ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কলেবর বাড়ল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ২১ মে ২০২২

কলেবর বাড়ল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের

কুবি প্রতিনিধি ॥ ২০০৬ সালের ২৮ মে ৫০ একর জায়গা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। দীর্ঘ ১৬ বছরের যাত্রায় গত ১০ এপ্রিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও ১৯৪.১৯ একর ভূমি। যা মোট হিসেবে ২৪৪.১৯ একর। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ১১তম সভায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য ১ হাজার ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এ প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয় ২০১৮ সালের নবেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। প্রথমে এ প্রকল্পের আওতায় ৫০৭ কোটি টাকায় ২০২ দশমিক ২২ একর ভূমি অধিগ্রহণের কথা থাকলেও গতবছরের ২৪ মে ১৯৮.৮৯ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের নিকট ৪৭১ কোটি ১১ লাখ ২২ হাজার ৫৫ টাকার চেক হস্তান্তর করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ এ বছরের ১০ এপ্রিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৯৪ দশমিক ১৯ একর ভূমি বুঝিয়ে দেয় কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। ২০২.২২ একর ভূমির জায়গার পরিবর্তে ১৯৪.১৯ একর ভূমি বরাদ্দ পাওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মোঃ সানোয়ার আলী জানান, প্রকল্পের প্রথম দিকে মোট জায়গার পরিমান ছিল ২০২ দশমিক ২২ একর। কিন্তু প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত জায়গায় সরকারী রাস্তা পড়ে যাওয়ায় জায়গার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৯৮.৮৯ একর। যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কুমিল্লা জেলা প্রশাসনকে ৪৭১ কোটি ১১ লাখ ২২ হাজার ৫৫ টাকার চেক দেয়। তবে ১৯৮.৮৯ একরের ভেতর বন বিভাগের ৪.৭ একর ভূমি সংরক্ষিত থাকায় ওই জায়গা বাদ দিয়ে ১৯৪.১৯ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ভূমির পরিমাণ কমে যাওয়ায় জেলা প্রশাসনকে দেয়া টাকার পরিমাণও কমবে কিনা জানতে চাইলে মোঃ সানোয়ার আলী বলেন, আমরা টাকা ফেরত নেব না। টাকা ফেরত নিলে সেটা মন্ত্রণালয়ে ফেরত যাবে। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত জায়গার পাশেই সরকারী রাস্তা ও বন বিভাগের জায়গার জন্য যে পরিমাণ ভূমি বাদ গিয়েছে সেই পরিমাণ জায়গা নেব। ভূমি অধিগ্রহণ করতে সাড়ে তিন বছর লেগেছে। প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে জেলা প্রশাসন আমাদের ভূমি বুঝিয়ে দিতে দেরি করেছে কিছুটা। কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। তারপরেও যদি সময় লাগে তাহলে প্রকল্পের সময় বাড়বে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর শেষ সময়ের দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের তত্ত্বাবধায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক নির্মাণ শুরু হয়। যা এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। মূল ফটক নির্মাণের মতো প্রকল্পের বাকি কাজগুলোও সেনাবাহিনী দেখবে। সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন বলেন, দীর্ঘদিন প্রকল্পের কাজটা আটকে ছিল। এখন আমরা ভূমি বরাদ্দ বুঝে পেয়েছি। আশা করি আর থামবে না। আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকব। প্রসঙ্গত, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রধান প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন (১০০ একর), একাডেমিক ভবন নির্মাণ চারটি (প্রতিটি ১০তলা), প্রশাসনিক ভবন একটি (৬ তলা), ছাত্র-ছাত্রী হল নির্মাণ চারটি (দুটি করে প্রতিটি ১০তলা), উপাচার্যের বাসভবন নির্মাণ একটি (দুতলা), শিক্ষকদের আবাসিক ভবন নির্মাণ একটি (১০ তলা), ডরমেটরি ভবন নির্মাণ একটি (১০ তলা), ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র নির্মাণ একটি (৫তলা), অডিটরিয়াম নির্মাণ একটি (৩তলা), মেডিক্যাল সেন্টার নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ সড়ক, লেক খননসহ বেশ কয়েকটি কার্যক্রম।
×