ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যায় ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে ॥ কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২০ জুন ২০২২

বন্যায় ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে ॥ কৃষিমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মাঠে বড় ধরনের কোন ফসল না থাকায় বন্যায় ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি জানান, বর্তমানে মাঠে আউশ ধান আবাদ চলছে। এবছর আউশের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ লাখ হেক্টর। এর মধ্যে এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ১১ লাখ হেক্টর। বন্যায় ২২ হাজার হেক্টর আউশ আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া কিছু আমনের বীজতলা ও শাক-সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠা যাবে। রবিবার রাজধানীর ফার্মগেটের কেআইবি কনভেনশন হলে কৃষিতথ্য সার্ভিসের আয়োজনে ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষি ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বন্যা মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি আছে। এরই মধ্যে আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ফলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে না। তবে বড় বন্যা হলে আমনের ক্ষতি হবে। তখন আমরা পুনর্বাসন কর্মসূচীর মাধ্যমে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যবস্থা নেই। এজন্য বাজেটে আমাদের বরাদ্দ আছে। বিকল্পভাবে আমরা এই ক্ষতি পূরণ করব। কৃষি সচিব সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সদস্য (এপিএ পুল) ড. এম এ সাত্তার ম-ল, স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষিতথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. সুরঞ্জিত সাহা রায়। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, দৈনিক জনকণ্ঠের চীফ রিপোর্টার কাওসার রহমান ও প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি গোলাম ইফতেখার মাহমুদ। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, আউশের ক্ষতি একটু বেশি হতে পারে। এবার ১১ লাখ হেক্টর আউশের টার্গেট করেছিলাম, এরই মধ্যে ২২ হাজার হেক্টর প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ৩ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টরে বিভিন্ন শাকসবজি আছে, সেগুলোর কিছু ক্ষতি হবে। এখনও আমনের খুব বেশি বীজতলা করা হয়নি। যা হয়েছে সেটাও নষ্ট হলে খুব সমস্যা হবে না। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত বীজ সংরক্ষিত আছে, পরে সেগুলো চাষীদের দেয়া হবে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ। এই মৌসুমের ফসলগুলো প্রায় সময়ই ক্ষতির সম্মুখীন হয়। কৃষকরাও সেভাবে প্রস্তুতি রাখেন। আমরাও প্রস্ততি নিয়ে রেখেছি। সে ক্ষতি পূরণ করব। তারপরও যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, বন্যা ধেয়ে আসছে, আকর্ষিক বড় ক্ষতি হবে কিনা সেটা জানি না। তিনি বলেন, এজন্য আমরা পর্যাপ্ত বরাদ্দ রেখেছি। যদি বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়, সেটা পুষিয়ে নেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। নানাবিধ সমস্যার কারণে এ দেশে বহুবার খাদ্য সঙ্কটের নজির রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় কখনও খাদ্যের অভাব হয়নি। এমনকি খাদ্যের জন্য হাহাকারও করতে দেখা যায়নি কখনও। সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে যেভাবে কৃষি জমি কমছে, তাতে আগামীতে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। তারপরও বাংলাদেশ উৎপাদনের দিক থেকে সারাবিশ্বে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, যেভাবে কৃষিজমি কমছে তাতে আগামী ২০ বছর পর যেখানে বাংলাদেশে আরও ৪ কোটি মানুষ যোগ হবে, তখন লাখ একর জমি কমে যাবে। আর আগামী শতাব্দীতে কোন কৃষিজমি অবশিষ্ট থাকবে না। তখন মানুষকে কীভাবে খাওয়ানো হবে সে বিষয় মাথায় রেখে নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
×