ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বন্দর কর্তৃপক্ষই অবৈধ স্থাপনা ধরে রাখছে কর্ণফুলীতে

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ২৬ জানুয়ারি ২০২২

বন্দর কর্তৃপক্ষই অবৈধ স্থাপনা ধরে রাখছে কর্ণফুলীতে

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম বন্দর বাঁচাতেই প্রধানত কর্ণফুলী রক্ষার আন্দোলন। কিন্তু, বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেই ইজারা দিয়ে মাছ বাজার বরফকলসহ অন্যান্য অবৈধ স্থাপনা গড়তে সহযোগিতা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তথ্য গোপন করে কর্ণফুলীতে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা ধরে রাখার তৎপরতাও চলছে বলে অভিযোগ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর। এ ছাড়া কর্ণফুলী রক্ষায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক পরিচালিত স্ট্র্যাটেজিক মাস্টার প্ল্যান ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কর্ণফুলী রক্ষায় তৈরি মাস্টার প্ল্যানের তথ্য গোপন করে কর্ণফুলী নদীর অংশকে নিজেদের জমি বলে দাবি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। মঙ্গলবার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় প্রদত্ত আবেদন নিষ্পত্তি শুনানি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রাজস্ব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরীর কার্যালয়ে অুনষ্ঠিত হয়। এতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন সহকারী কমিশনার (এনডিসি) মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুমা জান্নাত, বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষে সিনিয়র সহকারী কমিশনার রক্তিম চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে এ্যাস্টেট শাখার এ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন। শুনানিতে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের পক্ষে সভাপতি চৌধুরী ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় বন্দর কর্র্তৃপক্ষ ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক যৌথভাবে গঠিত স্ট্র্যাটেজিক মাস্টার প্ল্যান ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তৈরি করা মাস্টার প্ল্যানের কপি আগামী দুইদিনের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। শুনানিকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষে এ্যাডভোকেট মনজিল মোর্শেদ ২০১০ সালে দায়েরকৃত মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালে পরিচালিত সার্ভে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে বর্তমান মাছ বাজার ও ভেড়া মার্কেট এলাকায় বেদখল স্থানকে নদী উল্লেখ করে অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করার সার্ভেতে চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভেয়ার ও স্টেট বিভাগের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর পরিলক্ষিত হয়। চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের পক্ষে ৮৮৬ মিটার নদীকে ভরাট করে কীভাবে ৪১০ মিটার করা হয়েছে- সে সম্পর্কিত সার্ভে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে জীবন্তসত্তা হিসেবে কর্ণফুলীকে হত্যা করা হচ্ছে বলে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। এই প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি চৌধুরী ফরিদ বলেন, আমরা যথাযথ তথ্য উপস্থাপন করে নদী দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন করেছি। তিনি বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণ রীতিমতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ, যা বন্দর কর্তৃক করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের জানানো হয়। কারও অধিকতর তথ্য-উপাত্ত প্রদান করার থাকলে তা আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে উপস্থাপন করার আদেশ দিয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রাজস্ব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী শুনানি শেষ করেন।
×