ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিরবেই চলে গেলেন শেরপুরের সংস্কৃতিসেবী ক্ষমা চক্রবর্তী

প্রকাশিত: ১৭:১১, ১৮ জানুয়ারি ২০২২

নিরবেই চলে গেলেন শেরপুরের সংস্কৃতিসেবী ক্ষমা চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ অবশেষে নিরবেই চলে গেলেন শেরপুরে অন্যতম সংস্কৃতিসেবী অধ্যাপক ক্ষমা চক্রবর্তী (৬৫)। তিনি অযতœ-অবহেলায় রোগে-শোকে ধুকে-ধুকে দীর্ঘসময় কাটানোর পর সোমবার রাতে শহরের পুরাতন গরুহাটিস্থ নিজ বাসায় ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকের পথে পাড়ি জমান। তিনি ছিলেন আজীবন চীরকুমারী, বিশিষ্ট বাচিক ও সংগীত শিল্পী, নাট্যাভিনেত্রী, জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঝিনাইগাতীর শফিউদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রভাষক। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় শহরের শেরী শ্মশানে তাকে দাহ করা হয়। ওইসময় স্থানীয় সংস্কৃতিসেবী, শুভাকাঙ্খী ও আতœীয়-স্বজন উপস্থি ছিলেন। জানা যায়, ক্ষমা চক্রবর্তী শিক্ষা জীবন থেকেই উদীচীসহ নানা প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কবিতা-গান ও গীতিনাট্যে তিনি ছিলেন অনন্যা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় ¯œাতকোত্তর পাশের পর তিনি নিজ জেলা শেরপুরে ফিরে নব-প্রতিষ্ঠিত ডা. সেকান্দর আলী কলেজে যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি ঝিনাইগাতীর শফিউদ্দিন ডিগ্রী কলেজে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। পাশাপাশি স্থানীয় সাপ্তাহিক দশকাহনীয়া পত্রিকায় লেখালেখিসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে উতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। নিজের বাসাকেও গড়ে তোলেন সংস্কৃতির এক চর্চাশালা হিসেবে। যে কারণে সমবয়সীসহ অনেক অগ্রজ-অনুজ সংস্কৃতিসেবী ও কর্মীর প্রতিনিয়ত বিচরণ ছিলো তার অঘোষিত সংস্কৃতির পাঠশালায়। কিন্তু চিরকুমারী গুণি শিল্পী অধ্যাপক ক্ষমা চক্রবর্তীকে আস্তে-আস্তে পেয়ে বসে রোগে-শোকে। ফলে ক্রমেই তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। আর ওই অবস্থায় তিনি দীর্ঘ প্রায় এক দশক ধরে স্মৃতি বিভ্রম রোগে ভুগছিলেন। এ জন্য তিনি ওইসময়কাল থেকে কাউকে চিনতে পারতেন না। অসুস্থ্যতার কারণে সময়ের আগেই চাকুরী জীবন থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিজ বাসাতেই সময় পাড় করছিলেন। পিতা-মাতা আগেই বিগত হওয়ায় জীবনের ওই ক্রান্তিলগ্নে তার সেবাশুশ্রূষায় পাশে ছিলেন বড় বোন মিনু ও ভাগ্নে অপূর্ব ভট্টাচার্য। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, দীর্ঘ ওই ক্রান্তিলগ্নে তিনি ছিলেন একেবারেই অবহেলিত ও উপেক্ষিত। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও সাংস্কৃতিক কোন সংগঠনের তরফ থেকেই তার সহায়তায় বাড়ানো হয়নি হাত। তবে, তার প্রয়াণে ফেসবুকে তাকে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। তাদের উদাসীনতায় অনেকেই করছেন বিদ্রুপ মন্তব্যও।
×