ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুদের সুষ্ঠু বিকাশ

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১৪ মে ২০২২

শিশুদের সুষ্ঠু বিকাশ

আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যত। আধুনিক ও নতুন বাংলাদেশ তৈরির প্রত্যয়ে তাদেরকে যোগ্যতম ভাবে গড়ে তুলতে হবে। শারীরিক সক্ষমতা পাশাপাশি তাদেরকে এগিয়ে দিতে হবে মানসিক বিকাশে। শিক্ষা থেকে আরম্ভ করে শিশুদের সুস্থ শরীরচর্চায় মনোনিবেশ করা এমনকি মনন বিকাশকে আবশ্যকীয় প্রত্যয় হিসেবে বিবেচনায় আনা অত্যন্ত জরুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের খেলার জগত এবং সাংস্কৃতিক বোধকে জাগিয়ে তুলতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। খেলাধুলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পঁচাশি ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও সংগঠককে ‘জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ২০১৩-২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। ২০২০ সালের মার্চ থেকে শুরু হওয়া অতিমারি করোনায় সার্বিক ব্যবস্থাপনার ওপর যে অনাবশ্যক স্থবিরতা তৈরি হয় সেখানে কোমলমতি উদীয়মান ক্ষুদ্র প্রজন্মকেও বিপাকে পড়তে হয়। জ্ঞানচর্চা থেকে আরম্ভ করে খেলাধুলায় মনোনিবেশ করা দুঃসাধ্য হয়ে যায়। সামাজিক দূরত্ব আর ব্যক্তি বিচ্ছিন্নতাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে অনেক কিছুর ওপর অবরুদ্ধতার জাল বিস্তার করতে হয় যাতে শিশুরা পড়ে চরম অস্থিরতায়। প্রযুক্তির বিশ্বকে নতুনভাবে অবারিত করতে হয় শ্রেণী পাঠক্রমের অনন্য মাধ্যম হিসেবে। শ্রেণী পাঠ কতখানি সম্ভব হয়েছে তা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। শিশুদের ভার্চুয়াল বিশ্বে আসক্তি বাড়ার অভিভাবক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় ফেলে দেয়। সেখান থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে নানামাত্রিক অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করেও তাদেরকে প্রযুক্তির আঙিনা থেকে অন্যত্র দৃষ্টি ফেরানোর ব্যাপারটি এখনও চলমান রয়েছে। তার ওপর আধুনিকতার বেড়াজালে আটকে পড়া বহুতল ভবনের শিশু-কিশোররা এখন আর সেভাবে খেলার মাঠে যায় না। বরং ঘরে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হওয়াটাই যেন যাপিত জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে যায়। সরকার প্রধান অভিবাবকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান যাতে শিশুদের কিছু সময়ের জন্য হলেও উন্মুক্ত মাঠে পাঠানো হয়। খেলাধুলা, শরীরচর্চা ও সাংস্কৃতিক বোধে শিশুদের সম্পৃক্ত করতে হবে। সুস্বাস্থ্যের জন্য শরীরচর্চা ও খেলাধুলার নিয়মিত অভ্যাস সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তার ওপর মানসিক চেতনায় শুদ্ধ সাংস্কৃতিক প্রভাব পড়া জাতির ভাবি কারিগরদের জন্য একান্ত আবশ্যক। সেটা পরিবারের ছোট আঙিনা থেকেই শুরু করতে হবে, যা বৃহৎ সামাজিক প্রেক্ষাপটকে সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করবে। শিশুদের দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এর বিকল্প অন্যকিছু হতে পারে না। সাংস্কৃতিক দ্যোতনায় আমরা একটি সমৃদ্ধ জাতি গোষ্ঠী। পরবর্তী প্রজন্মকে তাতে উৎসাহ ও অনুপ্রাণিত করা এবং নতুন দেশ গড়ায় প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে। সরকার সামগ্রিক মানসিক বিকাশে সার্বিক উপকরণ জনগোষ্ঠীর নিকট পৌঁছে দিচ্ছে। তাকে যথার্থ সদ্ব্যবহার করে আগামীর প্রজন্মকে নতুন ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে উজ্জীবিত করতে হবে।
×