ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর বিবিধ প্রয়োজনে

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ১৪ মে ২০২২

মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর বিবিধ প্রয়োজনে

প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। নতুন স্মার্টফোন কেনার আগে ক্রেতারা ইউটিউবে বিভিন্ন ফোনের রিভিউ দেখে স্মার্টফোন পছন্দ করছেন। ইউটিউবে মোবাইল ফোনের রিভিউ দেখার জন্য বাংলাদেশের প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় নাম এন্ড্রয়েড টোটো কম্পানি (এটিসি) বর্তমানে যাদের রয়েছে পনেরো লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার। এন্ড্রয়েড টোটো কোম্পানির যাত্রা শুরু ২০১৩ সালে। স্কুলপড়ুয়া কয়েকজন তরুণ রাফিদ ইসলাম, আরিফুল ইসলাম ইমন, আকিব রাজ, তানভীর ইভানরা মিলে এন্ড্রয়েড টোটো কোম্পানি এটিসি ফেসবুক গ্রুপ খোলেন। তখন তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ফেসবুকে মোবাইল ফোন নিয়ে আলোচনা করা। নতুন সব টেকনোলজি এবং নতুন সব মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে ভাল লাগতো তাদের। এটিসির গ্রুপ থেকেই এরপর ইউটিউব চ্যানেল খোলা হয়। এটিসি যাত্রা শুরু একেবারেই করেছিলেন তারা। তাদের কোন অফিস বা স্টুডিও ছিল না। সারাদিন ঘুরে ঘুরে ভিডিও শ্যুট করতেন। যেহেতু সারাদিন ঘুরে ঘুরে ভিডিও বানাতেন তাই চ্যানেলের নাম দেওয়া হয় টোটো কোম্পানি। মোবাইলের রিভিউ করার জন্য মিরপুরের মোবাইলের দোকানগুলোতে গিয়ে দোকান মালিকদের থেকে অল্প কিছুক্ষণ ভিডিও করার জন্য ফোন চেয়ে নিতেন। তাদের দোকানেই ফোন বের করে ফোনের রিভিউ ভিডিও শ্যুট করতেন এবং বাসায় এসে ফুটেজগুলো এডিট করতেন। এভাবেই তাদের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে দেশীয় মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো রিভিউ করার জন্য ডিভাইস পাঠাতে শুরু করে। এখন তারা ইন্টারন্যাশনাল ফোন কোম্পানিগুলো থেকেও রিভিউ ইউনিট পান। এখন পর্যন্ত ৭৪৫ এর বেশি ভিডিও বানিয়েছে এটিসি। প্রতি সপ্তাহেই গড়ে ৩ থেকে ৪টি ভিডিও বানায় তারা। বর্তমানে এটিসির চ্যানেলে ১৫ লাখ ৭০ হাজারের মতো সাবস্ক্রাইবার আছে। এক বছর আগেও আমাদের ১০ লাখ সাবস্ক্রাইবার ছিল, অর্থাৎ গত এক বছরেই ৫ লাখ ৭০ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে এটিসির। এছাড়াও ফেসবুক গ্রুপ এটিসি অফিসিয়াল গ্রুপে তিন লাখ ৯৪ হাজারের বেশি মেম্বার রয়েছেন। ইউটিউব চ্যানেল ছাড়াও এটিসি অফিসিয়াল গ্রুপ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ আছে, ফেসবুক পেজ আছে এবং এটিসিটোটো ডট কম নামে একটি টেক ব্লগ আছে। ফেসবুক গ্রুপে মানুষ ফোন বা টেক রিলেটেড যে কোন পোস্ট করতে পারে যেমন ফোনের দাম, ল্যাপটপের দাম, ক্যামেরার দাম, কম্পেয়ার, এই বাজেটে কোন ফোন বেস্ট হবে, ফোনের কোন সমস্যা বা টিপস সংক্রান্ত পোস্ট ইত্যাদি। গ্রুপে ৩ লাখের বেশি মেম্বার আছে এবং গ্রুপটি খুবই একটিভ। গ্রুপ পরিচালনা করার জন্য ১৫ জনের বেশি ডিজিটাল টিম মেম্বার আছেন। এটিসির ভবিষ্যত পরিকল্পনা হলো একটি পরিপূর্ণ টেক কমিউনিটি গড়ে তোলা যেখানে ইউটিউব ভিডিও এর পাশাপাশি রিটেন ব্লগ, পডকাস্ট, টেক নিউজ, ফেসবুক গ্রুপ সবকিছুই থাকবে। রিভিউ এ এটিসি ফোনের পজিটিভ দিকের সঙ্গে সঙ্গে ফোনের নেগেটিভ দিক তুলে ধরাকে প্রাধান্য দেয়। এটিসির ফাউন্ডিং মেম্বার রাফিদ ইসলামের মতে, ফোনের প্রশংসা শুনতে চাইলে কোম্পানি, বিজ্ঞাপন, সেলসম্যান থেকেই শোনা যায়। আমাদের কাজ হচ্ছে ফোনের নেগেটিভ বা কমতিগুলো খুঁজে বের করা। ফোনের ভাল খারাপ উভয় দিকই তুলনামূলকভাবে তুলে ধরা যাতে কাস্টমারের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হয় কোন ফোনটা তার জন্য উপযুক্ত হবে। জনপ্রিয়তার কারণ সম্পর্কে এটিসির আশিকুর রহমান তুষার বলেন, বাংলা ভাষায় টেক কন্টেন্ট নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বহু বছর ধরে কাজ করছে এটিসি। আমাদের সোজাসাপ্টা কথাবার্তা ও বাস্তবিক রিভিউ দর্শকদের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এজন্য আমাদের ওপর মানুষের আস্থা তৈরি হয়েছে। এজন্যই এটিসি জনপ্রিয় হয়েছে বলে আমি মনে করি। চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে এটিসির ফাউন্ডিং মেম্বার আরিফুল ইসলাম ইসলাম বলেন, প্রথম অবস্থায় রিভিউ ইউনিট ম্যানেজ করা অনেক কঠিন ছিল। সবসময় নিজের পকেটের টাকা দিয়ে ফোন কিনে বা শপে গিয়ে শপ থেকে ফোন নিয়ে রিভিউ বানানো সম্ভব না। এছাড়া বাংলাদেশে ইউটিউব এডসেন্স থেকে ইনকাম খুবই কম, একদম নামমাত্র বলা চলে। এজন্য আমাদের বড় টিম বা সেটাপ চালাতে কষ্ট হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে আশরাফুল ইসলাম তানভীর বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করা মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর কাছে আমাদের প্রত্যাশা হলো তারা যাতে নিয়মিত আমাদের রিভিউ এর জন্য ডিভাইস প্রেরণ করে। বাইরের দেশের ইউটিউবারদের ফোন রিলিজের কয়েক সপ্তাহ আগে রিভিউ ইউনিট দেওয়া হয়, এরকম সুযোগ আমাদেরও দেওয়া হোক। শুধু আমাদেরই না, বাংলাদেশের ছোট বড় অন্যান্য সকল ইউটিউবারদেরও যাতে দেওয়া হয় এই প্রত্যাশা করি। আইটি প্রতিবেদক
×