ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কুমার নদে বিলীন মন্দিরসহ ১১ স্থাপনা

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ২৫ জানুয়ারি ২০২২

কুমার নদে বিলীন মন্দিরসহ ১১ স্থাপনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর ॥ ফরিদপুরের নগরকান্দায় ভাঙ্গনের কবলে পড়ে একটি মন্দিরসহ ১১টি স্থাপনা কুমার নদে ধসে পড়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে নগরকান্দা থানা, সরকারী এমএন একাডেমির দুটি নতুন ভবন। নতুন করে ভাঙ্গনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই এলাকায় মেহগনি গাছ ও বাঁশ দিয়ে ভাঙ্গন এলাকায় পাইলিং করছে। ফলে বর্তমানে ভাঙ্গনরোধ হলেও ভাঙ্গনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি, নগরকান্দা বাজার ও সাব-রেজিস্ট্রার ভবন। সোমবার বিকেলে এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত শ্রমিকরা ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় পাইলিং করছে। নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র নিমাই সরকার সোমবার জানান, ভাঙ্গনকবলিত পরিবারগুলোকে আর্থিক সাহায্য দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেঙ্গেপড়া মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণের জন্য পৌরসভা সাহায্য করছে। গত ১৭ জানুয়ারি সোমবার বেলা ১১টার দিক থেকে এ ভাঙ্গন শুরু হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার গাঙ্গজগদিয়া এলাকায় অবস্থিত নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পেছন থেকে শুরু করে পশ্চিমে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস পর্যন্ত ২৩০ মিটারব্যাপী এ ভাঙ্গন চলছে। নগরকান্দা পৌরসভার পাঁচ ও সাত নম্বর ওয়ার্ডের অংশ বিশেষে এ ভাঙ্গন চলছে। ভাঙ্গনের কারণে ওই এলাকার বাসিন্দারা চরম ভীতিকর অবস্থার মধ্যে রয়েছে। নদে ইতোমধ্যে গাঙ্গজগদিয়া মহল্লায় অবস্থিত গঙ্গা মন্দির, উজ্জল মালো, নিত্য মালো, নীলকমল মালো, সুব্রত মালো, বিশ্বেশ্বর মালো, আনন্দ মালো, সঞ্জয় পাল, কুটিশ্বর মালো, উজ্জল বিশ্বাস ও মোকাররম হোসেনের ঘরগুলো ধসে গেছে। এর মধ্যে গঙ্গা মন্দির ও উজ্জল মালোর বাড়ি পাকা। বাকিগুলো সেমিপাকা। উজ্জল মালো অভিযোগ করে বলেন, দেড় বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকায় খনন কাজ করে। ওই সময় খননযন্ত্র বসিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি মাটি তোলায় আমাদের এ সর্বনাশ হয়েছে। ওই সময় এ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের আমরা বাধা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের কোন কথায় কর্ণপাত করা হয়নি। গত আগস্ট মাসে নদের ওই অংশে একটি খননযন্ত্র বাসিয়ে আশপাশের কয়েকটি পুকুর ভরাট করা হয়। প্রায় এক মাস ধরে এ কর্মযজ্ঞ চলে। নদ থেকে অবৈধভাবে মাটি তোলায় এ সমস্যা হয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, নদী খনন করার নামে এরা বালির ব্যবসা করছেন। গভীর করে নদী খনন করে যেভাবে বালি তুলে নিচ্ছে, এ কারণে নদীর পাড় ভেঙ্গে পড়ছে। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ২৩০ মিটারজুড়ে এ ভাঙ্গণ চলছে। তবে প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনের পরিধি বাড়ছে। নদ খনননের জন্য পাড় দেবে গেলে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে নদের গভীরতা আগের চেয়ে এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত বেড়েছে, তাতে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানির চাপও বাড়ছে। গাব গাছ, বাঁশ দিয়ে ওই এলাকায় ভাঙ্গন প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং বুধবার থেকে এ কাজ শুরু হয়েছে।
×