ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপ উত্তাপ

ব্রাজিলের প্রাণভোমরা নেইমার, আর্জেন্টিনার চালিকাশক্তি ডি মারিয়া!

প্রকাশিত: ২১:৩২, ২২ জুন ২০২২

ব্রাজিলের প্রাণভোমরা নেইমার, আর্জেন্টিনার চালিকাশক্তি ডি মারিয়া!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আসছে কাতার বিশ্বকাপের হট ফেবারিট বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। এবারের বিশ্বযজ্ঞে দেশ দুটির সাফল্যের বড় কারিগর হতে পারেন তারকা ফরোয়ার্ড নেইমার ও এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ব্রাজিল কোচ তিতে এক সাক্ষাতকারে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, এখনও সেলেসাওদের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার এবং বিশ্বকাপটা তার নৈপুণ্যেই জিততে পারে সাম্বা ছন্দের দেশ। অন্যদিকে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে চোটের কারণে খেলতে পারেননি ডি মারিয়া। অনেকের মতে, ওই ম্যাচে মরিয়া খেলতে পারলে জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল আর্জেন্টিনার। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা মারিয়া ছিলেন ব্রাজিল বিশ্বকাপে আলবিসেলেস্তাদের তরুপের তাস। আট বছর পর এখনও নিজের ছন্দ ধরে রেখেছেন তারকা এই মিডফিল্ডার। অনেকের মতে, এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার দীর্ঘদিনের হাহাকার ঘোচানোর অন্যতম প্রধান কারিগর হতে পারেন তিনি। ইতালির কিংবদন্তি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ডি মারিয়াকে নিয়ে। বর্তমান ব্রাজিল দলে আছে কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। উঠে এসেছে সম্ভাবনাময় তরুণরাও। তবে ব্রাজিল কোচ তিতের কাছে এখনও বড় ভরসা নেইমার। পিএসজি ফরোয়ার্ডকেই তার দলের সবচেয়ে বড় তারকা বলে মনে করেন তিনি। ব্রাজিল জাতীয় দলে নেইমারের অভিষেক হয় ২০১০ সালে। সময়ের পরিক্রমায় এখন দলের প্রাণভোমরা তিনি। ক্লাবের হয়ে ফর্ম যেমনই থাকুক, দেশের হয়ে বরাবরই সেরা ছন্দে দেখা যায় তাকে। এ প্রমাণ নেইমার বারবার দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে ৭৪ গোল করা নেইমার ব্রাজিলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আছেন দুই নম্বরে। আর মাত্র চার গোল করলেই ছাড়িয়ে যাবেন কিংবদন্তি পেলেকে (৭৭ গোল)। সঙ্গতকারণেই কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের শিরোপা সম্ভাবনায় বড় ভরসা নেইমার। এই অভিযানে সহযোদ্ধা হিসেবে তিনি পাবেন তরুণ তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রডরিগো, গ্যাব্রিয়েল জেসুসদের মতো খেলোয়াড়দের। স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ২০২১-২২ মৌসুমে চোখ ধাঁধানো পারফরমেন্স প্রদর্শন করে পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে এসেছেন তরুণ ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়াস। তিতের চোখে অবশ্য তারকায় ঠাসা দলে নেইমারই সবার সেরা। এ প্রসঙ্গে ব্রাজিল বস বলেন, ‘নেইমার তো নেইমারই। সে আমাদের সবচেয়ে বড় তারকা। এখন পার্থক্য হলো, তার আশপাশে তারকা হওয়ার কাছাকাছি থাকা কিছু খেলোয়াড় আছে যারা জ্বলে উঠতে পারে।’ তিতে আরও বলেন, ‘নেইমারের ক্ষেত্রে বড় ব্যাপার হলো, সে এই তরুণদের উন্নতির ধারাটা বোঝে। সে ছেলেদের একটি স্তরে যেতে উৎসাহিত করে। সময় আর অভিজ্ঞতার সঙ্গে মানুষের এই পরিণতিবোধ আসে। বড় মাপের খেলোয়াড় হওয়ায় নেইমারকে নিয়ে সব সময়ই প্রত্যাশা বেশি থাকবে। কিন্তু এটা এখন কেবল তার একার ওপর নয়। নেইমার ছাড়াও প্রত্যাশা থাকবে ভিনিসিয়াস, রাফিনহাদের নিয়েও। থিয়াগো সিলভা আবার সেরা ছন্দে ফিরেছে। লুকাস পাকুয়েটা, কাসেমিরোরা তো আছেই’। এদিকে ফরাসী জায়ান্ট পিএসজি ছেড়ে ডি মারিয়া ইতালিয়ান জায়ান্ট জুভেন্টাসে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন। এমন সময়ে তারকা গোলরক্ষক বুফন বলেছেন, ‘ইতালিয়ান লীগে ডি মারিয়া হবে ম্যারাডোনার মতো। এখন টেকনিক্যাল দিক থেকে সিরি এ অনেক এগিয়েছে। ডি মারিয়ার খেলার মানও অনেক ভাল। সে নিখুঁতভাবে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করে; সামনে থেকে ফল নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। দারুণ সব এ্যাসিস্ট করে এবং সাড়া মাঠ দৌড়ে খেলে। সে একাই অনেক ভূমিকা পালন করতে পারে। এক কথায় বললে ডি মারিয়া দলের চালিকাশক্তি’। আর্জেন্টিনার তারকা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের চোখও এবার বিশ্বকাপে। গত কোপা আমেরিকার সেরা গোলরক্ষক হওয়া এই তরুণ বিশ্বকাপেও ছড়াতে চান আলো। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বকাপের জন্য এমন প্রস্তুতি নেবেন যেমন করে আর কখনই প্রস্তুতি নেননি তিনি। জীবনের সেরা প্রস্তুতিটা নিয়েই বিশ্বকাপে মাঠে নামবেন তিনি। মার্টিনেজ বলেন, ‘আমরা সবাই প্রায় কাছাকাছি মানের। তবে আমাদের দলে একজন লিওনেল মেসি আছে, যে পার্থক্য গড়ে দেয়। যে কারণে আমাদের কোন দুর্বলতা নেই। বিশ্বকাপেও আমরা এ ধারা ধরে রাখতে চাই’।
×