ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কারখানা উড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ

গাজীপুরে ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ১৮:০৮, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

গাজীপুরে ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান অনিশ্চিত

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে কারখানা নির্মাণের দেড় বছর পরেও উৎপাদন কাজ শুরু করতে পারছে না হামজা অ্যাপারেলস লিঃ কারখানা। প্রতিপক্ষের নানা হুমকি ও ওই কারখানা উড়িয়ে দেওয়া এবং কারখানা মালিককে হত্যাসহ হয়রানীর প্রেক্ষিতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওই কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম। প্রতিপক্ষের দায়েরকৃত ৯টি মিথ্যা মামলা মাথায় নিয়ে আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন হামজা অ্যাপারেলস লিঃ কারখানার মালিক। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার হামজা অ্যাপারেলস লিঃ কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবুল কাশেম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ নিয়ে ২০২০ সালের জুন মাসে হামজা অ্যাপারেলস কারখানার নির্মাণ কাজ শেষ হয়। প্রায় দেড় বছর ধরে উৎপাদনের অপেক্ষায় রয়েছে এ কারখানা। যা চালু হলে প্রায় ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। অথচ মিথ্যা মামলা ও নানা হুমকির কারণে কারখানার উৎপাদান শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে না পারায় তাকে ব্যাংকের সুদ গুনতে হচ্ছে। এ কারখানার জমির বিপরীত পাশে রয়েছে প্রীতি গ্রুপ নামে একটি কোম্পানীর প্লট। ওই প্লটের মালিক (প্রীতি গ্রুপ) একে একে ১০টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে তাকে (হামজা অ্যাপারেলসের মালিক)। সেই সঙ্গে হামজা অ্যাপারেলসের মালিক ও সন্তানকে হত্যাসহ কারখানাটি উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে প্রতিপক্ষরা। সর্বোচ্চ আদালত থেকে মামলায় পরাজিত হয়েও নতুন করে একটির পর একটি মামলা দিয়ে যাচ্ছে প্রীতি গ্রুপ কর্তৃপক্ষ। হামজা অ্যাপারেলস কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ১৯৭৭ সালে পরিত্যাক্ত একটি রাস্তা তার জমি সংলগ্ন হওয়ায় স্থানীয় ভাওয়ালগড় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও গাজীপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বৈধভাবে ৬৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। বিনিময়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন তৈরী করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পছন্দ মতো অন্য দাগে ৬৮ শতাংশ জমি ২০২০ সালের ১২ মার্চ সরকার তথা ইউনিয়ন পরিষদকে কিনে দেওয়া হয়। ওই জমি রেজিষ্ট্রির ৫/৭ দিন পর প্রীতি গ্রুপ আদালতে ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন হামজা অ্যাপারেলসের বিরুদ্ধে। পরে দায়েরকৃত মামলা দু’টি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় উভয় মামলাই খারিজ করে দেন আদালত। এভাবে হামজা অ্যাপারেলসের ক্রয় করা জমি দখল করতে এবং জমির দলিল বাতিল করতে প্রীতি গ্রুপের লোকজন বেপরোয়া হয়ে উঠে। তারা একে একে ৯টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এরমধ্যে কয়েকটি মামলা উচ্চ আদালতে হামজা অ্যাপারেলসের পক্ষে রায় আসে। তারপরও প্রীতি গ্রুপ একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়েই চলছে। তিনি আরো বলেন, হামজা অ্যাপারেলস কারখানার পূর্ব-দক্ষিণে প্রীতি গ্রুপের খালি জমি রয়েছে। অথচ ওই জমিতে তাদের তিনটি কারখানা ও বাড়ি ঘর আছে, লোকজন বাসা-বাড়ি থেকে বের হতে পারছেনা, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ এবং তিনটি কারখানা থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা আয় করেন বলে নানা মিথ্যা তথ্য বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করতে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে বন বিভাগের জমি দখল করে বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘেরা প্রীতি গ্রুপের ওই জমিতে কোন প্রকার স্থাপনাই নেই। সেই জমি বর্তমানে ধান চাষ ও গবাদি পশুর চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে প্রীতি গ্রুপ। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মধ্যস্থতা করলেও পরে প্রীতি গ্রুপ তা মেনে নেয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, প্রীতি গ্রুপের মালিক সিআইপি এবং তাঁর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হওয়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে তার জীবননাশের এবং হামজা এ্যাপারেল্স উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
×