বর্ণা ও চায়না ইরি জাতের মোটা চাল ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি খোলা আটা ৪০-৪২ এবং প্যাকেট আটা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। দাম কমে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৩৫-৪০, সয়াবিন তেল খোলা প্রতিলিটার ১৬৬-১৭০ এবং প্রতিলিটারের বোতলজাত ক্যান ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে প্রতিকেজি মসুর ডাল ১৩৫-১৫০ এবং প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়। 

 

×