ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সোমবার শুরু বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট

মিরপুরে সিরিজ ফয়সালার অপেক্ষা

প্রকাশিত: ০০:২৭, ২২ মে ২০২২

মিরপুরে সিরিজ ফয়সালার অপেক্ষা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছে। ২ টেস্টের সিরিজে এবার দুদলের লক্ষ্য মিরপুরের লড়াইয়ে জেতার। ইতোমধ্যেই বন্দরনগরী চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট খেলে ঢাকায় ফিরেছে উভয় দল। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে গড়াবে দ্বিতীয় টেস্ট। আর এই ম্যাচে বিজয়ীরা জিতবে ২ টেস্টের সিরিজ। চট্টগ্রামে ছিল ব্যাটিং সহায়ক উইকেট, তাই উভয় দলের ব্যাটাররা দুর্দান্ত ব্যাটিং দেখিয়েছেন। তাই ড্র হয়েছে। কিন্তু মিরপুরে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ মিরপুরে স্পোর্টিং উইকেট থাকা কঠিন তেমনটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও বলেছেন। সাধারণত মিরপুরের উইকেট থাকে মন্থর গতির, বল নিচু হয়ে আসে এবং ব্যাট হাতে দারুণ কিছু করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে থাকে। আর সে কারণেই এখানে স্পিনারদের দাপট থাকে। পুরো ৫ দিন খেলাটাই চ্যালেঞ্জিং এখানে। এই ভেন্যুতে হওয়া সর্বশেষ ৮টি টেস্টে এখানে ফলাফল হয়েছে। বাংলাদেশ সফরে এখন পর্যন্ত ৩ টেস্ট মিরপুরে খেলেছে শ্রীলঙ্কা। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবার হওয়া টেস্টে ১০৭ রানে জয় পায় লঙ্কানরা। সেই ম্যাচটি হয়েছে ৬ দিন ধরে। জাতীয় নির্বাচনের জন্য ম্যাচের তৃতীয় দিন ছিল বিরতি। শেষ দুদিন খেলা হয়েছে সেই বিরতির পর। এরপর ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে মিরপুরে দ্বিতীয়বার টেস্ট খেলতে নেমে লঙ্কানরা জয় পায় ইনিংস ও ২৪৮ রানে। খেলা হয়েছে ৪ দিন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই ভেন্যুতে খেলে লঙ্কানরা জিতেছে ২১৫ রানের বড় ব্যবধানে। লো-স্কোরিং ম্যাচে মাত্র ৩ দিনের ম্যাচটিতে ফল আসে। তাই এবারও মিরপুরে জয়ের আশা নিয়েই নামবে লঙ্কানরা। দেশের নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে প্রথম টেস্টে নেমে দুর্দান্ত খেলেছে তারা। সেটাই তাদের বড় অনুপ্রেরণা। সেই অনুপ্রেরণায় এবার দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজ জেতার লক্ষ্য তাদের। তাছাড়া মিরপুরে কখনও বাংলাদেশকে সুযোগ দেয়নি লঙ্কানরা, বড় ব্যবধানে জিতেছে। এবারও সেই ফল ধরে রাখার প্রত্যয় তাদের। প্রথম টেস্টে নিজেদের ব্যাটিং শক্তির প্রমাণ দিয়েছে তারা। বড় সংগ্রহ গড়তে না পারলেও দীর্ঘ সময় ব্যাট করার যে সামর্থ্য দেখিয়েছে সেটাই এখন আত্মবিশ^াস বাড়িয়েছে। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের স্পিনাররা সফল হলেও লঙ্কান পেসাররা সফলতা পেয়েছেন। এতে করে দ্বিতীয় টেস্টে ধীর উইকেটেও পেসারদের ওপর আস্থা রাখতে পারবে তারা। আর রমেশ মেন্ডিস, লাসিথ এম্বুলদেনিয়া তেমন ভাল করতে না পারায় এবার সুযোগ পেতে পারেন প্রাভীন জয়াবিক্রমা। বাংলাদেশের ব্যাটাররাও চট্টগ্রামে নিজেদের ফিরে পেয়েছেন। মুশফিকুর রহিম দীর্ঘ সময় পর নিজেকে ফিরে পেয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। অভিজ্ঞ বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবালও ১৩৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ফিরে পেয়েছেন নিজেকে। বড় স্বস্তির বিষয় বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ফিরেছেন বেশ ভালভাবেই। ব্যাট হাতে মাত্র ২৬ রান করলেও, উভয় ইনিংসে দারুণ লাইন-লেংন্থে দীর্ঘক্ষণ বোলিং করে সফলও হয়েছেন। লিটন দাস ৮৮ ও মাহমুদুল হাসান জয় ৫৮ রানের ইনিংস খেলে ব্যাটিংয়ের দুশ্চিন্তাটা কাটিয়েছেন। তবে অধিনায়ক মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ মিরপুরে। এই টেস্টে বাংলাদেশের একাদশে অন্তত ২ পরিবর্তন আনতেই হবে। কারণ চট্টগ্রাম টেস্টে খেলা অফস্পিনার নাঈম হাসান আঙ্গুলের ইনজুরি ও হাতের ইনজুরিতে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ছিটকে গেছেন। দুজনের পরিবর্তে অফস্পিন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত কিংবা বিকল্প হিসেবে স্কোয়াডের বাইরে থেকে কাউকে যুক্ত করা হতে পারে। আর শরিফুলের অভাব পূরণ করা হবে এবাদত হোসেনকে ফিরিয়ে। ব্যর্থ খালেদ আহমেদকে বসিয়ে অভিষেক ঘটানো হতে পারে তরুণ রেজাউর রহমান রাজাকে। মিরপুরে জয়-পরাজয় হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ ২০১৫ সালের জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হওয়া টেস্ট ড্র হয়েছে সর্বশেষ। এরপর টানা ৮ টেস্টে এখানে ফল হয়েছে। বাংলাদেশ জিতেছে ৫টি যার মধ্যে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজও আছে পরাজিতের তালিকায়। অধিকাংশ ম্যাচের ফলই হয়েছে ৩-৪ দিনে। তবে সর্বশেষ ২ টেস্টে বাংলাদেশ এখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের কাছে হেরেছে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্যই নামবে স্বাগতিকরা।
×