ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নরসিংদীতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা : ঋনের বোঝা থেকে বাঁচতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা

প্রকাশিত: ২০:৩০, ২৩ মে ২০২২

নরসিংদীতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা : ঋনের বোঝা থেকে বাঁচতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা

স্টাফ রিপোটার, নরসিংদী ॥ প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও ঋনের বোঝা থেকে বাঁচতে নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। আদালতে শোপর্দের পর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধিতে এ তথ্য দিয়েছে গ্রেফতাকৃত গিয়াস উদ্দিন শেখ। সোমবার বিকালে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রাকিবুল হক এর আদালতে এ জবানবন্ধি প্রদান করেন। জবানবন্ধিকে হত্যার নেপথ্যের কারন সহ নানা দিক উল্লেখ করা হয়। জবানবন্ধি শেষে গিয়াস উদ্দিন শেখকে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেন (পিবিআই)। আদালতে সূত্রে জানাযায়, নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার ঘটনায় নিহতের রাহিমার ভাই মোশারফ হোসেন বাদি হয়ে অজ্ঞাত নামা ৮ থেকে ১০জনকে আসামী করে বেলাব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনায় গ্রেফতাকৃত নিহত রাহিমা বেগমের স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ পিবিআই এর কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরে সোমবার বিকালে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালেতে শোপর্দ করা হয়। ওই সময় হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি প্রদান করেন। জবানবন্ধিতে উল্লেখ করা হয়, নিহত রাহিমা বেগমের স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ পেশায় রং মিস্ত্রি। একই সাথে মাদকাশক্ত ও জুয়ারী। জুয়ার টাকা যোগার করতে নিহত রাহিমা বেগম এর নামে বিভিন্ন এনজিও থেকে দুই লক্ষ ৫০ হাজার টাকা,শশুর-শ্যালক ও শ্যলকের শ্যালকের (বিয়াই) কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ও সুদে আরো দুই লক্ষ টাকা সহ সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা ঋন নেয়। এই সকল ঋন নিহত রাহিমা বেগমের নামে আনা হয়। সুদে আসলে ঋনের টাকা ১২ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। এই টাকা পরিশোধের জন্য নিহতের স্বামী গিয়াস উদ্দিনের উপর চাপ ছিল। সর্বশেষ জুয়া খেলার মতো কোন টাকা তার হাতে ছিল না। তাই বাড়ীর আঙ্গীনা থেকে কয়েকটি গাছ বিক্রি করেন। তা নেওয়ার সময় প্রতিবেশি চাচাতো ভাই রেনু মিয়ার সাথে ঝগড়া হয়। এরই মধ্যে সে জানতে পারে ঋন গ্রহিতা ব্যক্তি মারা গেলে ঋনের টাকা মওকুফ হয়ে যায়। এই চিন্তা চেতনা থেকে গিয়াস স্ত্রী রহিমা বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেফতাকৃত গিয়াস রাতে বাড়ি ফিরে সন্তানদের সাথে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে রাত আড়াইটার দিয়ে স্ত্রীকে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে ও গরু জবাইরে ছুড়ি দিয়ে ছুড়িকাঘাত করে হত্যা করে। স্ত্রীকে হত্যার পর সন্তানরা সবাইকে বলে দিবে,এই ভয়ে গিয়াস সন্তানদেরকেও হত্যা করে। হত্যার পর পুলিশ ও মানুষের চোখ ফাঁকি দিতে রাতেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। পরে সকালে তাকে ফোন দিয়ে বাড়িতে ডেকে আনে।
×