নিজস্ব সংবাদদাতা, ভৈরব ॥ ভৈরব থানার এস আই মোঃ ইসমাইল চোরাচালানীদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ৩৩ টি মোবাইল ও দেড় লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) জানেনা এখবর। এছাড়াও এই পুলিশ অফিসার গ্রেফতারী পরোয়ানার আসামী ধরতে গিয়ে বাসায় আসামী না পেয়ে তার বাসা থেকে ৮ হাজার টাকা জোর করে নিয়ে আসে বলে আরও এক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে ভৈরব থানার এস আই মোঃ ইসমাইল স্থানীয় নাটাল মোড় এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান অবৈধ মোবাইল ও দেড় লাখ টাকাসহ ৪ আসামীকে আটক করে। আটককৃত আসামীরা হলো লিমন (২৪), মোঃ আলী (৪৭), সিয়াব (১৯) ও আশরাফুল জহির (২০)। পরে তাদেরকে থানায় নিয়ে যায় এই পুলিশ। থানায় নেয়ার পর ২২৪ টি অবৈধ মোবাইল জব্দ করলেও দেড় লাখ টাকার কথা অফিসার ইনচার্জকে অবগত করেনি। এবিষয়ে গতকাল শুক্রবার পুলিশ বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলায় ২২৪ টি মোবাইল ফোন জব্দ দেখালেও দেড় লাখ টাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি এজাহারে।
আসামীদের কাছে মোট মোবাইল ছিল ২৫৭ টি এবং টাকা ছিল দেড় লাখ। ধারনা করা হচ্ছে এস আই ইসমাইল ৩৩ টি বিদেশী মোবাইলসহ দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। তবে ইসমাইল এসব কথা অস্বীকার করে। থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম মোস্তফা ( পিপিএম) এখবর শুনে হতবাক হন এবং টাকার বিষয়টি কিছুই জানেনা বলে জানান।
এবিষয়ে এস আই ইসমাইলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি গণনায় ২২৪ টি বিদেশী মোবাইল পেয়েছি। বাকী ৩৩ মোবাইলের কথা আমি জানিনা। টাকার কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, কিছু টাকা পেয়েছি যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট জমা দিয়েছি। কত টাকা জানতে চাইলে তিনি বলেন আইও'র সাথে যোগাযোগ করলে জানতে পারবেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে তিনি দাবী করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রফিকুল ইসলামের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, গতরাতে মামলার তদন্তটির দায়িত্ব পেয়েছি। জব্দকৃত ২২৪ টি মোবাইল ও ৯৬ হাজার টাকা নগদ পেয়েছি। এজাহারে টাকার কথা উল্লেখ নেই কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন এবিষয়ে আমি এখনও কিছুই জানিনা। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বিষয়টি জানব বলে তিনি জানান।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ গোলাম মোস্তফা (পিপিএম) 'র সাথে শনিবার বিকেলে মোবাইলে কথা হয়। এবিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা উদ্ধারের খবরতো আমি জানিনা। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন আপনি এখবর কোথায় পেলেন। এসময় এই প্রতিনিধি বলেন, এস আই ইসমাইল আমার কাছে টাকার কথা স্বীকার করেছে এবং উদ্ধারকৃত টাকার মধ্য ৯৬ হাজার টাকা তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট জমা আছে বলে স্বীকার করেছে । একথা শুনে তিনি হতবাক হন। এসময় তিনি বলেন, অনেক সময় ঘটনার সব খবর আমি নিতে পারিনা। তিনি বলেন কোন কোন ঘটনায় এজাহারে টাকা উল্লেখ করা যায়না। কারো ব্যক্তিগত টাকা থাকলে এটাকা এজাহারে উল্লেখ করা হয়না। টাকার পরিমান ৫৪ হাজার কম হয়েছে যা আসামীদের দাবী। একথার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি খোঁজখবর।