ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নায়িকা শিমুকে হত্যার দায় আদালতেও স্বীকার করলেন স্বামী

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ২১ জানুয়ারি ২০২২

নায়িকা শিমুকে হত্যার দায় আদালতেও স্বীকার করলেন স্বামী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চিত্রনায়িকা রাহিমা আক্তার শিমু ওরফে রাইমা ইসলাম শিমুকে (৪১) হত্যার দায় আদালতেও স্বীকার করেছেন তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল। পারিবারিক কলহের জেরেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নোবেল। বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন আদালতে এই হত্যার দায় স্বীকার করেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার। এদিকে এ হত্যাকা-ের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের দুদিনের মধ্যেই হত্যার দায় স্বীকার করে শিমুর স্বামী। বৃহস্পতিবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন নোবেল। তবে শিমুর সহকর্মীরা অভিযোগ করেন, এই হত্যার পেছনে আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মডেল জানান, দীর্ঘদিন শিল্পী সমিতির সদস্যপদ নিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন শিমুসহ ১৮৪ জন। শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের সঙ্গেও দ্বন্দ্ব চলছিল শিমুর। হত্যার খবর পাওয়ার পরপরই শিমুর ভাই ও বোন এই হত্যার জন্য জায়েদ খানকে ইঙ্গিত করেন। পরবর্তীতে শিমুর লাশ উদ্ধারের পর শিমুর ছোট ভাই খোকনকে সঙ্গে নিয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার সামনে ফেসবুকে লাইভে আসেন জায়েদ খান। লাইভে শিমুর ভাই অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে যান। ওই সূত্র আরও জানান, গত ১২ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে একটি রুল জারি করা হয়। উচ্চ আদালতের রুলে ১৮৪ জনের সদস্যপদ কেন বহাল রাখা হবে না তা ১০ দিনের মধ্যে আদালতকে জবাব দিতে বলা হয়। এই ঘটনার ৩ দিন না পেরুতেই শিমুকে হত্যা করা হয়। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিমুর স্বামীর বাড়িতে থাকলেও স্বামীর সঙ্গে প্রায় ছাড়াছাড়ি অবস্থায় ছিল। বাড়ি ভাড়ার টাকাও তুলে নিতেন শিমু। এসব কারণে প্রায় ঝগড়া হতো তাদের মধ্যে। এদিকে মামলার তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মামলা দায়েরের মাত্র একদিনের মধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) পরিবর্তন করা হয়েছে। ১৮ জানুয়ারি নিহতের ভাই মোঃ হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই তদন্ত কর্মকর্তা করা হয় কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই চুন্নু মিয়াকে। তার পরিবর্তে বৃহস্পতিবার আইও করা হয় ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলামকে। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া বলেন, আগের আইও ছিল সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার। তাই ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার একজনকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একটু অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছে। মৃত্যুর পরদিনই শিল্পী সমিতির সদস্য হলেন শিমু ॥ এদিকে শিমু মৃত্যুর পরদিনই সমিতির সদস্য হয়ে গেলেন অনায়াসে। শিমুর মৃত্যু বেশ মোটা দাগে প্রভাবিত করেছে চলমান শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে। ২০১৭ সালে মিশা-জায়েদ প্যানেল কমিটি ক্ষমতায় আসার পর শিমুর ভোটাধিকার কেড়ে নেয়। তার সদস্যপদ বাতিল করে দিয়ে সহযোগী সদস্য করা হয়। সদস্য হিসেবে সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ছিলেন। সেই ক্ষোভে নিজের ভোটাধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করেছিলেন শিমু।
×