ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সেমিনার

আমেরিকান সেন্টার অফ রিজেনারেটিভ মেডিসিনের সাফল্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ১৮ জানুয়ারি ২০২২

আমেরিকান সেন্টার অফ রিজেনারেটিভ মেডিসিনের সাফল্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

অনলাইন ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে “ডিসকভারিং হেলথ উইথ মডার্ণ রিজেনারেটিভ মেডিসিন” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার(১৭ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব লোকমান হোসেন মিয়া। অনুষ্ঠানে কী-নোট স্পিকার হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ইন্টিগ্রেটেড হেলথ এর প্রফেসর ডক্টর মুজিবুল হক। ডিসিএজি সিনিয়র জনাব এম মাহবুবুল হকসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এবং ডিজি হেলথ এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রিজেনারেটিভ মেশিনের ওপর প্রশিক্ষিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ইন্টেগ্রেটিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মুজিবুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এখন গতানুগতিক ওষুধনির্ভর চিকিৎসা ব্যবস্থার একটি উত্তম বিকল্প ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তিনি বলেন, ঔষুধ মানুষকে সাময়িকভাবে সুস্থ করলেও দীর্ঘমেয়াদে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত অনেকগুলো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে কম ক্ষতিকারক বা কম পার্শপ্রতিক্রিয়া সম্পন্ন প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি রিজেনারেটিভ মেডিসিন মানুষকে আশার আলো দেখাচ্ছে। প্রফেসর ডাক্তার মুজিবুল হক বলেন, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, উন্নত খাদ্যাভ্যাস এবং প্রয়োজনীয় ব্যায়ামের মাধ্যমে একজন মানুষ রোগকে চিরতরে বিদায় করতে পারে। বিশেষ করে যেসব রোগকে মরণব্যাধি হিসেবে আখ্যা দেয়া হচ্ছে অথবা এমন কিছু রোগ যেগুলো চিকিৎসা অত্যন্ত জটিল এবং ব্যয়বহুল। সেসব রোগের চিকিৎসায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচার, ন্যাচারাল সাপ্লিমেন্ট, মডার্ন রেজেনেটিভ থেরাপি এবং ব্যায়াম তথা রোগের কারনগুলোকে চিকিৎসা করে রোগাক্রান্ত হওয়ার পথকে রুদ্ধ করে দেয়। ফলে একজন মানুষকে রোগা হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এজন্যে সবার আগে প্রয়োজন সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন খাবার পরিহার করে চলা। চিকিৎসা সেবায় ঢাকাস্থ 'আমেরিকান সেন্টার অফ রেজেনেরেটিভ হেলথ' এর চমৎকার সাফল্যও সেখানে তুলে ধরা হয়। ডক্টর মুজিবুল হক বলেন, গতানুগতিক স্বাস্থ্যব্যবস্থায় চিকিৎসকরা শুধু ওষুধের ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ওষুধের প্রয়োজনীয়তা আছে এ কথা সত্য। তবে জীবনব্যবস্থাকে যদি আপনি এমনভাবে গড়ে তুলতে পারেন যাতে রোগী হবে না। সে ক্ষেত্রে ওষুধের প্রয়োজনীয়তা একেবারেই গৌণ। এজন্য আমাদেরকে অস্বাস্থ্যকর ফাস্টফুড, জাঙ্ক ফুড, ভাজাপোড়া পরিহার করে চলতে হবে। যে সমস্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সেগুলো এড়িয়ে ভিটামিন সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থা সংশোধন করে সুস্বাস্থ্য গড়ে তুলতে হবে। ড. হক বলেন, সরকার যদি এমন একটি স্বাস্থ্যব্যবস্থা বা স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন করেন যার মাধ্যমে ওষুধের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসবে। কমে আসবে রোগ বিস্তারের প্রবণতাও। এর মাধ্যমে পুরো জাতিকে একটি সুস্থ জাতিতে রূপান্তর করা সম্ভব হবে। এজন্য সরকারের নীতিনির্ধারকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, সরকার ১৭ কোটি মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে চলেছে। নিত্যনতুন পলিসি নির্ধারণের মাধ্যমে দেশবাসীর জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার সদা সক্রিয়।এক্ষেত্রে ন্রিজেনারেটিভ মেডিসিন এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে যদি সব মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যবান করে গড়ে তোলা যায় তবে ওষুধের ব্যবহার কমে আসবে এবং চিকিৎসার পেছনে বর্তমানে যে পরিমাণ ব্যয় হয় সেটিও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এজন্য আরো বেশি গবেষণা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
×