ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ২০:৪১, ২৪ মে ২০২২

ঢাকার দিনরাত

ঢাকার দিনরাত লেখার দিন রবিবার। সকালে এডিটোরিয়াল মিটিং শেষ করে সংবাদপত্রের ফাইলে চোখ বুলাচ্ছি। ভাবছি এ সপ্তাহের কলামে পূর্ব পরিকল্পনার বাইরে আর কি আইটেম যোগ করা যায়। ফিচার বিভাগের সহকর্মীরা একের পর এক আসতেই থাকলেন। কেউ বিভাগীয় পাতার পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ করার উদ্দেশে, কেউ আবার মেকআপ হয়ে যাওয়া পাতা দেখাতে। ভাবনায় স্বাভাবিকভাবেই ছন্দপতন এলো। কর্মজীবীদের জন্য রবিবার হলো সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। আমি শুক্র-শনি অফিস করি, কর্মবিরতি নিয়েছি মঙ্গলবার, যেদিন এই কলামটি প্রকাশিত হয় সেদিন। যা হোক, এক ফাঁকে একজন আর্টিস্টও উঁকি দিয়ে গেলেন। সাপ্তাহিক একটা কাজ তিনি আদায় করে নেন, যেটি শুক্রবার প্রকাশিত হয়। আবু কায়সারের কিশোর উপন্যাস ‘রায়হানের রাজহাঁস’-এর চিত্ররূপান্তরের স্ক্রিপ্টের কথা বলছি। কাজটি করতে ভালোই লাগছে। রবিবারের জন্য আরও একটা কাজ ধরা আছে, সন্ধ্যায় অফিস ত্যাগের আগে এগুনো যাবে। বলছি সমাজভাবনা পাতার কথা, যেটি প্রকাশিত হয় প্রতি বৃহস্পতিবার। সারাদেশ থেকে জনকণ্ঠের পাঠকরা চলতি সপ্তাহে ঘোষিত নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর ছোট লেখা পাঠান। যা হোক, সবকূল সেরে রবিবারের নির্দিষ্ট কলাম কখন শেষ হবে সেটিই আসল কথা। অনেক সময় রাতও হয়ে যায়। পত্রিকার ফাইলে আবার চোখ রাখি। যাক, আরেকটা ইতিহাস রচিত হলো বটে। স্বর্ণের দাম ৮২ হাজার ৪৬৪ টাকা ভরিÑ এটাই দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দর। এর আগে গত ৩ মার্চ স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল। তখন প্রতি ভরির দাম ছিল ৭৮ হাজার ২৬৫ টাকা। স্বাধীনতার আগের বছর ১৯৭০ সালে স্বর্ণের ভরি ছিল মাত্র ১৫৪ টাকা। শায়েস্তা আমলে টাকায় আট মণ ধান পাওয়া যেত, এসব কথা বলা অর্থহীন। ডলারের শতক হাঁকানো তো দেখলামই কদিন আগে। ডলারেরই দোহাই দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন ডলারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারের পাশাপাশি দেশের বুলিয়ন মার্কেটে স্বর্ণের দাম বেড়েছে। তাই দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মানুষ এ গ্রহের একক বাসিন্দা নয় রবিবার বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস। অন্য জীবের কথা ভাবতে বাধ্য হন এদিনে অনেকে। চলতি বছরের দিবসটির স্লোগান হচ্ছে সর্বজৈবপ্রাণের জন্য সুষম অংশী ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা। ঢাকার জীববৈচিত্র্য নিয়ে আমরা কতোটা সচেতন? প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে সঙ্গীতশিল্পী-বন্ধুর বাসায় যেতে হয়েছিল। আলিশান বাড়ি। বারিধারার লেক-ছোঁয়া বাড়ি। ওখানে গেলে এক চিলতে প্রাঙ্গণে দাঁড়াই যেখান থেকে লেকটি সবচেয়ে ভাল দেখা যায়। দুই পাশে দীর্ঘ গাছের সারি। ওখানে নাকি বকও থাকে! খেয়াল করি বন্ধুটির পোষা লাভ বার্ডগুলো নেই। তাহলে কি খাঁচাগুলো সরিয়ে রাখা হয়েছে। বন্ধু জানালেন, না ওগুলো মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এমনকি ম্যাকাও পাখিটাকেও এই বাসার চৌহদ্দি থেকে সরানো হয়েছে। পোষ্য পাখিদের মধ্যে ম্যাকাও হল সবচেয়ে বড় আর জনপ্রিয় পাখি। ম্যাকাওকে স্বপ্নের পাখি বা ড্রিম বার্ড