ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন একনেকে

প্রকাশিত: ২২:৫৪, ২৬ জানুয়ারি ২০২২

সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন একনেকে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দশটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ৩ হাজার ৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ হাজার ৫৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিফ্রিং করে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ এবং আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নেত্রকোনা-বিশিউড়া-ঈশ্বরগঞ্জ সড়ক প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২২০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। ১৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ১৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ ও ৪টি পাসপোর্ট অফিস ভবনের উর্ধমুখী সম্প্রসারণ করা হবে। আমরা চাই দেশের মানুষ পাসপোর্টের জন্য ভাল সুবিধা যেন পান। বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণকে নিকটতম সুবিধাজনক স্থান থেকে উন্নতমানের পাসপোর্ট সেবা দেয়া হবে। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবন নির্মাণ ও সিলেট, চট্টগ্রাম (মনসুরাবাদ), কক্সবাজার, যশোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবনের উর্ধমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে সর্বমোট ২১টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপদ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সেবা দেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। শেখ হাসিনা সেনানিবাস বরিশাল স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা। ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। মন্ত্রী জানান, ক্লাইমেট স্মার্ট এ্যাগ্রিকালচার এ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের (সিএসএডব্লিউএমপি) আওতায় সিলেট অঞ্চলে কৃষি উন্নয়নও করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় সিলেটের হাওড়াঞ্চলের কথাও উঠে আসে। একনেকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সিলেট অঞ্চলে পতিত জমি ব্যবহার করে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার ও শস্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষকের আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং পুষ্টি ও সামাজিক ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুরের এপ্রোচ সড়ক প্রশস্তকরণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২ লাখ টাকা। ফ্লাড এ্যান্ড রিভারব্যাংক ইরিশন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮০৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। ইউরিয়া ফরমালডিহাইড-৮৫ (ইউএফ-৮৫) প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের আলোচনার সময় একনেকের সদস্যরা অভিমত দেন, দেশীয় কারখানা স্থাপন করার পাশাপাশি, যেসব দেশে কম মূল্যে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায়, সেখানে আমরা গিয়ে ইউরিয়া কারখানা স্থাপন করতে পারি, যা অধিক লাভজনক হতে পারে। ‘তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ভাল হয়। অবশ্যই আমরা করতে পারি, প্রাইভেট সেক্টরও বাইরে কারখানা করতে পারে। তবে তার আগে দেশে পর্যাপ্ত কারখানা লাগবে। কারণ নিজেদের যদি সংস্থান না থাকে, কখন কোন কারণে তারা যদি কারখানা বন্ধ করে দেয়, তখন আমরা পাব কোথায়?’ প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ইনভেস্টররা যদি বাইরে যেতে চায় যাক, কারখানা স্থাপন করে ইউরিয়া আনতে চায় আনুক। আমরাও দেশে সার কারখানা তৈরি করব।’
×