ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ২৯ জানুয়ারি ২০২২

শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ

উপাচার্যের পদত্যাগসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিলেটের শাহ্্জালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের লাগাতার আন্দোলন শুরু হয় ১৩ জানুয়ারি থেকে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী’ হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ১৩ জানুয়ারি আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। কয়েক শ’ ছাত্রী এই আন্দোলনে শরিক হলে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে পুলিশী হামলায় আন্দোলনের দাবি উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফায় পরিণত হয়। আন্দোলনের ১৪তম এবং অনশনের ৭ম দিনে বিশিষ্ট লেখক, বুদ্ধিজীবী প্রফেসর ড. জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙ্গাতে ক্যাম্পাসে যান। অনশন ভাঙ্গার পর তাদের দাবি আদায়ের আশ্বাস দেন। সরকারের উচ্চ মহলের আশ্বাসেই এই শিক্ষাবিদ এমন গুরুদায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসেন। এক সময়ের উপাচার্য আক্ষেপের সুরে বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কি অবস্থা? পরে তিনি অনশন ভাঙ্গিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি তার অবিচল দায়বদ্ধতা প্রমাণ করলেন। শুধু তাই নয়, দুঃসাহসিক মনোবলে জানিয়ে দিলেন- ‘এটা তোমাদের ক্যাম্পাস। দেশের আরও ৩৪ জন উপাচার্য এই আন্দোলনে শিউরে উঠেছেন’। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তহবিলে ১০ হাজার টাকা দিয়ে সেটা খরচ করতে অনুরোধ জানান। প্রাক্তন উপাচার্য জাফর ইকবাল জানান, তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের মুখে খাবার তুলে দিতে এসেছেন। তারা তার কথা শুনেছেন এটাই অনেক বড় পাওয়া। তিনি কারও কাছে যাননি, সরকারের উর্ধতন মহল তার কাছে এসেছেন। তাঁকে যে আশ্বাস দেয়া হয়েছে সেটা পালন করা হবে বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিও বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করা হবে। তবে তার জন্য অবশ্যই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। সর্বময় ক্ষমতায় আচার্য অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির হাতে। তিনি যেভাবে উপাচার্য নিয়োগ দেন, সেখানে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মপ্রক্রিয়া সম্পৃক্ত থাকে। সঙ্গত কারণে সমস্ত প্রটোকল মেনে চলেই বর্তমান ভিসির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রচলিত বিধি নিয়মের আওতাধীন। শিক্ষার্থীদের পুরো বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপর ন্যস্ত করে অপেক্ষা করতেই হবে। এতখানি যখন হয়েছে বাকিটাও ক্রমান্বয়ে শুরু করা হবে। প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার প্রিয় শিক্ষার্থীদের জন্য যা করেছেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা আশা করব, দেশের প্রত্যেক শিক্ষক যেন তাদের ছাত্র-ছাত্রীর ব্যাপারে এমন মনোভাব পোষণ করেন। তাহলে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির আর উদ্ভবই হবে না।
×