ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

কান উৎসবে ‘মুজিব’ বায়োপিকের ট্রেলার উদ্বোধন

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ২০ মে ২০২২

কান উৎসবে ‘মুজিব’ বায়োপিকের ট্রেলার উদ্বোধন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ (মুজিব : দ্যা মেকিং অব এ নেশন) চলচ্চিত্রটির ট্রেলার উদ্বোধনের মাধ্যমে বিশ্ব সিনেমা অঙ্গনে ধ্বনিত হলো বঙ্গবন্ধু বায়োপিকের আগমন বার্তা। ফ্রান্সে বিশ্বখ্যাত কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ৭৫তম আসরের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ভারতীয় প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই বায়োপিকের ট্রেলার উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর। খবর বাসসর। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তার বক্তৃতায় বলেন, ‘মুজিব’ চলচ্চিত্রটিতে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, জাতির জন্য সংগ্রাম থেকে বিজয় ও পরম আত্মত্যাগের চিত্র ফুটে উঠেছে। বঙ্গবন্ধু, মহাত্মা গান্ধী, মার্টিন লুথার কিং, নেলসন ম্যান্ডেলার মতো মহান মানুষদের জীবনী একটি চলচ্চিত্রে ফুটিয়ে তোলা দুরূহ হলেও বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই সিনেমাটি বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে যুগে যুগে জাগ্রত রাখবে এবং মানবতার জন্য আত্মনিবেদনের প্রেরণা জোগাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। মন্ত্রী এজন্য বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, ভারত সরকার, সিনেমাটির নির্মাতা, পরিচালক, শিল্পী-কলাকুশলীসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। গান ও স্মৃতিচারণে অসমের ভাষাশহীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি ॥ সংস্কৃতি প্রতিবেদক জানান, তারাও জ্বলে ওঠেছিল মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। মায়ের ভাষার জন্য সঁপে দিয়েছিল তাজা প্রাণ। বীরের বেশে দাঁড়িয়েছিল বন্দুকের নলের সামনের। ঢেলে দিয়েছিল বুকের রক্ত। ঘটনাটি ঘটেছিল ভারতের অসমে। বাংলাদেশের বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ৯ বছর পর ১৯৬১ সালে সংঘটিত হয়েছিল আরেকটি ভাষার লড়াই। ওই বছরের ১৯ মে বাংলাকে রাজ্যভাষা করার দাবি আদায়ের আন্দোলনে শহীদ হয়েছিলেন ১১ জন বাঙালী। অসমের শিলচরের সেই ভাষাশহীদদের স্মরণ করা হলো বৃহস্পতিবার। বক্তার কথনে ও গানের সুরে তাদের প্রতি নিবেদিত হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। জানানো হলো হৃদয় উৎসারিত ভালবাসা। বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনার সঙ্গে সুরাশ্রিত এই স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ। সুরের আশ্রয়ের এই স্মরণানুষ্ঠানের সূচনা হয়। কণ্ঠে গান নিয়ে শহীদ মিনারের বেদিকে স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে আসে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। সব মিলে যায় এক স্বরে। প্রতিবাদী চেতনায় গেয়ে শোনায় ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়্যা নিতে চায়’ শিরোনামের সঙ্গীত। অভিন্ন উত্তাপে পরের পরিবেশনায় গাওয়া হয়- আমাদের প্রতিবাদের ভাষা/আমার প্রতিরোধের আগুন...। এই গান শেষে শুরু হয় আলোচনাপর্ব। এতে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। সভাপতিত্ব করেন গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। আলোচনাপর্ব শুরুর আগে বরেণ্য সাংবাদিক ও ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের গীতিকবি আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরীরসহ ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার সম্মান বাঁচাতে ঢাকায় প্রাণ উৎসর্গ করেছে বাঙালী। তারও ৯ বছর পর ১৯৬১ সালের ১৯ মে অসমের বাঙালী-অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় অসমিয়ার বদলে বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে শহীদ হয়েছিলেন ১১ জন। তাদের রয়েছেন কমলা ভট্টাচার্য তিনি সম্ভবত পুরো পৃথিবীতে একমাত্র নারী ভাষা শহীদ। আলোচনা পবের্র পর সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয় ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, বহ্নিশিখা, স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, ভিন্নধারা ও পঞ্চভাস্কর। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন আলক দাস গুপ্ত, মাহবুব রিয়াজ, আরিফ রহমান ও আবিদা রহমান সেতু।
×