ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ণাঢ্য আয়োজনে ইস্টার সানডে পালন

প্রকাশিত: ২২:১৬, ১৮ এপ্রিল ২০২২

বর্ণাঢ্য আয়োজনে ইস্টার সানডে পালন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নানা উৎসব ও আয়োজনের মধ্য দিয়ে রবিবার পালিত হয়েছে ‘ইস্টার সানডে।’ সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রীস্টান সম্প্রদায় তাদের অন্যতম এ ধর্মীয় উৎসব যথাযথ মর্যাদায় পালন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে প্রতিটি গির্জা অপরূপ সাজে সাজানো হয়। সকাল থেকেই দেশের সব চার্চেই বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। খ্রীস্টান ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, যিশুখ্রিস্টের মৃত্যুর তৃতীয় দিনে রবিবার তিনি ফিরে আসেন। পুনরুত্থানের ওই রবিবারটি ইস্টার সানডে হিসেবে পরিচিত। যিশুখ্রিস্টের এই ফিরে আসার দিন স্মরণে, দেশে দেশে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীরা পালন করেন ইস্টার সানডে। ইস্টার সানডে উপলক্ষে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তমান্ডলিক সূর্যোদয় প্রার্থনা। রবিবার ভোর ৬টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ মাঠে এই প্রার্থনার সূচনা হয়। সেখানে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার ৫ শতাধিক খিস্টধর্মাবলম্বী অংশ নেন। ভোরে শ্রীমঙ্গলের প্রার্থনায় যোগ দিতে আসা স্যামুয়েল যোসেফ হাজং বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকবার ঢাকার প্রার্থনায় গিয়েছি। কিন্তু শ্রীমঙ্গলের মতো প্রত্যন্ত একটি অঞ্চলে এমন আয়োজন এবারই প্রথম। এখানে অংশ নিতে পেরে ভাল লাগছে।’ আরেক অংশগ্রহণকারী সাজু মারছিয়াংয়ের ভাষ্য, ‘সম্মিলিত উদ্যোগের এই সূর্যোদয় সমবেত প্রার্থনা যেন এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। প্রার্থনায় একসঙ্গে এত মানুষের উপস্থিতি দেখে উৎসাহিত হয়েছি।’ শ্রীমঙ্গল পুনরুত্থান সূর্যোদয় আন্তমান্ডলিক উপাসনা কার্যকরী কমিটির সভাপতি ফাদার নিকোলাস বাড়ৈ সকালের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এবারই প্রথমবারের মতো আমরা এত বড় আয়োজন করেছি। এখানে ক্যাথলিক, ব্যাপ্টিস্ট, প্রেস বিটারিয়ানসহ সব খ্রিস্টধর্মাবলম্বী অংশ নেন। তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বের সকলের শান্তির জন্য প্রার্থনা করেছি। আমরা যেন সকল ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারি। প্রভু যিশু যেন আমাদের সকলের মঙ্গল করেন, প্রার্থনায় এসব কথা বলেছি। রাজশাহীতেও বর্ণাঢ্য আয়োজনে ইস্টার সানডে পালিত হয়েছে। রবিবার সকালে রাজশাহী মহানগরীর ডিঙ্গাডোবার বাগানবাড়ি এলাকায় খ্রিস্টযাগ বা বিশেষ প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা। প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন- এই চার্চের ফাদার ইনমান ওয়েল কানন রোজারিও। খ্রিস্টযাগের পরে আপন কৃষ্টিতে চলে ইস্টারের শুভেচ্ছা বিনিময়। ঘরে ঘরে আয়োজন করা হয় দই, চিড়া, মুড়ি-মুড়কির মতো হরেক রকম মুখরোচক আহার সামগ্রী। এতে অংশ নেন পাড়া-প্রতিবেশী ও ঘরের সবাই। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রভু যিশু মানবজাতিকে মুক্তি দিতে এই জগতে এসেছিলেন। যা পুনরুত্থান হিসেবে পরিচিত। তারা জানান, বড় দিনের পরেই জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয় ইস্টার সানডে। তাই আজ তাদের জন্য বিশেষ দিন। দিনটিতে নতুন সাজে ছোট-বড় সবাই পুনরুত্থানের খ্রিস্টযাগে, তথা উপাসনায় অংশগ্রহণ করেন এবং খ্রিস্ট পল্লীতে চলে সাত দিন ধরে নানা আয়োজন।
×