ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কাকে ৩৯৭ রানে বেঁধে রাখতে পারলো বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:৩৪, ১৬ মে ২০২২

শ্রীলঙ্কাকে ৩৯৭ রানে বেঁধে রাখতে পারলো বাংলাদেশ

অনলাইন রিপোর্টার ॥ কয়েকবার জীবন পেয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। এরপরও লঙ্কান অলরাউন্ডার কাঙ্ক্ষিত ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেলেন না। তাকে দ্বিশতক বঞ্চিত করে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩৯৭ রানে বেঁধে ফেলতে অবদান রাখলেন নাঈম হাসান। প্রথম দিনের খেলার পর বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল লঙ্কানদের চারশ’র মধ্যে বেঁধে ফেলা। সেই লক্ষ্যে স্বাগতিকদের সফলই বলতে হবে। তবে তাদের আরও আগেই গুটিয়ে ফেলা সম্ভব হতো, যদি চরম মুহূর্তগুলো কাজে লাগানো যেতো। লাঞ্চের আগে-পরে জোড়া আঘাতে শ্রীলঙ্কাকে এলোমেলো করে দিয়েছিলেন নাঈম-সাকিব। দুজনের ঘূর্ণিতে ৫ উইকেটে ৩১৯ রান থেকে মাত্র ৩.৩ ওভারে স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ৩২৮! সেখান থেকে লঙ্কানরা মোটামুটি একটা শক্ত অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছে নবম উইকেটে ম্যাথুজ- বিশ্ব ফার্নান্ডোর ৪৭ রানের জুটিতে। চা পানের বিরতির আগেও সুযোগ ছিল এই জুটি ভাঙার। কিন্তু মুশফিকুর রহিম বিশ্ব ফার্নান্ডোর ক্যাচ মিস করায় হতাশা বাড়ে আরও। দ্বিতীয় সেশনে এই দুজনের প্রতিরোধেই ৮ উইকেটে ৩৭৫ রান নিয়ে তারা চায়ের বিরতিতে যেতে পেরেছিল। কিন্তু তৃতীয় সেশনে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সফরকারীদের প্রতিরোধ। তার আগে শরিফুলের বলে বিশ্ব ফার্নান্ডো হেলমেটে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ায় বিরতির পর তার জায়গায় নামেন আসিথ ফার্নান্ডো। মূলত কিছুক্ষণ প্রতিরোধ গড়তেই তার নামা। সেটি করতে করতে ২৭ বল খেলে ফেলেন তিনি। তাকে শেষ পর্যন্ত বোল্ড করে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ৫ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন নাঈম। বিশ্ব ফার্নান্ডো তারপর নামলেও কাঙ্ক্ষিত ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পাননি ম্যাথুজ। ১৯৯ রানে থাকা অবস্থায় নাঈমের বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে তালুবন্দি হন সাকিবের। তাতে ৩৯৭ বলের ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে সেখানেই। ম্যাথুজের ইনিংসে ছিল ১৯টি চার ও একটি ছয়। অবশ্য লঙ্কান এই অলরাউন্ডারকে দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ফেরানো যেত। কিন্তু বাংলাদেশ ক্যাচের আবেদন না করায় দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা কর্তৃত্ব করেছে ম্যাথুজ-চান্ডিমাল জুটি। লাঞ্চ ব্রেকের কিছুক্ষণ আগে এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান অফস্পিনার নাঈম। ১১৪তম ওভারের প্রথম বলে চান্ডিমাল রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বলের লাইন বুঝতে না পারেননি। পরাস্ত হওয়ায় স্বাগতিকদের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ নেন লঙ্কান ব্যাটার। তাতেও ইতিবাচক কিছু মেলেনি। চান্ডিমালের বিদায়ে ভেঙেছে ১৩৬ রানের মহামূল্যবান পঞ্চম উইকেট জুটি। ১৪৮ বল খেলা চান্ডিমাল করতে পারেন ৬৬ রান। তাতে ছিল ৩টি ছয় ও ২টি চার। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে দিকবেলা নামলেও প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। একই ওভারে নাঈমের জোড়া আঘাতের শিকার হন। তার ঘূর্ণিতে পুরোপুরি পরাস্ত হন দিকবেলা। সরে গিয়ে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ৩ রানে। বিরতির পর তাদের পুরোপুরি কোণঠাসা করে দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার দিকবেলা ফেরার পর দেখার ছিল লেজের ব্যাটাররা ম্যাথুজকে সঙ্গ দিতে পারেন কিনা। ম্যাথুজ বারবার সঙ্গীদের টিকে থাকার পরামর্শ দিলেও সাকিব দ্বিতীয় সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে তা হতে দেননি। এই সেশনের দ্বিতীয় বলেই রামেশ মেন্ডিসকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন। পরের বলে তার ঘূর্ণি বুঝতে পারেননি এম্বুলদেনিয়া। ব্যাক প্যাডে বল লাগায় সাকিব লেগবিফোরের আবেদন করেন। আম্পায়ার কিছুক্ষণ সময় নিয়ে আঙুল তুলে দিলে হ্যাটট্রিকের দ্বারপ্রান্তে চলে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত হয়নি যদিও। তবে সাকিব সফরকারী দলকে তখন পথভ্রষ্ট করে ছেড়েছিলেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে লঙ্কানদের মনে আশার সঞ্চার করেছেন ম্যাথুজ-বিশ্ব ফার্নান্ডো। তাদের ৪৭ রানের জুটিতেই প্রথম ইনিংসের সংগ্রহটা চারশ’ ছুঁই ছুঁই হয়েছে। অফস্পিনার নাঈম ছিলেন সবচেয়ে সফল। ৩০ ওভারে ১০৫ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন। লঙ্কানদের বড় সংগ্রহের পথে বাধা হয়ে ছিলেন তিনিই। সাকিব ৩৯ ওভার বল করে ৬০ রানে নিয়েছেন ৩টি। মেডেনও দিয়েছেন ১২টি। তাইজুল ৪৮ ওভারে ১২ মেডেনে ১০৭ রানে নিয়েছেন একটি উইকেট।
×