ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষা আইন চূড়ান্ত শীঘ্রই সংসদে উঠবে ॥ শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ২৫ জানুয়ারি ২০২২

শিক্ষা আইন চূড়ান্ত শীঘ্রই সংসদে উঠবে ॥ শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, ‘শিক্ষা আইন’ চূড়ান্ত করার কাজ শেষ। আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা গেছে। এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের পর তা শীঘ্রই সংসদে উঠবে। এতে করে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় যাবত কাক্সিক্ষত এ আইনটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনবে বলে আমরা মনে করছি। সোমবার রাজধানীর ব্যানবেইস ভবনের বিএনসিইউ এর সভাকক্ষে ‘পরিবর্তনশীল গতিপথ, রূপান্তরিত শিক্ষা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০১০ সালে আমরা একটি জাতীয় শিক্ষানীতি পেয়েছিলাম। এই শিক্ষানীতি প্রস্তুত করা হয়েছিল সংবিধানের চারটি মূলনীতি ও ১৯৭৪ সালের কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের ওপর ভিত্তি করে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শনের বিভিন্ন দিকের একটি সমন্বিত প্রতিফলন ঘটেছিল। এই শিক্ষানীতিতে সবার জন্য বৈষম্যহীন গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়, একই সঙ্গে যুগোপযোগী বিজ্ঞানমনস্ক একটি আধুনিক জাতি তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে একটি ‘সমন্বিত শিক্ষা আইন’ প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়, যার মাধ্যমে শিক্ষানীতির মূল বিষয়গুলো বাস্তবায়নের আইনী কাঠামো তৈরি হবে। সরকার ২০১১ সালে এই শিক্ষা আইন তৈরির কাজ শুরু করে। যা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এর জন্য হচ্ছে নতুন কারিকুলাম। মন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষাকে রূপান্তরিত করতে হবে। কারণ বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। নিত্য নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে। তাই আমরাও এগিয়ে যাব। জাতির পিতার যে শিক্ষানীতিকে সামনে রেখে এগিয়ে যাব। আমরা সবাইকে মান সম্মত শিক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিবন্ধীদের জন্য কারিগরি নির্ভর শিক্ষাকাঠামো তৈরি করছি। আমরা চেষ্টা করছি যেন মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা থেকে কেউ বাদ না যায়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী থেকে শুরু করে দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দাদেরও শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করছি। সবাই মিলে চেষ্টা করলে নিশ্চয় তা বাস্তবায়ন সম্ভব। আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন করোনার কারণে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এক অসামান্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এবং আমরা সকলেই সর্বোতভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করছি। সবার সমন্বিত চেষ্টায় এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি। এ সময় তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবসে সকল শিক্ষকদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভালবাসা জানাচ্ছি। প্রতিটি শিক্ষার্থী আমাদের সন্তান। এক্ষেত্রে কোথাও কোন দূরত্ব তৈরি হওয়ার সুযোগ নেই। যদি তৈরি হয় তাহলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে ফেলতে হবে। বহিরাগত কাউকে সুযোগ দেয়া যাবে না। দিবসটি পালন উপলক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন (বিএনসিইউ) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের মোঃ আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মোঃ হাসিবুল আলম, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি বিয়াট্রিস কালদুন এবং বিএনসিইউ এর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মোঃ সোহেল ইমাম খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব ও বিএনসিইউর মহাসচিব আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে এসময় মোঃ জাকির হোসেন বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী শিখন এবং শিক্ষা কার্যক্রম এক নজীরবিহীন বিপর্যয়ের মুখোমুখি।
×