ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুই বছর পর মার্কেটমুখী মানুষ

জমে উঠছে ঈদের কেনাকাটা

প্রকাশিত: ২১:১৬, ১৮ এপ্রিল ২০২২

জমে উঠছে ঈদের কেনাকাটা

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ করোনার কারণে গত দুই বছর তেমনভাবে জমেনি ঈদের বাজার। তবে দুই বছর পর এবার রোজার শুরু থেকেই মার্কেমুখী হয়েছেন মানুষ। ইতোমধ্যে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। রাজশাহী নগরীর আরডিএ মার্কেট থেকে শুরু করে সবকটি মার্কেট ও বিপণিবিতানে এখন মানুষের স্রোত। রোজার মাঝামাঝিতে এসে অনেকেই সেরে ফেলতে চাইছেন ঈদের কেনাকাটা। তবে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, মানুষের ভিড় বেশি হলেও বেচাবিক্রি তুলনামূলক কম। রবিবার সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে ভিড় দেখা গেছে ক্রেতাদের। তীব্র তাপমাত্রা উপেক্ষা করে নগরীতে গড়ে ওঠা শপিংমল ছাড়াও নিউমার্কেট, বিভিন্ন পোশাকের শোরুম ও সপুরা এলাকায় সিল্ক ফ্যাশন হাউসগুলোয় বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতাদের ভিড়। রাজশাহীতে এবার সবচেয়ে ভিড় বাড়ছে আধুনিক শপিংমল থিম ওমর প্লাজায়। সকাল থেকেই সেখানে ভিড় লেগে থাকছে মানুষের। রবিবার নগরীর আরডিএ মার্কেটে ক্রেতাদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এ ছাড়া নিউমার্কেটসহ অন্য বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা গেছে দোকানে দোকানে। আধুনিক থিম ওমর প্লাজায় অনেকেই আসছেন পরিবার নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে। অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা সারছেন। পছন্দের পোশাকটি খুঁজে পেতে তারা এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটছেন। পছন্দের পোশাক কিনতে নগরীর উপশহর থেকে আশা গৃহবধূ চামেলি আক্তার বললেন, এখনও ঘুরে ঘুরে দেখছি। পছন্দ করে উঠতে পারছি না। গরমে সুতি কাপড়ের জামা খুঁজছি, কিন্তু যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে তা সিল্ক নয়তো জর্জেট। নগরীর নিউমার্কেট ঘেঁষে গড়ে ওঠা শপিংমল থিম ওমর প্লাজায় ব্রান্ডের দোকানগুলোতেও আসতে শুরু করেছেন ক্রেতারা। এ ছাড়া নগরীর সপুরা এলাকায় সিল্ক হাউসগুলোয় ঈদের কেনাকাটা জমে উঠতে শুরু করেছে। সকাল থেকে বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে তারা বলছেন, এখনও ঠিক সে রকম কেনাকাটা শুরু হয়নি। ২০ রোজার পর থেকে জমে উঠতে শুরু করবে রাজশাহীর ঈদ বাজার। যশোরে জমজমাট ঈদবাজার স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, প্রতিদিনই যেন আগুন ঝরছে। রোদের তেজে রাস্তায় পা ফেলাও কঠিন। তবে রোদের এই তেজ বাধা হতে পারেনি যশোরের ঈদবাজারে। তীব্র রোদে, অসহ্য গরমেও এ দোকান ও দোকান ঘুরে নিজের পছন্দের কেনাকাটা করছেন মার্কেটগুলোতে আসা ক্রেতারা। ভিড় আর গরমের দুর্ভোগেও সাধ্যের মধ্যে পছন্দমতো কেনাকাটা করতে পেরে খুশি এসব ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা বলছেন, পবিত্র ঈদ-উল- ফিতরের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ভিড় বাড়ছে যশোরের বিপণিবিতানগুলোতে। প্রতিদিনই অসহ্য গরম উপেক্ষা করে সকাল থেকে রাত অবধি বেচাকেনা চলছে। আর গত শুক্র-শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় মার্কেটগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। এমন বেচাবিক্রি ঈদ পর্যন্ত চললে গত দুই বছর করোনার যে ক্ষতি হয়েছিল, সেটা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা পোশাক বিক্রেতাদের। যশোর সিটি প্লাজা, আড়ং, দর্জিবাড়ি, আরএন রোড বিতানগুলোতে মানুষে রমরমা। পোশাকের প্রতিটি দোকানে ভিড় বেড়েছে। শুধু পোশাকের দোকানে নয়, পিছিয়ে নেই জুতার দোকানগুলোও। তাদের বেচাকেনা চলছে রমরমা। লিবার্টি, বাটা, এ্যাপেক্সসহ ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। যে যার পছন্দের জুতা কিনছেন। কালেক্টরেট মার্কেটের আসাদ টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে মানুষের কাছে তেমন টাকাপয়সা ছিল না। এবার করোনা এবং মানুষের আর্থিক অবস্থাও কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এবার ঈদে বাজার স্বাভাবিক হচ্ছে। এমন অবস্থা থাকলে বিগত দুই বছরের ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে উঠব। চট্টগ্রামে বিদেশী নামে ভেজাল প্রসাধনী নয়ন চক্রবর্ত্তী, চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, তিন শ’ টাকার একটি বডি স্প্রে মাত্র দেড় শ’ টাকা, সঙ্গে একটি পারফিউম এবং মেহেদি ফ্রি।’ এমন চটকদার বিজ্ঞাপনি কথায় আকৃষ্ট করে নকল প্রসাধনী সামগ্রী গছিয়ে দিচ্ছে ঈদবাজারে আসা ক্রেতাদের। চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেটের সামনের সড়কে মাইক্রোবাসে করে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাইক লাগিয়ে বিক্রি হচ্ছে নকল সামগ্রী। ঈদবাজারে এমন প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে হলেও এ বিষয়ে সরকারী তদারকি কোন সংস্থার যেন দায়বদ্ধতা নেই। বিখ্যাত ব্র্যান্ডের প্রসাধনীর বোতল বা কৌটা, লেবেল ও ট্রেডমার্ক হুবহু নকল করে ভেজাল প্রসাধনী তৈরি করে ঈদবাজারে বিক্রি হচ্ছে সড়কের ওপর। বাসাবাড়ি থেকে ব্যবহার্য পণ্য সামগ্রীর আসল মোড়ক সংগ্রহ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ সামগ্রী লটে কিনে এসব বাজারজাত করছে একটি অসাধু সিন্ডিকেট। নগরীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনেই সড়কে মাইক্রোবাস দাঁড় করিয়ে চলছে বেচাকেনা এসব নকল প্রসাধনী সামগ্রী। বিএসটিআইয়ের (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন) অনুমোদন তো দূরের কথা, নকল এসব প্রসাধনী বিক্রি করতে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে না অসাধু বিক্রেতারা। এদিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মাহফুজুর রহমান জানান, খাদ্যে ভেজাল হলে যেমন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, তেমনি নকল ও ভেজাল প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারের কারণে ক্যান্সার, চর্মরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয় ব্যবহারকারীরা। এসবের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান অভিযান প্রয়োজন। নকল খাদ্যদ্রব্য ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য মানে বিষ।
×