ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িল ফ্লাইওভার সংলগ্ন মেয়রের উপস্থিতিতে জলাধারের স্থাপনা উচ্ছেদ করল স্থানীয়রা

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

কুড়িল ফ্লাইওভার সংলগ্ন মেয়রের উপস্থিতিতে জলাধারের স্থাপনা উচ্ছেদ করল স্থানীয়রা

অনলাইন রিপোর্টার ॥ রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভার সংলগ্ন জলাধারের পাশে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে পুরো এলাকা স্লোগানে মুখরিত করে রেখেছেন তারা। এ জলাধারের জায়গা বরাদ্দ নিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল এবং শপিং কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য বিলবোর্ড টানিয়ে স্থাপনা গড়ে উঠছিল। এরই প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হয়েছেন স্থানীয়রা। তারা স্লোগানে স্লোগানে বলছেন— ‘আমরা জলাশয় ভরাট হতে দেব না।’ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) কুড়িল ফ্লাইওয়ার সংলগ্ন জলাধারের জায়গা পরিদর্শনে আসেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। জায়গাটি বাংলাদেশ রেলওয়ের হওয়ায় প্রথমেই মেয়র কল করেন রেলমন্ত্রীকে, পরে ফের ফোন করেন রেলের ডিজিকে। এ সময় ফোনে মেয়র বলেন, এটা তো জলাধার আপনারা কীভাবে এ জায়গা বরাদ্দ দিলেন? খিলক্ষেত, এয়ারপোর্ট রোড, নিকুঞ্জসহ আশপাশের সব এলাকার পানি এখানে জমা হয়। এটা যদি ভরাট করে পাঁচ তারকা হোটেল এবং শপিং কমপ্লেক্স হয়, তাহলে তো বর্ষায় আশপাশের এলাকা ডুবে যাবে। জলাধার দখল করে আমি কোনোভাবেই এটা এখানে হতে দেব না। রেলমন্ত্রী এবং রেলের ডিজির সঙ্গে মেয়রের এ কথোপকথন স্থানীয়রাও শুনছিলেন। ‘জলাধার দখল করে আমি কোনোভাবেই এটা এখানে হতে দেব না’— মেয়রের এ কথা শোনামাত্রই স্থানীয়রা সেখানে গড়ে ওঠা স্থাপনা ভাঙতে শুরু করেন। মুহূর্তেই অস্থায়ী স্থাপনার বেশকিছু অংশ ভেঙে ফেলেন তারা। আগে থেকেই তারা সেখানে স্লোগান দিচ্ছিলেন— ‘আমরা এখানে মাঠ চাই, পার্ক চাই, জলাধার নষ্ট হতে দেব না।’ জলাধারের জায়গায় বড় একটি বিলবোর্ড লাগানো ছিল। সেখানে লেখা, ‘সাইট ফর ফাইভ স্টার হোটেল অ্যান্ড শপিং কমপ্লেক্স - মিলিনিয়ান হোল্ডিং লিমিটেড।’ পরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বুলডোজার এসে সেটি গুড়িয়ে দেয়। সার্বিক বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, জলাশয় আমাদের খুব প্রয়োজন। এ জলাশয়কে ঘিরেই আমরা একটি প্ল্যান করেছি, এখানে আমরা একটি ওপেন স্পেস করে দেব। আশেপাশের সব এলাকার পানি এখানে এসে জমা হয়। এমন একটি জলাশয়ের জায়গা বাংলাদেশ রেলওয়ে পাঁচ তারকা হোটেল এবং শপিং মল করার জন্য কীভাবে বরাদ্দ দিল, এটা আমার বোধগম্য নয়। ১.৮৪ একর জমি, যেটা জলাশয় সেটা তারা কীভাবে বরাদ্দ দেয়? তিনি আরও বলেন, রেলওয়ের ডিজিকে জিজ্ঞেস করার পর উনি বললেন, স্যার এটা জলাশয়? আমার বিষয়টি জানা ছিল না। এখানে ভরাট করে স্থাপনা করা হলে বর্ষায় নিকুঞ্জ, খিলক্ষেত, এয়ারপোর্ট রোড তো তলিয়ে যাবে। তাই আমরা এটা কোনোভাবেই হতে দেব না। আইনি লড়াইসহ যা যা করার তা আমরা করব। এসব জলাধার দখল করা অন্যায়, আপনারা ঢাকা শহরটাকে আর শেষ করবেন না। অন্তত বরাদ্দ দেওয়ার আগে মাঠপর্যায়ে এসে দেখে যান। এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
×