ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দূষণ রোধে করণীয় মোঃ মকবুল আহমদ

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ পরিবেশ দূষণ

প্রকাশিত: ২০:৫২, ১২ মে ২০২২

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ পরিবেশ দূষণ

আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তা নিয়েই আমাদের পরিবেশ। এই পরিবেশ যখন ভাল থাকে তখন আমরা ভাল থাকি। কিন্তু এই পরিবেশ যখন দূষিত হয়ে যায় তখনই আমাদের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। বেঁচে থাকার জন্য আমরা পরিবেশকে নানাভাবে ব্যবহার করে থাকি। যার ফলে বিভিন্ন পরিবর্তন বা রূপান্তর ঘটে। সমস্ত জীব-জগতের জন্য পরিবেশের এই পরিবর্তন যদি ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায় তখন আমরা বুঝব পরিবেশ দূষিত হয়ে গেছে। পরিবেশের মধ্যে যদি বিভিন্ন ক্ষতিকর ও বিষাক্ত পদার্থের সংমিশ্রণ ঘটে তাহলে পরিবেশ দূষিত হয়। বায়ু, পানি এবং শব্দ এই তিনটি প্রধান দূষণের মাধ্যমেই আমরা পরিবেশ দূষণের মারাত্মক শিকার হচ্ছি। যা নগরবাসীকে এক মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে ঢাকা এবং অন্যান্য শহরে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। অধিকসংখ্যক মোটরগাড়ির ধোঁয়া শিল্প কারখানার দাহ্য গ্যাস, সিসা প্রভৃতির কারণে ঢাকার বাতাসে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন-ড্রাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, সিএফসি প্রভৃতির পরিমাণ বেড়ে গিয়ে বাতাস বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে। ঢাকার বাতাসে সিসার উপস্থিতি এখন বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করছে। অপরদিকে পানি দূষণ নগরবাসীর জন্য আরেকটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা সম্প্রতি ঢাকার বেশ কিছু জায়গায় কলেরার প্রাদুর্ভাব সে কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। নিরাপদ পানির জন্য নগরবাসী ওয়াসার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু বিভিন্ন সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি পুরাতন পানির পাইপ ইত্যাদির কারণে পানির পাইপে ময়লা ঢুকে পানি দূষিত হয়ে পড়ে। যার ফলে নানারকম পেটের পীড়াসহ চর্মরোগের বিস্তার লাভ করে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই উদ্বেগজনক এবং চিকিৎসা ব্যববহুলও বটে। এছাড়া নগরীর ক্ষতিকর বর্জ্য এবং শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত দূষিত পানি কোনরূপ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে ট্রিটমেন্ট না করে সরাসরি নদীতে ফেলে দেয় যা পার্শ¦বর্তী বহমান নদীতে মিশে গিয়ে পানির প্রবাহ আর স্বাভাবিক থাকে না। আরেকদিকে শব্দদূষণের মান মাত্রাকে ঢাকানগরী অনেক আগেই অতিক্রম করে এখন বিপজ্জনক মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে। কাকডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত প্রচুর গাড়ির শব্দের আওয়াজ নগরীর মানুষের কানে আঘাত করে শ্রবণশক্তি হ্রাস, মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি, স্থায়ুর কার্যকলাপে বিঘœ সৃষ্টি, হৃদরোগ ইত্যাদি ঝুঁকিপূর্ণ রোগগুলো বৃদ্ধির মাধ্যমে মানুষের আয়ু কমিয়ে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে চালকদের অহেতুক হর্ন বাজানো বন্ধ এবং কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে তা রোধ করতে হবে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং জাতীয় দৈনিকে প্রচার নিয়মিত করতে হবে। পরিবেশ দূষণের এসব অপরিনামদর্শিতার কারণ এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ রোধকল্পে আমাদের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও মন্ত্রণালয়গুলোকে একত্রে সুষ্ঠুভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই কেবল সম্ভব আর্থিক ক্ষতি এবং বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া। মোহাম্মদপুর, ঢাকা থেকে
×