ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

পূজার কেনাকাটায় ব্যস্ত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা

শারদীয় দুর্গোৎসবের সকল প্রস্তুতি মোটামুটি শেষ হয়েছে। ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হবে উৎসব। করোনার কারণে গত দুই বছর স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ উৎসব উদ্যাপন করতে হয়েছে। এবার সে বাধা নেই বললেই চলে। ফলে শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে দারুণ উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঢাকার মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে এখন বাড়তি ভিড়। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সবাই। বৃহস্পতিবার দেশীয় বিখ্যাত ব্র্যান্ড আড়ংয়ের মগবাজার আউটলেটে ঢুকে তো অবাকই হতে হলো।

ঠিকমতো দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না কোথাও। নারী পুরুষ শিশু সবাই যে যার পছন্দ মতো নতুন জামা জুতা কিনছে। নিউমার্কেট গাউসিয়া এলাকায়ও উৎসবের আমেজ। আর আজ শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় ভিড় আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। পরদিন থেকে শহর ঘুরে ঠাকুর দেখা, ছবি তোলা, বেড়ানো। এ বছর রাজধানী ঢাকায় পূজা হবে মোট ২৪১টি ম-পে। বেশিরভাগ ম-পে প্রতিমা তৈরি ও রং করার কাজ শেষ হয়ে গেছে।

দেবী মূর্তি সাজানোর কাজও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শেষ হয়ে গেছে। কাল আঁখি মেলে তাকাবেন দুর্গতিনাশিনী। এ পর্যায়ে মনে করিয়ে দেয়া আবশ্যক যে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে ধর্ম যার যার। উৎসব সবার। ফলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও যোগ দেবেন পাঁচ দিনের উৎসবে। সবার অংশগ্রহণে আরও বেশি উপভোগ্য হয়ে ওঠবে উৎসব- আমাদের তাই প্রত্যাশা।
ফুটবলের আলোর বিপরীতে অন্ধকার ইডেন ॥ এক রাজধানী শহরেই দুটো ছবি। এক ছবিতে আমরা দেখলাম সাফ ট্রফি বিজয়ী নারী ফুটবলারদের। অন্যটিতে ছিলেন ইডেন মহিলা কলেজের দাঙ্গাবাজ মহিলারা। প্রায় একইসঙ্গে ছবি দুটি সামনে আসে। সবার প্রিয় এবং পছন্দের ছবিতে নিঃসন্দেহে নারী ফুটবলাররাই ছিলেন। বাচ্চা বাচ্চা মেয়েরা কী দারুণ গর্বিত করেছে দেশকে। দেশের মানুষকে আনন্দে ভাসিয়েছে। সাফ ফুটবলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন তারা। শিরোপা নিয়ে দেশে ফিরেছে। এর চেয় বড় অর্জন আর কী হতে পারে ? ঢাকাবাসী তাই বিরল ভালবাসা দেখিয়েছে তাদের। ছাদখোলা বাসে শহর প্রদক্ষিণ করার ছবিটি তো সবার মনে গেঁথে আছে। পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতি সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা জানানো হয়। তাদের জন্য একদিনে একাধিক সংবর্ধনা আয়োজন করতেও দেখা গেছে। আলাদা করে উল্লেখ করা যেতে পারে কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে আয়োজিত সংবর্ধনা সভার কথা। একুশ মানে মাথা নত না করা।

শহীদ মিনারে সেদিন মাথা নত না করা নারীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। সাংস্কৃতিক জোটের ব্যানারে রাজধানীর সংস্কৃতি কর্মীরা এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও তাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এভাবে ফুটবলের, তার চেয়ে বড় কথা, নারী শক্তির জয় ঘোষণা করা হচ্ছিল। অথচ এই আনন্দঘন উদ্যাপনের মধ্যেই ইডেনের ছবিটা সামনে চলে আসে। ছাত্র রাজনীতির নামে কলেজটির ছাত্রীরা হলের দখল নিয়েছেন। সিট বাণিজ্য করে পয়সা কামিয়েছেন। আর তারপর ভাগবাটোয়ারা নিয়ে চুলোচুলি।

হলের ভেতরে কলেজ ক্যাম্পাসে এমনকি রাস্তায় নেমে মারামারি, মাস্তানী করতে দেখা গেছে তাদের। চরম অস্বস্তিকর এই ছবি টেলিভিশনে বারবার দেখানো হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মীরা এ ক্ষেত্রে বরাবরের মতোই আন্তরিক ছিলেন, বলতে হবে। দাঙ্গাবাজ নেত্রীদের তারা ঘিরে ধরেছেন। পেছন পেছন ছুটেছেন। ‘কিছু বলুন। কিছু একটা।’ নেত্রীরা প্রথম দিকে বলেছেন। নিজে কত ভাল আর প্রতিপক্ষ কত খারাপ কেঁদে কেটে তা পরিষ্কার ও বিশ্বাসযোগ্য করার চেষ্টা করেছেন। সব মিলিয়ে যারপরনাই অস্বস্তিকর ছিল ইডেনের ছবিটা। একদিকে সমাজের বাধা, ধর্মীয় গোঁড়ামী, দারিদ্র্য সব কিছুকে পরাজিত করা নারী ফুটবলের আলো। অন্যদিকে অন্ধকার ইডেন। কবে এমন অন্ধকার থেকে সর্বৈব মুক্তি মিলবে ?
পরিবেশবান্ধব ই-বাস ডিসেম্বরে ॥ নতুন এবং চমৎকার একটি উদ্যোগ। যানজটের ঢাকায় এবার প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে ই-বাস (ইলেকট্রিক বাস) সেবা। স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য চলতি বছরের ডিসেম্বরে এ সেবা চালু করতে পারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ই-বাস আমদানির জন্য সিটি কর্পোরেশন কাজ করছে বলে জানা গেছে। এই বাস নগরীর গুলশান, বনানী এবং বারিধারা এলাকায় চলাচল করবে।

প্রথম ধাপে পাইলট প্রকল্প হিসেবে যে চারটি স্কুলে স্কুলবাস চালু হতে যাচ্ছে সেগুলো হলো চিটাগং গ্রামার স্কুল-ঢাকা, স্কলাস্টিকা স্কুল, স্যার জন উইলসন স্কুল ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়াল স্কুল। পরিকল্পনাটি সফল হলে ঢাকার সব স্কুলকে ধীরে ধীরে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। যানজট নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

×