বলা হয়। তবে ম্যাকাও যেহেতু খুব দামী পাখি তাই কেনার আগে যথেষ্ট ভাবনা-চিন্তার প্রয়োজন আছে। ম্যাকাও-এর দাম খুব কম করে হলেও লাখ খানেক তো বটেই। মোটামুটি ১৯ ধরনের ম্যাকাও হয়। তবে তার মধ্যে কয়েকটি প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে ৬ ধরনের ম্যাকাও দেখা যায়। কিন্তু পোষ্য হিসেবে আমরা যে ম্যাকাওগুলো দেখে থাকি সেগুলো সবই হাইব্রিড। ব্রিড করানোর সময় মূলত দুটো বিষয়ের ওপর জোর দেয়া হয়, এক পাখির রঙ আর দুই এর জিনগত চরিত্র। ম্যাকাও মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার পাখি। মধ্য আমেরিকার মধ্যে প্রধানত মেক্সিকোতেই ম্যাকাও বেশি দেখা যায়। এরা সাধারণত ঘন জঙ্গলে থাকতেই ভালবাসে। প্রথমবার পাখি পুষলে ম্যাকাও পোষা কিন্তু একটু কষ্টসাধ্য। তার কারণ, এদের শক্ত লম্বা ঠোঁট, যদি একবার কামড়ে দেয় তাহলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই অভিজ্ঞ হাতেই ম্যাকাও পোষা ভাল। বন্ধুর বাসায় ওই ম্যাকাও রাখার জন্য আলাদা একটা বড় ও উঁচু জায়গা ছিল তার দিয়ে ঘেরা। হঠাৎ একদিন গেস্ট-ওয়াশরুমে ঢুকে থমকে যাই। দেখি ম্যাকাওটা সেখানে! আর লাভ বার্ড নিয়ে দুটি কথা না বললেই নয়। তোতা পাখির প্রজাতির মধ্যে পড়লেও এরা তোতাপাখির চেয়ে জনপ্রিয়। কেননা তোতাপাখির চেয়ে এরা আকারে ছোট এবং এদের সৌন্দর্যও অধিক। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এদেরকে খুব অল্প জায়গাতেই লালন-পালন করা সম্ভব। আমাদের দেশে সহজেই লালন-পালন করা সম্ভব এবং দেখতে খুব সুন্দর ও সামাজিক পাখি বলে অনেকেই বাসায় পালন করেন। মানুষ কুকুর-বিড়াল পোষে। এটা মন্দ লাগে না। কিন্তু পাখি পুষলে তারা যে ইচ্ছেমতো ওড়ার স্বাধীনতা হারায় এটিই সবচেয়ে খারাপ লাগে। মনে-মনে বন্ধুটিকে ধন্যবাদ জানালাম পাখিগুলোর বন্দীদশা ঘোচানোর জন্য। মনে রাখা চাই, মানুষ এ গ্রহের একক বাসিন্দা নয়। অজস্র অঢেল প্রাণ আছে এই ধরিত্রীতে। নৈসর্গিক পরিবেশে গড়ে ওঠা ঢাকা নগরীর অধিকাংশ এলাকা এক সময় জলাভূমিতে সমৃদ্ধ ছিল। ঢাকার চারপাশে ছিল সবুজের সমারোহ। ছিল অগুনতি পাখি। শহরের চারদিক দিয়ে বয়ে চলা নদীগুলো ছিল দূষণমুক্ত। কিন্তু দিন দিন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি ও ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে একদিকে যেমন জলাভূমির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে, অন্যদিকে ঢাকা হারিয়েছে তার মূল্যবান জীববৈচিত্র্য। ঢাকাবাসী আমাদের কাছে শহুরে জীববৈচিত্র্যবিষয়ক গবেষক মারুফা সুলতানার প্রস্তাবনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে হচ্ছে। তিনি জার্মানিতে পিএইচডি করছেন, বলছেন- ‘কোন প্রাণী বা উদ্ভিদ প্রজাতি যদি স্থানীয়ভাবে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকে, এর সংরক্ষণের জন্য দুটি দিক বিবেচনা করা প্রাথমিকভাবে জরুরী। প্রথমত, এর প্রাকৃতিক আবাসস্থলটি অক্ষত আছে কি না, তা শনাক্ত করা এবং দ্বিতীয়ত, এই প্রজাতির ব্যাপারে এই অঞ্চলে বসবাসরত মানুষের মনোভাব কেমন, তা বোঝা। প্রাকৃতিক আবাসস্থল অক্ষত থাকলে মানুষের ইতিবাচক মনোভাব ও সহনশীলতা সেই প্রজাতিকে সংরক্ষণের সুযোগ দেয়। তবে প্রাকৃতিক আবাসস্থল সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে গেলে দেরিতে নেয়া যে কোন সংরক্ষণের কাজ ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পরবর্তী ঘটনাটি খুব সম্ভবত ঢাকা শহরের ক্ষেত্রে ঘটতে যাচ্ছে। ঢাকা শহরের সমস্যাটি হলো, এখানে জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য যথাযথ এবং সমন্বিত কার্যক্রম নিতে আমরা ইতোমধ্যেই অনেকটা সময় নষ্ট করে ফেলেছি। তা ছাড়া নগরায়ণের দ্বারা ঢাকা শহরের জীববৈচিত্র্য কিভাবে প্রভাবিত হচ্ছে, তা নিয়ে গবেষণারও ঘাটতি রয়েছে। