ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাইডেনের হুঁশিয়ারি

পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে

প্রকাশিত: ২৩:৫৩, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে

পুতিনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি বাইডেনের। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে প্রচুর সৈন্য এনে জড়ো করছে রাশিয়া, এর প্রতিক্রিয়ায় ন্যাটো সামরিক জোট পূর্ব ইউরোপে আরও জাহাজ ও জঙ্গী বিমান মোতায়েন করে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে এবং তাদের বাহিনীগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে; এই পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার বিরল এ নিষেধাজ্ঞার হুমকি এলো বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রাশিয়া কোন আক্রমণের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে উল্টো অভিযোগ করে বলেছে, ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পদক্ষেপেই এ সঙ্কট শুরু হয়েছে। ইউক্রেনকে কখনই ন্যাটো জোটে নেয়া হবে না, এমন দাবিসহ পশ্চিমের কাছে নিরাপত্তা বিষয়ক বেশ কিছু নিশ্চয়তা চেয়েছে রাশিয়া। মস্কো সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনকে ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে একটি ‘বাফার জোন’ হিসেবে বিবেচনা করে। ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একাধিকবার আলোচনা হলেও তাতে সৃষ্ট উত্তেজনা কমেনি। এতদিন বাইডেন মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়ে এলেও এবার বলেছেন, পুতিন ব্যক্তিগতভাবে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারেন। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়া এক লাখ সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে বলে বিভিন্ন হিসাবে বলা হচ্ছে। রুশ সৈন্যরা প্রতিবেশী দেশটিতে অভিযান শুরু করলে সেটি ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় আক্রমণ’ হবে আর তা ‘বিশ্বকে পরিবর্তন করে দেবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাইডেন। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে সরাসরি পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন কিনা, মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘হ্যাঁঁ, আমি তেমনটিই দেখছি।’ বিদেশী নেতাদের ওপর সরাসরি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিরল হলেও নজিরবিহীন নয়। যারা এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছেন তাদের মধ্যে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও লিবিয়ার প্রয়াত সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি উল্লেখযোগ্য। মঙ্গলবার একটি মার্কিন বিমান সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধ উপকরণ নিয়ে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে নেমেছে। এটি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেয়ার ২০ কোটি ডলারের সামরিক প্যাকেজের তৃতীয় চালান। এর পাশাপাশি ইউরোপে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মার্কিন সেনাকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে পেন্টাগন আর প্রয়োজন দেখা দিলে ন্যাটোর পূর্বাংশের বাহিনীকে মোতায়েন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তারা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে এসব লক্ষ্য করছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া এবং ইউক্রেনকে ঘিরে উত্তেজনা উস্কে দেয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করেছে। রাশিয়ার জন্য লিখিত প্রস্তাবনা তৈরি করছে ন্যাটো ॥ ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন নিয়ে উত্তেজনা বাড়ছেই। এর মধ্যেই এই সপ্তাহের শেষের দিকে ক্রেমলিনের কাছে একটি লিখিত প্রস্তাবনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাটো। মঙ্গলবার সিএনএন-এর সঙ্গে আলাপকালে ন্যাটো মহাসচিব জিন্স স্টোলটেনবার্গ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রূপরেখা দেব যে, আমরা বসতে প্রস্তুত। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, নিরস্ত্রীকরণ, সামরিক কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা, ঝুঁকি হ্রাস প্রক্রিয়া এবং ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য প্রাসঙ্গিক অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য ন্যাটো প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আলোচনার টেবিলে বসে রাশিয়ার উদ্বেগের কথা শুনতে প্রস্তুত রয়েছি।’ জিন্স স্টোলটেনবার্গ বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কটে এখনও কূটনৈতিক উপায় রয়েছে। কিন্তু তার জন্য রাশিয়াকে উত্তেজনা প্রশমন করে, সদিচ্ছা নিয়ে ন্যাটো এবং ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনায় যুক্ত হতে হবে। তিনি বলেন, ন্যাটো ইউক্রেনে কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করবে না। তবে সব মিত্রদের, বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপের মিত্রদের রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর। ন্যাটো মহাসচিব এমন সময়ে এ মন্তব্য করলেন যার একদিন আগেই খবর এসেছে, পশ্চিমা এই সামরিক জোটের কিছু সদস্য দেশ পূর্ব ইউরোপে অতিরিক্ত জাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে। অন্যদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
×