ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাবি শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ফরিদ উদ্দিনের

শাবি ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত

প্রকাশিত: ২৩:১৬, ২৫ জানুয়ারি ২০২২

শাবি ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। নিজ বাসভবনে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছেন উপাচার্য। এই ইস্যুতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রথম দফা আলোচনায় সফলতা না আসায় বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। অনশনে অনড় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করছেন। রবিবার সন্ধ্যায় উপাচার্য ভবনে বিদ্যুত ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে রাতে বিদ্যুতবিহীন থাকতে হয়নি উপাচার্যকে। জেনারেটরের সাহায্যে আলো ও পানির ব্যবস্থা চালু ছিল। উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সরকারের উচ্চমহলের সঙ্গে আলোচনার অপেক্ষায় আছেন, তবে তারা অনশন ভাঙবেন না। সোমবার দুপুর ১টায় প্রেস ব্রিফিং করে এমনটাই জানালেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রী বা তার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি। আমাদের বলা হয়েছিল অনশন ভেঙ্গে আলোচনায় বসতে, কিন্তু আমরা অনশন ভাঙব না। এই অবস্থায় আলোচনা করতে চাই। গভীর রাত পর্যন্ত উপাচার্য ভবনে ছিলেন শাবির কর্মকর্তা এ্যাসোসিয়েশনের এক শীর্ষ নেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকালে তিনি জানান, রবিবার বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরই উপাচার্য ভবনে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে পানিরও ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে রবিবার রাতে তাকে বিদ্যুতহীন থাকতে হয়নি। ওই কর্মকর্তা বলেন, উনার বাসার জেনারেটরে তেলের মজুদ পর্যাপ্ত নয়, যা আছে তা দিয়ে আজকের দিন পর্যন্ত চলতে পারে। এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তাছাড়া আন্দোলনকারীরা বাইরে থেকে কাউকে ভেতরে ঢুকতেও দিচ্ছে না। ফলে তেল শেষ হলে বাইরে থেকে নিয়ে যাওয়া যাবে না। উপাচার্য সুস্থ আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছুটা দুশ্চিন্তায় তো আছেনই। তাছাড়া তার হার্টের অসুখও আছে।’ পদত্যাগ দাবির বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’ এদিকে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এভাবেই উপাচার্যকে অবরুদ্ধ রাখা হবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রবিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের জরুরী পরিষেবাগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সরকারের উচ্চমহলের সঙ্গে আলোচনার অপেক্ষায় আছেন, তবে তারা ভাঙবেন না অনশন। সোমবার দুপুর ১টায় প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রী বা তাঁর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি। আমাদের বলা হয়েছিল অনশন ভেঙ্গে আলোচনায় বসতে, কিন্তু আমরা অনশন ভাঙব না। এই অবস্থায় আলোচনা করতে চাই। প্রেস ব্রিফিংকালে আন্দোলনকারীরা আরও জানান, অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থা সময় সময় খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে। হাসপাতালে মোট ১৯ জন ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ৪ জনের শারীরিক অবস্থা একটু ভাল হয়ে যাওয়ায় হাসপাতাল থেকে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে অনশনে যোগ দিয়েছেন। হাসপাতালে যারা আছেন তারাও কিন্তু অনশন পালন করছেন। এখন অনশনে আছেন মোট ২৩ জন আর সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অনশন করছেন ১৩ জন। প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, অনেক পত্রিকায় লেখা হচ্ছে- আমরা ভিসি বাসভবনের পানি, গ্যাস ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। আসলে তথ্যটি ঠিক নয়, আমরা শুধু বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। শাবিপ্রবির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত বুধবার থেকে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রথমে ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসলেও একজনের বাবার অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি বাড়ি চলে যান। পরে শনিবার ও রবিবার আগের ২৩ জনের সঙ্গে আরও ৫ শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন। শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু হয় ১৩ জানুয়ারি দিনগত মধ্যরাতে। ওই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ’ ছাত্রী। এদিকে শাবি শিক্ষার্থীদের কাছে বারবার আওয়ামী লীগে শীর্ষ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ শিক্ষামন্ত্রীর বার্তা নিয়ে বারবার গেলেও তারা ভাঙ্গেননি অনশন। গতকাল রবিবার শাবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির উদ্দেশে বলেন, তাদের মূল দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ। এই দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না। তবে শিক্ষামন্ত্রীর ভার্চুয়ালি আলোচনা করতে আগ্রহী তার। উপাচার্য ইস্যুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শনিবার গভীর রাতে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না এলেও দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। দীপু মনি আশ্বস্ত করেন, লিখিত দাবি পেলে সেগুলো সমাধানে উদ্যোগ নেবে সরকার। এর আগে শনিবার রাতে ঢাকায় নিজ বাসভবনে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় তিনি জানান, প্রয়োজনে তার প্রতিনিধিদল শাবিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীরা যখন কথা বলতে রাজি হবে, তখনই প্রতিনিধি যেতে পারবে। পারিবারিক কারণে এখন তিনি সিলেটে যেতে পারছেন না। ‘সিকিউরিটি চেকিংয়ে শিক্ষার্থীরা ॥ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এবার ‘সিকিউরিটি চেকিংয়ে’ নেমেছেন। শাবির মূল ফটকে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশরত প্রত্যেকের আইডি, নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আইডি কার্ড (পরিচয়পত্র) চেক করছেন তারা। সোমবার সকাল থেকে এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, শাবির মূল ফটকের ঠিক ভেতরে আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী ছোট্ট একটি চেয়ার ও একটি টেবিল নিয়ে অবস্থান করছেন। টেবিলের মধ্যে খাতা ও কলম রাখা আছে। এই খাতায় ক্যাম্পাসে প্রবেশকারী প্রত্যেকের নাম-পরিচয় লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। শাবির কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ছাড়াও সাংবাদিকদের নাম-পরিচয়ও লিখে রাখা হচ্ছে। একইসঙ্গে সবার আইডি কার্ডও চেক করে দেখা হচ্ছে। এমনকি শিক্ষকদেরও ছাড় দেয়া হচ্ছে না। তাদের আইডি কার্ড চেক করা ছাড়াও পরিচয়পত্রও দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এক শিক্ষককে ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় নাম-পরিচয় লিখে যেতে বলেন শিক্ষার্থীরা। তখন শিক্ষককে বলতে শোনা যায়, ‘এই জিনিসটা দিয়ে আপনারা (শিক্ষার্থী) কী করবেন সেটা আগে আমাকে বলেন? শিক্ষার্থীরা জানান, বাইরের কেউ বা পরিচয়হীন কেউ যাতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারেন, সেজন্য এটা করা হচ্ছে। তখন শিক্ষক বলেন, ‘সবচেয়ে ভাল হতো সিকিউরিটি গার্ড যদি বাড়তি থাকত... এই শিক্ষক এও বলেন, ‘আমার সন্তানেরা (শিক্ষার্থীরা) এ ধরনের কাজ করবে, আমি কল্পনাও করতে পারিনি।’ তিনি ‘এগুলো ঠিক না’ বলেও মন্তব্য করেন। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান ॥ এদিকে আন্দোলনকারীরা সোমবার সকাল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তার বাসা ঘিরে রাখা হয়েছে। শুধু পুলিশ সদস্য ছাড়া আর কাউকে তার বাসায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। শাবির গোলচত্বর শিক্ষার্থীদের অন্যতম আড্ডাস্থল। প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা এখানে জমিয়ে আড্ডা দেন। বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে এখানে বসে। শিক্ষার্থীর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন ॥ উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশনরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহীন শাহরিয়ার রাতুলের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহীনের অনশনের দ্বিতীয় দিন থেকে থেমে থেমে পেটব্যথা হচ্ছিল। গত রবিবার বিকেলে হঠাৎ পেটব্যথা বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নেয়া হয়। এ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়লে রাত পৌনে ১১টার দিকে তার অস্ত্রোপচার হয়। অবরুদ্ধ হয়ে আছেন উপাচার্য ॥ গতকাল বিকেল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে মানবদেয়াল তৈরি করে রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছেন উপাচার্য। সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুত সংযোগ। এতে ইন্টারনেটের সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উপাচার্যের বাসভবনে পুলিশ সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে যাতায়াতের সড়কে শিক্ষার্থীরা রাতভর অবস্থান করছিলেন। তবে বিদ্যুতবিহীন থাকতে হয়নি তাকে, বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জেনারেটরের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। জাবি ছাত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য শাবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। সোমবার বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের মুঠোফোনে কল করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এ সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান তিনি। তবে ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, তার বক্তব্য সম্পাদনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবাই আহত হয়েছেন। তিনি বিষয়টি অনুধাবন করছেন। তিনি আশা করছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদার ও প্রগতিশীল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এখন আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে ভিসিকে বলতে শোনা যায়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের সহজে কেউ বউ হিসেবে নিতে চায় না। এ মন্তব্যের প্রতিবাদে গত বুধবার ফরিদ উদ্দিন আহমেদের কুশপুতুল দাহ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ পৃথক বিবৃতিতে ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। এরপর গত শনিবার বিকেলে ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে প্রতীকী অনশন এবং মধ্যরাতে মশালমিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্রীরা। এ মন্তব্যের প্রতিবাদে গত বুধবার ফরিদ উদ্দিন আহমেদের কুশপুতুল দাহ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ পৃথক বিবৃতিতে ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। এরপর গত শনিবার বিকেলে ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে প্রতীকী অনশন এবং মধ্যরাতে মশাল মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্রীরা। জাবি সংবাদদাতা জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রীদের নিয়ে করা ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সোমবার বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটে তিনি জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কাছে ফোন করে ক্ষমা চান। জাবি জনসংযোগ অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। কাউন্সিলরদের খাবার ফিরিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা ॥ আন্দোলনের ১১তম দিনে শিক্ষার্থী ও অবরুদ্ধ উপাচার্যের জন্য সোমবার বেলা ২টায় খাবার নিয়ে যান সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ইলিয়াছুর রহমান ও ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মখলিছুর রহমান কামরান। কিন্তু সে খাবার ফিরিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও সিসিকের দুই কাউন্সিলরকে উপাচার্যের বাসবভনে খাবার নিয়ে ঢুকতে দেননি তারা, এমনকি দেখাও করতে দেননি ভিসির সঙ্গে। পরে সেই খাবার ক্যাম্পাসের বাইরে গরিব ও পথশিশুদের মাঝে বিলিয়ে দেন কাউন্সিলর ইলিয়াছ ও কামরান। ভিসিকে খাবার দিতে পারেননি প্রক্টর ॥ খাবার নিয়ে অবরুদ্ধ ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবন পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এর আগেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে খাবর নিয়ে ফিরে যেতে হয় তাদের। সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে শিক্ষকদের একটি দল খাবার নিয়ে প্রধান ফটক পর্যন্ত যান । কিন্তু শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ফিরে যেতে হয় প্রক্টরসহ বাকি শিক্ষকদের। শাবিতে ফের মশাল মিছিল ॥ এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুরো ক্যাম্পাসে ফের মশাল মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আর্থিক লেনদেনের ছয়টি এ্যাকাউনন্ট বন্ধ ॥ উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আর্থিক লেনদেনের ছয়টি এ্যাকাউনন্ট বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সন্ধ্যায় এসব এ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বরিশালে মশাল মিছিল ॥ শাবিপ্রবির ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বরিশালে মশাল মিছিল করেছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী। সোমবার দিনগত রাতে নগরীর নাজির মহল্লা এলাকা থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদমিনার চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
×