ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের সর্বনাশ করতেই বিএনপির লবিষ্ট নিয়োগ : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:২৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

দেশের সর্বনাশ করতেই বিএনপির লবিষ্ট নিয়োগ : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা দেশের সর্বনাশ করতে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ করে বিপুল অর্থ খরচ করার প্রতিটি পাই পাই পয়সার হিসাব নেওয়া হবে জানিয়ে বলেছেন, দেশ সব থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, এটি যাদের পছন্দ নয় তারাই শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের সর্বনাশ করছে। এতো বিপুল অর্থ কোথায় থেকে আসলো, বিদেশে খরচ হলো- এর জবাব ও ব্যাখ্যা বিএনপিকে দিতে হবে। আর দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে লবিস্ট নিয়োগের খরচের পাই পাই হিসাব নেওয়া হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা এবং অধিবেশনের সমাপনি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে আরও বলেন, ক্ষমতায় থেকে বিএনপি দেশের অর্থ-সম্পদ লুন্ঠন করে বিদেশে পাচার করে সেই অর্থ দিয়ে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। এদের কোন দেশপ্রেম নেই, দেশের জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই। তাই দেশের অগ্রযাত্রাকে বন্ধ করতে, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে নানা চক্রান্ত করছে। বিএনপি দেশকে ধ্বংস করা, লুটপাট করা, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস সৃষ্টি করা ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। কিন্তু দেশের জনগণের প্রতি আমার আস্থা ও বিশ্বাস আছে যে, কোন অসত্য অপ্রপ্রচার ও মিথ্যাচারে দেশের জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও শেষ দিনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরও আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, প্রধান হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, গনফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, মোকাব্বির খান, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা প্রমূখ। আলোচনা শেষে রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনীত প্রস্তাবটি কন্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এরপর স্পীকার রাষ্ট্রপতির সংসদ অধিবেশন সমাপ্তির আদেশটি পাঠ করে শোনান। নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে দেশের জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষা করা, কেড়ে নেয়া নয়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন তার বড় প্রমাণ। বিএনপি এই নির্বাচনেও নানা খেলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারেনি। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষাসহ সব কিছু আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল। আওয়ামী লীগের আমলেই দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত থাকে। র্যাবের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ প্রসঙ্গে সংসদ নেতা বলেন, যারা দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ, উগ্রবাদ দমনে অত্যন্ত সফল ও পারদর্শীতা দেখিয়েছে, অভিজ্ঞতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছে- তারা এতো খারাপ হয়ে গেল কেন? আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দোষ দেই না। দেশের ভাবমূর্তি ধ্বংস করতে তারা শত শত কোটি টাকা খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছে বিএনপি। এতো বিপুল সংখ্যেক অর্থ তারা কোথায় পেল। আর এটা তো বৈদেশিক মুদ্রা। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বাঁচানো, নির্বাচনকে বানচাল ও প্রশ্নবিদ্ধ করা, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বিএনপি শত শত কোটি টাকা খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করে, কোন ভাল কাজের জন্য নয়। এতো অর্থ বিএনপি কোথায় থেকে পেল, কীভাবে সেখানে গেল- এর জবাব একদিন বিএনপিকে দিতেই হবে। অন্যান্য নেতারা যা বলেন ॥ ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও জিয়াউর রহমান যাদের নিয়ে দল গঠন করেছিলেন তারা এখনো বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। বিএনপি সাংবিধানিক গণতন্ত্র চায় না। তাদের উদ্দেশ্য দেশকে অস্থিতিশীল করা, গণতন্ত্রকে ব্যাহত করা। তারা ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীন দেশকে ধ্বংসের চেষ্টা করে। ৭৫ এর পর দেশ চলে যায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের হাতে। কিন্তু শেখ হাসিনা দেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশ আবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পরিচালনা করে অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসাবে পরিণত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার সম্পন্ন করা হয়েছে। সাথে সাথে আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধ আইন করে একাত্তরের ঘাতকদের বিচার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে। আর প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম, গতিশীল ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের কারণে এসব সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিএনপি আজ পরাজিত বিদেশি শক্তিকে আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছেন। কোনো পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না। অপকর্মের জন্য আল্লাহ’র কাছে মাফ চাওয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মানুষের জীবন বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছেন বলে উল্লেখ করেন মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অঙ্গীকার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা। সেই অঙ্গীকারের পথ ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। রাষ্ট্রপতির ভাষণেও সেটাই ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ আজ এ সাফল্য ভোগ করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি প্রযুক্তি নির্ভর উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বিশ্বের বুকে মর্যাদার সাথে মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের এ উন্নয়ন বিশ্বের অনেক দেশের কাছে অনুকরণীয় হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালেও দেশের অর্থনৈতিক চাকা চালু রেখে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের চিত্র তুলে ধরে চীফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশে এখন বাস্তব। