ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপি জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২০ জানুয়ারি ২০২২

বিএনপি জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দীর্ঘদিনের আকাক্সিক্ষত নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের মহৎ উদ্যোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি নেতাদের বিভ্রান্তিকর মন্তব্য ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দসহ একটি চিহ্নিত মহল নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের মহৎ উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তাদের চিরাচরিত অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে। দেশের বিশিষ্টজন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহ সংবিধানের নির্দেশনা মেনে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে যেখানে স্বাগত জানিয়েছেন, সেখানে বিএনপি ও তাদের দোসর দেশবিরোধী অপশক্তি দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য প্রদান করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক সংগঠন, সমাজের বিশিষ্টজন ও সংশ্লিষ্টদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার কর্তৃক নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ এবং ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এ সংক্রান্ত খসড়া আইন অনুমোদন পাওয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, সংসদীয় রীতি অনুযায়ী খসড়া আইনটি সংসদে উত্থাপনের পর আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সেখান থেকে সুপারিশ আকারে সংসদের বৈঠকে উঠবে এবং সংসদীয় বিধান অনুযায়ী সংসদে আলোচনার মধ্য দিয়ে আইনটি চূড়ান্ত হবে। জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল এবং বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যগণ তাদের মতামত ও প্রস্তাব উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন। অথচ গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার না মেনে পূর্ব নির্ধারিত দুরভিসন্ধি অনুযায়ী বিএনপি নেতৃবৃন্দ এই আইন নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও স্বৈরতন্ত্রের গর্ভে জন্ম নেয়া এবং ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের আবর্তে পরিচালিত বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান সব সময়ই গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াবিরোধী। যেকোন উপায়ে ক্ষমতা দখল ও গোষ্ঠী স্বার্থ চরিতার্থের অভিপ্রায়েই নির্ণিত হয় বিএনপির রাজনৈতিক গতিপথ। তাই বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত না জানিয়ে বিষয়টি নিয়ে অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে। আইনটি নিয়ে বিএনপি নেতবৃন্দের সুস্পষ্ট ধারণা না থাকার জন্যই তারা অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কারণ তাদের জন্মই হলো সাংবিধানিক ও প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে চোরাগুপ্তা পথে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে। এই আইন প্রণয়ন নিয়ে কোন ধরনের লুকোচুরি করা হয়নি; রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে এ বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক রীতি ও প্রক্রিয়াকে ভয় পায় বলেই বিএনপি সংলাপে অংশগ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কমিশন গঠনে সকল স্টেকহোল্ডার তথা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহ দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ই ২০১২ ও ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের আলোকে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। ওই দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন গঠন আইন প্রণয়নের দাবি জানায়। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিও তখন অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছিল। নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলসমূহের সদ্য সমাপ্ত হওয়া সংলাপে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহ নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে। আওয়ামী লীগও সংলাপে অংশগ্রহণ করে এই আইন প্রণয়নের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ও সুদৃঢ় ভিত্তি রচনায় সকল ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতিকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়। গণতন্ত্রের শিশুকে আঁতুড় ঘরেই হত্যা করা হয়। এরপর দীর্ঘ স্বৈরশাসনের নাগপাশে আবদ্ধ হয় বাংলাদেশ। অতঃপর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। তদুপরি ’৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকায় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বার বার বাধাগ্রস্ত হয়।
×