ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভেলাবাড়ি ইউনিয়নে ভিক্ষুক পূর্নাবাসনের গরু ও নগদ অর্থ বিতরণে হরিলুট

প্রকাশিত: ১৯:৪৩, ২৫ জানুয়ারি ২০২২

ভেলাবাড়ি ইউনিয়নে ভিক্ষুক পূর্নাবাসনের গরু ও নগদ অর্থ বিতরণে হরিলুট

নিজস্ব সংবাদদাতা,লালমনিরহাট ॥ জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নে ভিক্ষুক পূর্নাবাসনে ৬৬টি জনকে গরুর বাছুর ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভেলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিতরণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, প্রতি জন ভিক্ষুককে পূর্ণাবাসনে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই বরাদ্দের টাকা হতে একটি গরুর বাছুর, নগদ ৪ হাজার টাকা, ২৫ কেজি চাল, ডাল, আলু ও গো খাদ্য দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল, সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়, জেলা প্রশাসন, জেলার প্রতিটি সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তা - কর্মচারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক -কর্মচারির এক দিনের বেতনের টাকা ভিক্ষুব পূর্ণাবাসনে দান করেছে। তা দিয়ে তহবিল গঠন করে পুরো জেলায় ভিক্ষুক পূর্নাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে প্রটি উপজেলার দুইটি করে ইউনিয়ন ভিক্ষুক মুক্ত করা হবে। ভিক্ষুক পূর্নাবাসনে গরুর বাছুর বিতরণ ও নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর । এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস ফারুক, ইউএনও গোলাম ছাওয়ার, এসিল্যান্ড দিলশাদ জাহান, ভেলাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুর আলম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম মানিক, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ রওশন আলী প্রমুখ। এদিকে এই গরুর বাছুর বিতরণে ব্যাপক অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে, সকালে জেলা প্রশাসক গিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি না থাকায় ফিরে আসে। পরে দুপুরে পূনরায় যায়। ৬৬ টি জনের মধ্যে ৪৭ জনকে গরু ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। বাকি ১৭ জন রহস্যজনক কারণে উপস্থিত নেই। ৬৬টি জনকে গরু বিতরণ করার কথা অথচ সেখানে ৩৩ টি গরু মাঠে দেখা যায়। প্রথমে ৩৩ টি গরু বিতরণ করার পরে পূনরায় প্রায় এক ঘন্টা পর বাকি ৩৩ টি গরু মাঠে আনা হয়। সেখানে অভিযোগ উঠেছে প্রথমে বিতরণকৃত গরু গুলি রাস্তায় ফিরত নিয়ে এসে পূনরায় দ্বিতীয় ধাপে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গরু বিতরণের তালিকায় মৃত মানুষের নাম আছে। ভিক্ষুক বৃদ্ধা আইয়ুব আলীর নামে বরাদ্দকৃত গরু ও নগদ অর্থ কে বা কাহারা নিয়ে গেছে। এমন অভিযোগ বৃদ্ধা আইয়ুব আলী উপস্থিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ করেন। ভিক্ষুক নয় এমন কয়েক জনকে ভিক্ষুক পূর্নাবাসনের গরু নেয়ার হয়েছে। ২৫ হাজার টাকা মূল্যের গরু বিতরণের কথা থাকলেও দেয়া হয়েছে ৩/৪ মাস বয়সি ছোট ছোট বাছুর। যার মূল্য ১০হতে ১২ হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। এভাবে ভিক্ষুক পূর্নাবাসনের অর্থ হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। শেষ পর্যন্ত প্রায় ১৭টি গরু ও নগদ অর্থ বিতরণ করার মত কাউকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সমাজ সেবা কর্মকর্তা জানান, বাড়ি বাড়ি দেয়া হবে। অনিয়ম বিষয়ে বলেন, ইউএনও স্যার জানে। ভিক্ষুক পূর্নাবাসনের টাকা হরিলুটের ঘটনায় উপস্থিত সকলে হতবাক। এদিকে জেলা প্রশাসক বলেন, ভিক্ষুক পূর্নাবাসনে জনপ্রতি বরাদ্দ ২৫ হাজার টাকা। আবার সমাজ সেবা কর্মকর্তা বলেন, ৩০ হাজার টাকা। এ নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা প্রশাসক অনুষ্ঠানে নানা অব্যবস্থাপনায় মনক্ষুন্ন হয়ে চলে আসেন।
×