ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীর প্রতিদিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

প্রকাশিত: ১৫:১১, ২৬ জানুয়ারি ২০২২

রাজশাহীর প্রতিদিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ একদিকে শীতজনিত রোগের প্রকোপ অন্যদিকে করোনার সংক্রমন এ নিয়ে রাজশাহীতে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে নানা রোগবালাই। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনার সংক্রমণ, সঙ্গে যোগ হয়েছে শীতজনিত রোগ-বালাই। এ অবস্থায় করোনা রোগী বাড়লেও হাসপাতালে চাপ কম। অধিকাংশই চিকিৎসা নিচ্ছেন পরীক্ষা ছাড়াই বাড়িতে। তবে যাদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে তারাই ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। আর হাসপাতালে করোনা রোগীর চেয়ে এখন চাপ বেড়েছে শীতজনিত রোগে ভোগা মানুষের। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, রাজশাহীর দুইটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে জেলায় টানা তিনদিন ধরে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার ৫০ শতাংশের উপরে রয়েছে। গত মঙ্গলবার এ জেলায় ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ নমুনায় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। তবে বিভাগের রিপোর্ট তা ৬০ শতাংশের উপরে। র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষাসহ জেলায় করোনা শনাক্তের হার এখন ৬৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এদিকে বুধবার সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মঙ্গলবার রাজশাহীর দুইটি পিসিআর ল্যাবে ৫৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩৪৪ নমুনায় মিলেছে করোনাভাইরাস। নমুনা পরীক্ষার হিসেবে শনাক্তের হার ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। শামীম ইয়াজদানী জানান, মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে ১৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত হয় ১১৭ জনের শরীরে। একই সময়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৪০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনা ধরা পড়ে ২২৭ জনের শরীরে। এর আগের দিন সোমবার রাজশাহীর দুইটি ল্যাবে ৫৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। যা শনাক্তের হার ৫৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আর গত রবিবার রাজশাহী জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৬০ দশমিক ৪৯। শামীম ইয়াজদানী জানান, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি হয়েছেন ৮ জন। একইসময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৮ জন রোগী। হাসপাতালের ১০৪ শয্যার করোনা ইউনিটে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি রয়েছে ৪৯ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৯ রোগীর মধ্যে রাজশাহীর ২৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬ জন, নওগাঁর ৩ জন, নাটোরের ২ জন, পাবনার ৩ জন, কুষ্টিয়ার ৩ জন, সিরাজগঞ্জের একজন, ঝিনাইদহের একজন এবং মেহেরপুরের একজন রোগী। বুধবার দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (রোগনিয়ন্ত্রণ) নাজমা আক্তার স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, এদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘন্টায় রাজশাহী জেলায় র্যাপিড এন্টিজেনসহ ৬৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৪৩৬ জনের। শনাক্তের হার ৬৭ দশমিক ৩৯ শাতংশ। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, রাজশাহীতে এখন ঘরে ঘরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগি রয়েছে। তারা বাড়িতে থেকেই স্বাভাবিক নিয়মে জ¦র শর্দি কাশির চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে ভালও হয়ে যাচ্ছেন তারা। এ জন্য হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ কম। তবে যাদের অবস্থার অবনতি ঘটছে তারাই শুধু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এদের মধ্যে টিকা না নেয়ার সংখ্যায় বেশী। এদিকে রাজশাহীতে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে অন্য সাধারণ রোগীর চাইতে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট, খিচুনির মতো রোগীর সংখ্যাই বেশি। এসব ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের জন্য বেডের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. মৃণাল কান্তি দাস জানান, শীত জনিত রোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি-কাশি, জন্ডিস, খিচুনি ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদর মধ্যে একটি বড় অংশই শিশু ও নারী।
×