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা আজ সারাদেশে। প্রধানমন্ত্রী দক্ষ নেতৃত্বে সফলভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জনগণের সংবিধানে উল্লেখিত অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এ পাঁচটি মৌলিক অধিকারও নিশ্চিত করে যাচ্ছেন। গত এক যুগের উন্নয়ন অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ এখন উন্নত- সমৃদ্ধ দেশের দ্বারপ্রান্তে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দেশ বিশ্বে উন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বিএনপি’র সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, তারা সকাল এক কথা, বিকেলে এক কথা বলেন। সকালে সর্বসম্মতভাবে বিল পাস হলো, আর এখন বিলের বিরুদ্ধে বলছেন বিএনপির সদস্যরা। তারা সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের সময় সত্যে কথা বলায় প্রতিহিংসা থেকে আমিও রেহাই পাইনি। আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং আমার বাড়ি পর্যন্ত দখল করা হয়েছিল। সেই মামলা এখনো রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা বিরোধীতার নামে বিরোধীতা করতে চাই না। আমরা চাই উন্নয়ন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন চলছে বলেই আমরা সরকারকে সহযোগিতা করছি। উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে প্রধানমন্ত্রীর মতো অন্য মন্ত্রীদের দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির নেতাদের মুখে মানবাধিকারের কথা মানায় না বলে মন্তব্য করেন জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের সময় দেশের মানুষের ভাতের চাহিদাপূরণ হয়েছে। এখন পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা চলছে। আগে আমরা শুনতাম সোভিয়েত ইউনিয়নে বৃষ্টি হলে এ দেশের কমিউনিস্টরা ছাতা ধরত। এখন আমেরিকায় বৃষ্টি হলে বিএনপি দেশে ছাতা তুলতে দেরি করতে রাজি নয়। তিনি আরো বলেন, আপনারা র্যাব নিয়ে কথা বলেন, গুম, ক্রসফায়ার নিয়ে কথা বলে। তারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। আপনাদের নেতার (জিয়াউর রহমান) শাসনামলে সেনাবাহিনীতে ১৯ বার ক্যু হয়েছে। হাজার হাজার আর্মি অফিসার খুন হয়েছে। আপনাদের মুখে মানবাধিকার শোভা পায় না। আইন-শৃঙ্খলা রাক্ষায় র্যাব একটি নির্ভরতার প্রতিষ্ঠান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি জানান তিনি। চলতি বছর রাজনীতির জন্য সংকটকাল হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মুহম্মদ মনসুর আহমেদ। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মনসুর বলেন, ২০২২ সাল ওমিক্রনের জন্য যেমন অত্যন্ত সংকটকাল, আমি মনে করি রাজনীতির জন্যও হবে একটি সংকটকাল। সংসদনেত্রী, এই বিষয়টি আপনাকে লক্ষ রাখতে হবে। দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্য থেকে রাজনীতিকে এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু পরী মনি, খুকু মনি আর রুকু মনিদের কাহিনী পত্রিকায় পড়লে বাংলাদেশের বর্তমান নতুন প্রজন্ম হতাশ হয়। সমাজ দূষিত করতে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে পরী মনি আর খুকু মনিদের। এটি একটি ষড়যন্ত্র। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, অধ্যাপক জাফর ইকবাল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙিয়েছেন। সেখানে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিলেন না? ওই অঞ্চলে কী রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেই? তারা কী করেছেন? জাফর ইকবাল উনার ইচ্ছায় গেছেন তা মনে করি না। নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী সেই ব্যবস্থা করেছেন। র্যাবের নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, র্যাব যদি একদিন বলে যে রাতে আমরা বের হব না, র্যাব ক্যাম্পে থাকবে, নামাজ-রোজা করবে তাহলে ওই দিন এই দেশ সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে। কোনো মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারবে না। মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে। একটা সুশৃঙ্খল বাহিনী তাকে ধ্বংস করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই দেখতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই দেশে আমরা উন্নয়ন চাই। মানুষের কল্যাণে যদি রাজনীতি করতে না পারি তাহলে ওই রাজনীতির কোনো অর্থ নেই। যতদিন পদ্মা ব্রিজ থাকবে, মেট্রোরেল থাকবে ততদিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। ধন্যবাদ প্রস্তাবে বিএনপির হারুনুর রশীদ ঃ সকল দলের অংশগ্রহণে ‘নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু’ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপ শুরুর অনুরোধ করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ। ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনও বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রীকে বলবো আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আপনাকে আলোচনার টেবিলের দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে। আপনি আলোচনা শুরু করেন। নির্বাচন সকল দলের অংশগ্রহণে কীভাবে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করা যায়। নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। এর কোনও বিকল্প নেই। সরকারের সমালোচনা করে হারুন বলেন, স্বাস্থ্যের বেহাল দশা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো। করোনার সময়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এটা পুষিয়ে নিতে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শিক্ষা বিভাগ অটোপাস আর অটো ভর্তি দিয়ে চলছে। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস হচ্ছে। ঘটনার পর গুজব আর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে দায়সারা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দলীয়করণ করা হচ্ছে। মেধা তালিকায় থাকলেও ভিন্ন মতের কাউকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। সরকারের মেগা প্রকল্প নিয়ে অনেক কথা আছে। এখানে যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে সেখানে লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। বিএনপি’র এমপি বলেন, আন্তর্জাতিক মহল থেকে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে। বিচার-বহির্ভূত হত্যাকা- ও গুম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বিরোধী দলের নেতার বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে। সরকারের উচিত এটা এড়িয়ে না গিয়ে এর থেকে পরিত্রাণের পথ বের করা। তিনি বলেন, সিইসি বলছেন তিনি রাতের ভোট দেখেননি। একটি অপদার্থ ও মেরুদ-হীন নির্বাচন কমিশন। ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের আনুগত্যশীলদের দিয়ে ইসি গঠন হয়েছে বলেই তাদের স্বার্থ পরিপন্থী কোন কথা ইসি বলে না। ভোট হচ্ছে না। ভোট চুরি হচ্ছে তারপরও বলছে ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। বর্তমানে সংসদে থাকা সবগুলো দলই তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করেছে দাবি করে হারুনুর রশীদ বলেন, এই সংসদে যারা আছেন সকল দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছে। বিএনপি করেছে, আওয়ামী লীগ করেছে। জাতীয় পার্টিও একসময় করেছে। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের বিরোধীতা করছেন কেন? কারণ একটি-যদি রাতের আধারে ভোট করে ক্ষমতায় থাকা যায়। যদি বিনাভোটে ক্ষমতায় থাকা যায়। সেই উদ্দেশ্য সফল হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
×