ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

বাজেট ॥ দারিদ্র্য বিমোচন নাকি অবকাঠামো উন্নয়ন

প্রকাশিত: ২০:৪৫, ২৩ মে ২০২২

বাজেট ॥ দারিদ্র্য বিমোচন নাকি অবকাঠামো উন্নয়ন

কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট। রাজস্ব প্রণোদনার ক্ষেত্রে দেশীয় উদীয়মান শিল্পকে অগ্রাধিকার দেয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। কর ছাড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করা হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে। আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রাথমিকভাবে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকায় প্রাক্কলনে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে, যা দেশের জিডিপির ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং চলতি অর্থবছরের বাজেট থেকে এটি ৭৪ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরে ঘোষিত বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা এবং সেই হিসেবে আগামী অর্থবছরে বাজেটের আকার বাড়ছে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার এবং ঘাটতি ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা। আসন্ন এই বাজেটে প্রাধান্য পাচ্ছে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাত। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দেয়া হবে ভোক্তার হাতে অর্থপ্রবাহ বাড়ানোর জন্য। বাড়বে ব্যক্তিকর আয়সীমা। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেতন-ভাতায় সরকারের ব্যয় ছিল ২৮ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯ হাজার ১৪৬ কোটি টাকায়। আগামী বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ আরও বাড়িয়ে ৭৬ হাজার ৪১২ কোটি টাকা করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এই ব্যয় চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। এদিকে আমদানি যে গতিতে বাড়ছে রফতানির গতি সেই তুলনায় শ্লথ। এর মধ্যে আবার ধারাবাহিকভাবে পতন হচ্ছে রেমিটেন্স প্রবাহ। এতে চাপে পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আট মাসের ব্যবধানে ৪৮ বিলিয়ন থেকে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে রিজার্ভ। এ পরিস্থিতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন ঠেকাতে ডলার খরচ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়াতে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয়গুলো সাজানো হয়েছে। আগামী বাজেটে কোভিড-১৯ ছাড়াও বিশ্ব মূল্যস্ফীতির প্রভাব কঠোরভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৯ জুন মহান জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন, যা হবে এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২তম এবং বর্তমান সরকারের টানা ১৪তম ও অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আগামী অর্থবছরে মোট আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে মোট আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে মোট আয় বাড়ছে ১১ শতাংশ। মোট আয়ের মধ্যে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা জিডিপির ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেয়া আছে। সে হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ ১২ শতাংশ বাড়ছে। এছাড়া আগামী বাজেটে মোট আয়ের মধ্যে নন-এনবিআর থেকে প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। করোনার কারণে চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধিও ৮ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কাটছাঁট করে ৬ দশমিক ১ শতাংশে আনা হয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২৫ এ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে ১ কোটি ১৩ লাখ। বাস্তবে আদৌ কি তা সম্ভব হবে? মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য তথা দক্ষ জনবল তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরী। এজন্য এ খাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন। ২০২০ সালের প্রথম দিক থেকেই কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী ব্যাপক মহামারী প্রাদুর্ভাব হওয়ায় কাক্সিক্ষত মাত্রায় প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব না হলেও অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে সরকার বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদানের মাধ্যমে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার চেষ্টা করেছে। অন্যদিকে করোনাকালে অর্থনৈতিক কর্মকা- স্থবির থাকলেও নতুন করে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার। করোনার প্রভাবে দারিদ্র্যের হার বাড়লেও ধনিক শ্রেণীর সংখ্যাও সমহারে বেড়েছে। এসব নব্য ধনীরা তাদের অর্থসম্পদ দেশে বিনিয়োগ না করে দেশ থেকে অর্থ পাচার করছে। ফলে অর্থ পাচারের হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। করোনায় শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বজুড়ে ধনী-গরিব বৈষম্য বেড়েছে। কর্মসংস্থান বাড়াতে ব্যবসাবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করছে সরকার। এর ফলে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে এবং দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে। ব্যবসায়ীদের ওপর করের বোঝা না চাপিয়ে বরং করের আওতা বাড়াতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি বাজেট সংক্রান্ত এক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, করোনা মহামারী থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসাবান্ধব বাজেট প্রণয়নে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত ৪২তম পরামর্শক সভায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীরা যাতে হয়রানিমুক্ত থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন সেদিকে সবার দৃষ্টি দেয়া এবং আমদানিকৃত কাঁচামাল, মধ্যবর্তী কাঁচামালসহ যাবতীয় শিল্প উপকরণের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আয়কর ও মূসকের আওতা বাড়ানো, সব রফতানি খাতকে সমান সুবিধা দেয়া, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি জোরদার করা, টার্নওভার কর ফিরিয়ে আনা, বিদ্যমান ভ্যাট আইন সংশোধন করার প্রস্তাবও এসেছে। বাংলাদেশকে ২৫ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। করোনা অভিঘাতের মধ্যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষমতা অর্জনে এ অর্থ কাজে লাগানো হবে। বাংলাদেশ ফার্স্ট রিকভারি এ্যান্ড রেজিল্যান্স ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট (ডিপিসি) সিরিজের আওতায় এই ঋণ দেয়া হচ্ছে। সিরিজে দুই কিস্তি মোট ৫০ কোটি ডলার দেয়ার কথা। চলতি ২০২১-২২ এবং আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট সহায়তা হিসেবে এই অর্থ পাচ্ছে বাংলাদেশ। বিগত সময়ে মহামারীতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতে যে প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল তার মাত্র ৪০ শতাংশ বিতরণ হয়েছে বলে জানা যায়। অথচ স্বল্প পুঁজিতে এই খাতেই কর্মসংস্থানের সুযোগ সব থেকে বেশি। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বাজেটে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণে বেকারদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মে নিয়োগ করে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল থাকবে। অর্থনীতি চাঙ্গা হবে এবং প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে স্বল্প সুদে জামানতবিহীন ঋণের দ্রুত ব্যবস্থা করা, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা। তাছাড়া শুধু অর্থ বরাদ্দ রাখলেই হবে না, বরাদ্দকৃত অর্থ যাতে সুষ্ঠুভাবে বণ্টন হয় সেদিকে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় ঋণ না পেলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান হবে না। কর্মসংস্থান ও উৎপাদন বৃদ্ধি না পেলে চলমান অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়েছে তা কাটিয়ে উঠতে বেকার, দরিদ্র নারী ও প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা উন্নয়নের লক্ষ্যে বাজেটে বিশেষভাবে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আশার কথা, জানা যায় আগামী অর্থবছরের সম্ভাব্য বাজেটে দারিদ্র্য বিমোচনে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা এবং নারী উন্নয়নে ৭৪৯ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ বাজেটে দারিদ্র্য বিমোচন ও নারী উন্নয়ন কর্মসূচীও থাকবে যথাক্রমে ৬৮১ ও ২৭৬ কোটি টাকা। বিভিন্ন খাতে সম্ভাব্য বরাদ্দ দেখা গেলেও প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথকভাবে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। অথচ দেশে মোট জনগোষ্ঠীর একটি বিরাট অংশ প্রবীণ। বিরাটসংখ্যক এ জনগোষ্ঠীর কথা কেউ তেমন করে ভাবে না। মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত বা দরিদ্র শ্রেণীর প্রবীণ জনগোষ্ঠী এ করোনাকালে সবচেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এরা পরিবার বা সমাজে একেবারেই অপাঙ্ক্তেয়। করোনার অভিঘাতে এ জনগোষ্ঠী সর্বাধিক জর্জরিত। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রবীণ ব্যক্তিরাই আক্রান্ত হয়েছেন বেশি। ফলে যথাযথ চিকিৎসা ও সেবার অভাবে প্রবীণের মৃত্যুর হার ছিল বেশি। প্রবীণ জনগোষ্ঠী সমাজে সাধারণত অবহেলিত হয়ে থাকে। যেহেতু প্রবীণরা পরিবার এবং সমাজে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত এবং নির্যাতিত, তাই বাজেটে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে। করোনার প্রভাবে দরিদ্র, হতদরিদ্র, চরম দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের ব্যাপকাংশ দরিদ্রতর হয়েছে। কর্মবাজার ভীষণভাবে সঙ্কুচিত ও বিপর্যস্ত। তার মধ্যে সাধারণ মানুষের ওপর নতুন খড়গ হয়ে নেমে এসেছে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্ধগতি। এসব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন ধনী-দরিদ্রের আয় ও ধন-সম্পত্তির ব্যাপক বৈষম্য বেড়েছে। দেশের ধনী, বিত্তবান, সম্পদশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যারা প্রকৃত সম্পদ-আয় ও মুনাফার অর্থমূল্য কম প্রদর্শনের মাধ্যমে সঠিকভাবে কর দেয় না তারা যেন সঠিক পরিমাণে যথাযথ কর দেয় এবং বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে এনবিআরের কার্যক্রম গতিশীল করতে হবে। রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে দরিদ্রদের ওপর প্রত্যক্ষ করের বোঝা না বাড়িয়ে ধনী-বিত্তশালীদের ওপর সম্পদ-কর বাড়াতে হবে। অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর আরোপ এবং কালো টাকা ও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার করতে নিতে হবে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। কারণ অর্থনৈতিক মহামন্দা ও কোভিড-১৯-এর কারণে বিশ্বের সব দেশই এখন অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাগত, স্বাস্থ্যগত ও রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। দেশপ্রেম ও সদিচ্ছা থাকলে এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা কঠিন কিছু নয়। পরোক্ষ করের বোঝা মূলত দরিদ্র, প্রান্তিক, নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্য-মধ্যবিত্তদের ওপর তাদের আয়ের তুলনায় অধিকহারে চাপ প্রয়োগ করে। ফলে তা দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাস না করে উল্টো আরও বাড়িয়ে দেয়। সে কারণে পরোক্ষ করের তুলনায় প্রত্যক্ষ করের অনুপাত বেশি নির্ধারণ করা প্রয়োজন। পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, আগামী বাজেটের ধরন, আকার, প্রকার, গুরুত্ব এবং সর্বোপরি বাজেটে কি প্রাধান্য পাবে আর কি পাবে না ইত্যাকার বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। আমজনতার বাজেটের এই আলোচনা-সমালোচনা চূড়ান্ত বাজেট পাস হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঝড়ের বেগে চলতে থাকে, যা কখনও কখনও হারিকেন ও সুনামিতে রূপান্তর লাভ করতে পারে। আগামী বছরে বাজেট কেমন হবে, রাজস্ব আয়ের চিত্র কি হবে, রাজস্ব আয়ের চরিত্র-চিত্রন কি হবে, দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তের কারা কোন্্ অবস্থানে থাকবে এ জাতীয় সকল বিষয়ই বাজেটের আলোচনায় ওঠে আসে। বাজেট কতটা কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প বা দরিদ্রবান্ধব হবে এহেন কত কথাই না উঠে আসে। বাজেট যাই হোক না ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু কাউকে আমরা বাজেটের হিসাবের বাইরে রাখতে পারি না। তাই আসুন, আমরা দেশের সার্বিক উন্নয়নের চেতনাকে সামনে নিয়ে বাজেট প্রণয়নের চেয়ে বাজেট বাস্তবায়নকে বেশি গুরুত্ব দিতে চেষ্টা করি। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুদ্র ব্যবসার সম্প্রসারণ, নিত্যপণ্যের মূল্য উর্ধগতি রোধ, বিনিয়োগবান্ধব ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশের প্রতিফলন ঘটুক- এটাই জনগণের প্রত্যাশা। লেখক : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি
×