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকায় শহুরে জীববৈচিত্র্যের উপাদানগুলো চিহ্নিত করে এদের বর্তমান পরিস্থিতি সঠিকভাবে নথিভুক্ত করা দরকার। এই তথ্যের ভিত্তিতে সংরক্ষণের পদক্ষেপগুলো চিহ্নিত করা সহজ হবে। এখানে উল্লেখ্য, শহরাঞ্চলে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পদক্ষেপ সাধারণত বন বা গ্রামাঞ্চলের পদক্ষেপের চেয়ে আলাদা, এমনকি জটিল হতে পারে। শহরাঞ্চলে কোন রকমের পরিকল্পনা ছাড়া জীববৈচিত্র্য কখনোই সুরক্ষিত নয় এবং যে কোন পরিকল্পনাতেই বিবেচনায় রাখতে হবে যে জীববৈচিত্র্য এবং শহরবাসীÑ উভয়েই একই বাসস্থানের অংশীদার। প্রকৃতপক্ষে, মানবকল্যাণ ও জীববৈচিত্র্য একে অপরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই নগর-পরিকল্পনায় যদি উভয়কে একত্র করা হয়, জীববৈচিত্র্য ও শহরবাসী উভয়ই পাশাপাশি এবং একসঙ্গে ভাল থাকবে।’ ঢাকা কেন দাঁড়াবে না সিলেটের পাশে বেশ লম্বা সময়ই মনে হচ্ছে। সিলেটের বন্যার কথা বলছি। রবিবারেই একটি জাতীয় দৈনিকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে এমনটাÑ সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কিছুটা কমলেও ভোগান্তি কমছে না বন্যার্ত মানুষের। ৭ দিনেও পানিবন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি না মেলায় দুর্বিষহ দিন পার করছেন খেটে খাওয়া মানুষ। কাজ নেই, শেষও সঞ্চিত খাবার। এখন চেয়ে থাকেন সহায়তার দিকে। কিন্তু সরকারের সহায়তা নেই পর্যাপ্ত। অভিযোগ রয়েছে জনপ্রতিনিধিদের স্বজনপ্রীতির। জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ খুব কম। কম বরাদ্দের কারণে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ত্রাণ নিতে এসে পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন মানুষ। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় শনিবার সকালে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। বন্যাদুর্গত মানুষ সকাল ৮টা থেকে ত্রাণ নিতে অপেক্ষা করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার থানা বাজার এলাকায়। ত্রাণ দেয়ার কথা ১২০টি পরিবারকে; কিন্তু সেখানে উপস্থিত হয় কমপক্ষে ৫০০ পরিবার। সকাল সাড়ে ১০টায় ৬ ইউনিয়নের ১২ জনকে নিজ হাতে সরকারী সহায়তার প্যাকেট তুলে দেন মন্ত্রী। বাকিদের বণ্টনের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানদের নির্দেশনাও দিয়ে যান তিনি। মন্ত্রী চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই ত্রাণ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন তালিকায় না থাকা লোকজন। এ নিয়েই ঘটে যায় হুলুস্থুলকাণ্ড। ত্রাণের প্যাকেট বাঁচাতে পুলিশকে লাঠিপেটা করতেও দেখা যায়। অনেকেই তালিকায় থাকলেও পাননি ত্রাণ। অনেক আশা নিয়ে এসেছিলেন ত্রাণ নিতে, নিজে বৃদ্ধ হওয়ায় ছেলেকে লাইনে দাঁড় করিয়েছিলেন; কিন্তু ত্রাণ পাননি। উল্টো পুলিশের মার খেয়েছেন। ত্রাণ না পেয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। পড়তে