ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘স্বাধীন রাষ্ট্র ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন’

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ২১ জানুয়ারি ২০২২

‘স্বাধীন রাষ্ট্র ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন’

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাঙালি সত্তা, বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। বাংলাদেশকে ঘিরে তাঁর স্বপ্ন ছিল 'সোনার বাংলা' প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু ১৫ই আগস্টের হত্যাকা-ের কারণে তাঁর সেই স্বপ্ন তিনি পূরণ করে যেতে পারেননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বঙ্গবন্ধুর 'সোনার বাংলা'র দিকে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। একই কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্ববাসীর কাছে আজ এক বড় বিস্ময়! জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ^বিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু প্রফেসরিয়াল ফেলো ও বাংলাদেশ চেয়ার প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ এসব কথা বলেছেন। জার্মানির ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটে 'বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও রাজনৈতিক দর্শন' শীর্ষক এক পাবলিক লেকচার অনুষ্ঠানে বৃহষ্পতিবার এসব কথা বলেন তিনি। পাবলিক লেকচারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ড. রশিদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া। সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. রাহুল মুখার্জি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন প্রফেসর ড. হ্যান্স হাডার। প্রধান বক্তার বক্তব্যে ড. হারুন-অর-রশিদ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও সংগ্রামের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, "বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রভাবনা ছিল ভারতের পূর্বাঞ্চলে (বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকা) বাঙালির জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যা দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম শেষে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল 'দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো', বাঙালি সত্তা ধারণ ও বাঙালির জন্য পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বঙ্গবন্ধু আজীবন গণতান্ত্রিক ও শাসনতান্ত্রিক পন্থায় রাজনৈতিক চর্চা করেছেন। তিনি কখনোই সহিংস রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। শান্তিপূর্ণ পন্থায় বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ না থাকায় এবং ইয়াহিয়া খান কর্তৃক বাঙালির উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালিদের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান।" বাংলাদেশ চেয়ার ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তৎকালীন উগ্র ও চিনাপন্থী বিভিন্ন বিরোধীদল, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী মহল যুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্ট নবীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এক ধরনের অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করলে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলা করে নবীন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষা ও তাঁর চির আরাধ্য 'দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো'র লক্ষ্য অর্জনে ১৯৭৫ সালে দ্বিতীয় বিপ্লব বা ঝুংঃবস ঈযধহমব নামে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ঠিক এমনই এক অবস্থায় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের নীল নকশা অনুযায়ী তাঁকে সপরিবারে অত্যন্ত নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী, দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি, ড. মার্টিন গেইজেল ম্যান, ড. পিটার ডিটার, প্রফেসর সুব্রত কে মিত্র, ড. উল্ফম্যান পিটারসহ বিপুল সংখ্যক অধ্যাপক, গবেষক ও ফ্যাকাল্টি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে একটি রিসিপশনের আয়োজন করা হয়।
×