ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হ্যাটট্রিক শিরোপায় চোখ বসুন্ধরা কিংসের

প্রকাশিত: ০০:৪৪, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

হ্যাটট্রিক শিরোপায় চোখ বসুন্ধরা কিংসের

রুমেল খান ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে এর আগে হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতেছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে আবাহনী (তখন নাম ছিল আবাহনী ক্রীড়াচক্র) এবং ১৯৮৬, ১৯৮৭ ও ১৯৮৮ সালে মোহামেডান এই কীর্তি গড়ে। তবে পাকিস্তান আমলে সর্বপ্রথম এই কীর্তির সূচনা করে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব। তারা শুধু হ্যাটট্রিকই নয়, টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে তাক লাগিয়ে দেয় (১৯৫৩-১৯৫৬ পর্যন্ত)। আবাহনী ও মোহামেডানের পরে এই কীর্তি প্রায় ছুঁয়েই ফেলেছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব (২০০৪ ও ২০০৫)। পরবর্তীতে পেশাদার লিগ শুরু হলে আবাহনীই প্রথম দল হিসেবে আবারও হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয় (২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯)। তাদের এই কীর্তি অল্পের জন্য স্পর্শ করতে পারেনি শেখ জামাল ধানম-ি (২০১৪ ও ২০১৫)। তবে তারা না পারলেও আরেকটি দল আছে, যারা চেষ্টা করলে এবার সেই কীর্তির সমকক্ষতা অর্জন করতে পারবে। তারা হচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। ২০১৮-১৯ এবং ২০২০-২১ মৌসুমে তারা টানা দু’বার শিরোপা জিতেছিল (মাঝে অবশ্য ২০১৯-২০ মৌসুমের লীগ পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়েছিল মহামারী কোভিডের কারণে)। এবারের নতুন মৌসুমের প্রথম দুটি ট্রফিই জিতে নিয়েছে ঢাকা আবাহনী। স্বাধীনতা কাপে বসুন্ধরা কিংসকে এবং ফেডারেশন কাপে রহমতগঞ্জকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী। তাদের লক্ষ্য ১৯৮২ সালের মোাহামেডানের এবং ২০১২-১৩ মৌসুমের শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের মতো ‘ট্রেবল’ জেতা। এজন্য আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএ) শিরোপাটা নিজেদের করে নিতে হবে তাদের। কিন্তু তাদের এই স্বপ্নে বাগড়া দিতে বদ্ধপরিকর ‘দ্য কিংস’ খ্যাত বসুন্ধরা। যদিও ঘরোয়া ফুটবলের সব ট্রফি করায়ত্ত করেছে তারা (২ বার বিপিএল, ২ বার ফেডারেশন কাপ, ১ বার স্বাধীনতা কাপ ও ১ বার চ্যাম্পিয়নশিপ লীগ), কিন্তু এখন মোহামেডান-রাসেলের মতো ট্রেবল জিততে পারেনি তারা। এবার সেই স্বপ্নে তারা বিভোর। কিন্তু চলতি মৌসুমে কিংসের শুরুটা কিংসসুলভ হয়নি। স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে তারা হেরে যায়। আর নানা কারণে বাফুফের ওপর ভীতশ্রদ্ধ হয়ে ফেডারেশন কাপে অংশই নেয়নি। এর শাস্তিও তারা পেয়েছে আর্থিকভাবে এবং পরের বছরের এই আসরে না খেলতে পারার নিষেধাজ্ঞা পেয়ে! ফলে তাদের নিয়ে সমর্থকদের প্রত্যাশার বেলুন চপুসে গেছে স্বাভাবিকভাবেই। তারপরও ক্ষীণ একটি আশা আছে। সেটি বিপিএল ফুটবল। বিপিএলের শিরোপা জিতলে হয়তো ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না, কিন্তু যা প্রাপ্তি হবে, সেটাও কম রোমাঞ্চকর হবে নাÑ হ্যাটট্রিক শিরোপা অর্জন! এ প্রসঙ্গে কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘যেহেতু আমাদের নিয়ে সমর্থকদের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল, সেহেতু রানার্সআপ হওয়াটা কোন সাফল্য নয় তাদের কাছে। স্বাধীনতা কাপে আমাদের ইনজুরি সমস্যা ছিল, তাই পারিনি। তবে এখন আমাদের লক্ষ্য লীগে হ্যাটট্রিক শিরোপা জেতা। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে লীগের হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে।’ ইমরুল মনে করেন, আসন্ন লীগ গত কয়েক বছরের চেয়ে আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। কারণ প্রতিটা দলই ভালমানের বিদেশ খেলোয়াড় সংগ্রহ করেছে। এটা কিন্তু ফুটবলের জন্য ভাল। ক্লাব পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়লে তা নিঃসন্দেহে জাতীয় দলের জন্য ভাল।’ তবে ঘরোয়া ফুটবলের পাশাপাশি কিংসকে বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলেও। এবার তারা এএফসি কাপে খেলবে সরাসরি মূলপর্বে, ডি গ্রুপে। গতবার অসাধারণ খেলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের বিদায় নিতে হয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকেই। এবার গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে যেতে চায় তারা। সেক্ষেত্রে পরবর্তী ফিফা উইন্ডোতে ভালমানের একাধিক বিদেশী ফুটবলার দলে ফেরানোর আভাস দিয়েছেন ইমরুল।
×