ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরে পুত্রের নির্যাতনে পিতার মৃত্যু পুলিশের ওপর হামলা, ফাঁকা গুলি বর্ষণ

প্রকাশিত: ২১:২১, ২১ মে ২০২২

জামালপুরে পুত্রের নির্যাতনে পিতার মৃত্যু পুলিশের ওপর হামলা, ফাঁকা গুলি বর্ষণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরে মাদকাসক্ত ছেলের রিপনের শারীরিক নির্যাতনে বাবা আব্দুর রশিদের (৭০) মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রিপনকে (২২) আটক এবং তার বাবার লাশ উদ্ধারের সময় রিপনকে ছিনিয়ে নিতে স্থানীয় কতিপয় লোক পুলিশের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ সেখানে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে। হামলায় সদর থানার এএসই রাজিবসহ ৪/৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জামালপুর পৌরসভার রশিদপুর এলাকার বৃদ্ধ আব্দুর রশিদের তিন ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে রিপন মাদকাসক্ত। মাদকের টাকার জন্য প্রায় সে তার বাবাকে নির্যাতন করতো। গত শুক্রবারও রিপন তার বাবাকে শারীরিক নির্যাতন করেন। এ নিয়ে আব্দুর রশিদ গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর থানায় যান রিপনের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করতে। এ সময় এলাকার কতিপয় লোক ছেলে-বাবার ঝগড়ার ঘটনাটি শনিবার দিন সালিস করে মীমাংসা করার কথা বলে আব্দুর রশিদকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান। এদিকে থানায় জিডি করতে যাওয়ায় মাদকাসক্ত রিপন ক্ষীপ্ত হয়ে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার বাবা আব্দুর রশিদকে শারীরিক নির্যাতন করলে গুরুতর অসুস্থ হলে স্বজনরা তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তারা লাশ বাড়িতে নিয়ে এলাকায় কতিপয় অসাধু লোকজনের চাপে তড়িঘড়ি লাশ দাফনের উদ্যোগ নেন। খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জাকির হোসেন সুমন ও সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: দেলোয়ার হোসেন পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল রশিদপুরে আব্দুর রশিদের বাড়িতে গিয়ে আব্দুর রশিদের লাশ উদ্ধার এবং তার ছেলে রিপনকে আটক করার সময় রিপনকে ছিনিয়ে নিতে কতিপয় লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। হামলায় সদর থানার এএসআই রাজিবসহ ৪/৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। একপর্যায়ে পুলিশ সেখানে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে থানায় চলে যায়। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সেখানে তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এলাকায় গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: দেলোয়ার হোসেন কালের জনকণ্ঠকে বলেন, আব্দুর রশিদকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে তার ছোট ছেলে আটক রিপনকে আসামি করে রিপনের ভাই জাহাঙ্গীর আলম শিপন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করবেন। অপরদিকে পুলিশের গাড়ির বহরে হামলার অভিযোগে আটক ফয়সালসহ অজ্ঞাত আরো কিছু লোকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হবে। শনিবার রাতেই মামলা দুটি দায়ের হবে। আব্দুর রশিদের লাশ থানা হেফাজতে রয়েছে। রবিবার সকালে নিহত আব্দুর রশিদের লাশের ময়নাতদন্ত করানো হবে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এলাকায় গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
×