পড়তে মনটা বিষণœ হয়ে উঠছিল। দুর্গতরা ত্রাণ বঞ্চিত থাকবেন কেন? আর সরকারের দিকেই বা সব সময় আমাদের তাকিয়ে থাকতে হবে কেন? সিলেটবাসীদের বড় একটা অংশ থাকেন বিলেতে। বিয়ানিবাজার, বিশ^নাথসহ বিভিন্ন উপজেলার নামে সেখানে সমিতি আছে। রীতিমতো দলাদলি ভোটাভুটি হয়। দেশের মানুষের জন্য তারা কেন কোন উদ্যোগ নেবেন না? আসি ঢাকা তথা রাজধানীবাসীর কথায়। এত এত সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, তাদের কি কোন দায় নেই? আগে দেখতাম দেশের কোথাও বন্যা হলে ঢাকার মানুষ নড়েচড়ে বসত। ত্রাণ সংগ্রহে নেমে পড়ত। সেসব পৌঁছে দেয়া হতো বন্যাদুর্গত মানুষের কাছে। মানুষ মানুষের জন্য, এটাই সত্য। তাহলে এখন কেন ঢাকা দাঁড়াচ্ছে না সিলেটের পাশে! শিল্পী-সাহিত্যিক হোক, কিংবা সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীই হোক, নিজ নিজ অবস্থান থেকে কোন না কোন উদ্যোগ তো গ্রহণ করা হবে। এখন পর্যন্ত ব্যক্তি বা সাংগঠনিক পর্যায়ে এমন উদ্যোগ গ্রহণের কোন খবর পেলাম না! দীপনের ‘অন্ধকার সময়’ আগামীকালই (বুধবার) প্রদর্শনীর শেষদিন, চলছে উত্তরার গ্যালারি কায়াতে। বলছি প্রতিভাবান শিল্পী মাহমুদুর রহমান দীপনের একক চিত্রপ্রদর্শনী ‘ডার্ক টাইম’ বা ‘অন্ধকার সময়’-এর কথা। বলাবাহুল্য সময়টি কোভিড-ঊনিশ ব্যাধিতে বিপর্যস্ত আতঙ্কিত ঘরবন্দি সময়। মহামারিকালীন মানবজীবনের একটি শিল্পিত দলিল হয়ে থাকবে এই চিত্রকর্মগুচ্ছ। চারকোলে সৃষ্ট প্রতিটি ছবি। এটিও ব্যতিক্রমী। শিল্পীবন্ধু কারুতিতাস প্রদর্শনী নিয়ে সুন্দর লিখেছেন- ‘দীপনের সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে সেই আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে। যতদূর মনে পড়ে বন্ধুত্ব, সম্পর্ক গভীরতা ১৯৯০ থেকে। সেই বন্ধুত্ব আজও বহমান। চারুকলায় আমি ছাড়া আমার সহপাঠীরা সবাই প্রতিভাবান। তাই আমি একা দিনের পর দিন রাতের পর রাত ক্লাসে দীপনের ছবি আঁকা দেখতাম। মনে আছে বন্ধু? আমি অবাক বিস্ময় নিয়ে দেখতাম তোমার ক্যানভাসে রঙ, কম্পজিশন আর ছবির বিষয়বস্তু। তোমার ক্যানভাস আমাকে কি এক আশ্চর্য ভিন্ন পৃথিবীতে নিয়ে যেত। জীবনের কি গভীর এক ফিলোসফি তোমার ক্যানভাসজুড়ে। আলো আঁধারিতে দীপনের পথ চলা। আঁধারে কিন্তু মায়াবতী জোছনা ভেসে বেড়ায়। আকাশজুড়ে নক্ষত্র। অথচ চারুকলার অনের বন্ধু দীপনকে পরিত্যাগ করল। সে নাকি চারুকলার পরিবেশ নষ্ট করছে। অথচ সেসব পরিবেশবাদী শিল্পীরা নিজেরাই আজ পরিত্যক্ত। দীপন আজ সকলের ভালবাসায় সিক্ত। এমন ভদ্র, এমন ন¤্র, এমন বিনয়ী আর এমন শক্তিশালী শিল্পীকে ভাল না বেসে উপায় কি! আমরা এমন এক সময় অতিক্রম করছি যখন একমাত্র মৃত্যু ছাড়া মানুষের, সমাজের কিছুতেই আর দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে না। তাও আবার মাত্র কিছু সময়ের জন্য। দেরিতে হলেও সেই সময় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য শিল্পী মাহমুদুর রহমান দীপন গ্যালারি কায়ার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। গ্যালারি তো আর মুদির দোকান না। তাই শুধু ছবি বিক্রিই একটা প্রদর্শনীর একমাত্র সাফল্য নয়। আমার ধারণা এই প্রদর্শনী নানাভাবে নানা দিক দিয়ে সাফল্য অর্জন করবে। দর্শকের সঙ্গে ভিন্ন এক জগতের পরিচয় ঘটবে। অভিনন্দন বন্ধু মাহমুদুর রহমান দীপন। ধন্যবাদ গ্যালারি কায়া।’ ২২ মে ২০২২ [email protected]
×