ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবহেলিত খেয়াঘাট এখন দৃষ্টিনন্দন পার্ক

যাত্রী ছাউনি, ফুলের করিডর, উন্নত টাইলসে পথ

প্রকাশিত: ২২:২৯, ৯ মে ২০২২

যাত্রী ছাউনি, ফুলের করিডর, উন্নত টাইলসে পথ

খোকন আহম্মেদ হীরা ॥ দৃষ্টিনন্দন ঘাট, প্রকৃতির মনোরম পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী ছাউনি, ফুলের করিডর, উন্নত টাইলসে পথ, ঘাটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপির ছবি সংবলিত একটি সুন্দর তোরণ, একটি কফি শপ নির্মাণ করা হয়েছে বরিশাল নগরীর সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম চরকাউয়া খেয়াঘাটে। যা এবারের ঈদ-উল-ফিতরে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে বাড়তি একটি বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে যুক্ত হয়েছে। প্রাচীণ এ ঘাটটি ব্যবহার করে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত। দীর্ঘদিন থেকে উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী এ ঘাটটি। একই সঙ্গে ঘাটের যাত্রী ছাউনিটিও দখল করে নিয়েছিল দখলদাররা। ঐতিহ্যবাহী চরকাউয়া খেয়াঘাটের সেই মরণফাঁদের পুরনো চিত্র পাল্টে দিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অর্থায়নে প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে খেয়াঘাটকে সাজানো হয়েছে পূর্বের জমিদার বাড়ির পুকুর ঘাটের আদলে। পাশাপাশি ঘাটের উপরাংশ ও যাত্রী ছাউনীকে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতের শোভাবর্ধক গাছ, ফোরপার্কিং টাইলস ও নানা রংয়ের আলোকসজ্জায়। যে কারণে এক সময়ের অবহেলিত চরকাউয়া খেয়াঘাটটি এখন শুধু খেয়া পারাপারের স্থান নয়; এটি এখন দৃষ্টি নন্দন বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। দৃষ্টিনন্দন খেয়াঘাট ও বিনোদনকেন্দ্রটি খুব শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, চরকাউয়া খেয়াঘাটের রাস্তা থেকে ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। খেয়াঘাটে ট্রলার বা নৌকা থামানোর জন্য নতুন করে সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। গাড়ি ওঠা-নামার জন্য সিঁড়ির পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে পৃথক র‌্যাম্প। এ ছাড়া যাত্রী ছাউনিটিকে পথচারীদের বিশ্রামের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে। ছাউনির চারপাশে টাইলস, আলোকসজ্জা এবং বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাউনির দুইপাশে এবং খেয়াঘাটের মাঝ বরাবরে করা হয়েছে ফুলের বাগান। যেখানে রোপণ করা হয়েছে, শোভাবর্ধক পাম্প ও ঝাউগাছ, হাসনাহেনা এবং বেলীসহ দেশী-বিদেশী প্রায় ৫০ প্রজাতের ফুল গাছ, যা খেয়াঘাটটিকে একটি গার্ডেনে রূপ দিয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সম্প্রতি খেয়াঘাটে দুর্দশার চিত্র সরেজমিন পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। ওই সময় ভুক্তভোগীদের জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে সিটি মেয়র বরিশালের ঐতিহ্য রক্ষায় নিজস্ব অর্থায়নে খেয়াঘাটের উন্নয়ন এবং সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সে অনুযায়ী গত ১ মার্চ থেকে শুরু হয় খেয়াঘাটের উন্নয়ন, সংরক্ষণ এবং সংস্কারের কাজ। চরকাউয়া খেয়াঘাটের পুনর্নির্মাণ ও সৌন্দর্য বর্ধন কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার আশিকুর রহমান সুজন বলেন, সিটি মেয়রের নিজস্ব পরিকল্পনায় খেয়াঘাটে সিঁড়ির কাছে একটি স্থায়ী তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। চরকাউয়া খেয়াঘাটটি যেহেতু ঐতিহ্যবাহী একটি ঘাট, যে কারণে মেয়রের পরিকল্পনায় তোরণের ওপরের অংশে একটি নৌকা নির্মাণ করা হবে। সুজন আরও বলেন, ঘাটের উন্নয়ন কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খুব শীঘ্রই দৃষ্টিনন্দন খেয়াঘাট ও বিনোদনকেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
×