ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ১০

প্রকাশিত: ২১:১৯, ২২ জানুয়ারি ২০২২

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ১০

অনলাইন ডেস্ক ॥ সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও উত্তরপত্র সরবরাহের অভিযোগে এক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগে শুক্রবার দুপুর ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মিরপুর, কাকরাইল ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। শনিবার তাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিজিএ) বরখাস্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান আজাদ নোমান সিদ্দিকী, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরীন রূপা এবং মাহমুদুল হাসান আজাদ, আল আমিন রনি, নাহিদ হাসান, শহীদ উল্লাহ, তানজির আহমেদ, রাজু আহমেদ, হাসিবুল হাসান ও রাকিবুল হাসান। হাফিজ জানান, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ছয়টি ইয়ার ডিভাইস, মাস্টার কার্ড, ছয়টি মোবাইল সিম হোল্ডার, পাঁচটি ব্যাংকের চেক, সাতটি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ১০টি স্মার্ট ফোন, ছয়টি বাটন মোবাইল, ১৮টি প্রবেশপত্র এবং ফাঁস হওয়া তিন সেট প্রশ্নপত্র জব্দ করা হয়। প্রতিরক্ষা মহা হিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০টি পদের বিপরীতে অডিটর পদে নিয়োগে শুক্রবার ৭০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হয়। ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ বলেন, “ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের কাছে তথ্য ছিল- এর আগেও বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হওয়া কয়েকজন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল অ্যাপস এবং ব্যক্তি পরিবর্তন করে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, উত্তর সমাধান করে সরবরাহ করতে পারে। “এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কাকরাইলের নিউ শাহিন হোটেল থেকে অসদুপায় অবলম্বনকারী দুই পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কাফরুল সেনপাড়া পর্বতা এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ডিভাইস, প্রশ্নপত্র ও উত্তর পত্রের খসড়াসহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়।” তিনি বলেন, “গোয়েন্দা পুলিশের আরেকটি দল বিজিপ্রেস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে পরীক্ষার্থী এবং প্রশ্ন ফাঁসের অন্যতম পরিকল্পনাকারী মাহবুবা নাসরীন রূপাকে ২ লাখ টাকা এবং ডিজিটাল ডিভাইসসহ গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের গ্রেফতার করে।” হাফিজ বলেন, গ্রেফতারদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান আজাদ, নাহিদ হাসান, আল আমিন প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ২০১৩, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালেও গ্রেফতার হয়েছিলেন। গ্রেফতার ব্যক্তিরা বিভিন্ন অ্যাপ ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার হল থেকে প্রশ্ন ফাঁস করা, বাইরের রুমে ওয়ানস্টপ সমাধান কেন্দ্র বসিয়ে স্মার্ট ওয়াচ, এয়ার ডিভাইস, মোবাইল এসএমএসসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহ করার কাজ করতেন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, বিভিন্ন ব্যাংক, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন অধিদফতর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন হিসাব নিরীক্ষক কার্যালয়, জ্বালানি অধিদফতর, সমবায় অধিদফতর, খাদ্য অধিদফতর, সাধারণ বীমা করপোরেশনসহ অন্যান্য সংস্থার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং উত্তরপত্র সরবরাহ করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা।
×