ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপদে থাকুক শিশু

প্রকাশিত: ০০:০৩, ১৭ জানুয়ারি ২০২২

নিরাপদে থাকুক শিশু

এখন শীতের ঠান্ডা আমেজ। সর্দি, কাশি, জ্বর লেগে থাকার আশঙ্কাই বেশি। আর সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুটির ক্ষেত্রে তো আরও সতর্ক সাবধানতায় থাকতে হয়। বিশ্বময় চলছে এখন করোনার মহাদুর্যোগ। সেই ২০২০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই ছোঁয়াচে ভাইরাসটি এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য রূপান্তরের মধ্য দিয়ে নিত্য জীবনকে অসহনীয় করে তুলছে। সব বয়সের মানুষরাই আতঙ্কে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। করোনার নবসংস্করণ ওমিক্রন ও তার বিস্তার অব্যাহত রাখার দৃশ্য সত্যিই আশঙ্কাজনক। আর ছোট্ট কোমলমতি শিশুকে তো রাখতে হয় পরম যত্ন আর সতর্ক পরিচর্যায়। শীতকালের জন্য নিতে হয় বাড়তি প্রস্তুতি। প্রতি মুহূর্তে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার বিব্রতকর অবস্থা মাকে অস্থির করে তোলে। দশ মাস দশদিন মায়ের জঠরে থাকা শিশুটি এক প্রকার নিরাপত্তার বলয়ে আবর্তিত থাকে। আবার পৃথিবীর আলো দেখা সন্তানটিও পরম নির্ভয়ে মায়ের সযত্ন পরশে সব আপদ বালাই থেকে মুক্তও থাকে। এ জন্য মাকেও থাকতে হয় সুস্থ, সবল এবং নিরাপদ। একজন সুস্থ মা-ই জাতিকে উপহার দিতে পারে এক সম্ভাবনাময় প্রজন্ম। সঙ্গতকারণে মাকেই সব সময় সজাগ সচেতনতায় সন্তানটির দেখভাল করতে হয়। অসহায়, অবোধ শিশুটি বুঝতেও পারে না। তার কখন কিসের দরকার। ঠান্ডা, গরম কোন অনুভূতিই সে প্রকাশ করতে পারে না। স্নেহময়ী মাকেই বুঝে নিতে হয় বাচ্চার শারীরিক অনুভব অনুভূতিগুলো। শীতকাল মানেই ছোট্ট শিশুটিকে ঠান্ডার আমেজ থেকে সুরক্ষা দিতে যা যা প্রয়োজন সবটাই বুঝতে পারে মা নিজেই। শীতবস্ত্র পরানো থেকে শুরু করে কোমল ত্বকের সার্বক্ষণিক যত্ন আত্তি সবই সামলাতে হয় মাকেই। শিশুর নরম ত্বক যেমন সংবেদনশীল একইভাবে স্পর্শকাতরও। এলার্জিজনিত সমস্যা লেগেই থাকে। আবার কচি বাচ্চাটির শ্বাসযন্ত্রও সব সময় নিরাপদ থাকে না। ঠান্ডা, কাশি লেগেই থাকে। সঙ্গে জ্বর জ্বর ভাবও শিশুটিকে কাহিল করে তোলে। তবে মা-ই কঠোর নজরদারিতে শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে বিশেষভাবে আমল দিয়ে থাকেন। ঠান্ডা থেকে সুরক্ষা দিতে গরম পোশাক যেমন জরুরী- একইভাবে শিশুটি অত্যধিক ভারি কাপড়ে ঘেমে যাওয়াটাও খেয়াল রাখতে হয়। কারণ ভারি পোশাকের সঙ্গে ঘেমে গেলে তা শরীরে বসে যায়। ফলে সেখান থেকে পুনরায় ঠান্ডা লাগাটাও বিচিত্র কিছু নয়। তাই কিছুক্ষণ পরপর মাথায় পিঠে হাত দিয়ে বুঝতে হবে শিশুটি ঘামছে কিনা। তাহলে হাল্কা পাতলা ফ্লানিল কাপড়ের পোশাক পরানো আবশ্যক। শিশুর কোমল ত্বকের জন্যও ফ্লানিল কাপড় অনেক বেশি উপযোগী। অবশ্য মাকেই এসব তদারকি করে সব বুঝে নিতে হয়। মধু শিশুর শরীরের জন্য অনেক জরুরী। লেবু-মধু মেশানো গরম পানীয় শিশুর শ্বাসযন্ত্রকে অনেক সুরক্ষিত রাখে। মধু শ্বাস এবং হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। শুধু তাই নয় শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাতেও মধুর বিকল্প নেই। তাই শুধু ওষুধ খাইয়ে শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা হয় না। তবে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে অবশ্যই ওষুধও সেবন করাতে হবে। নিয়মিত লেবু মধুপান স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে। শীতকালে কুসুম গরম পানিতে বাচ্চাকে গোসল দেয়া ও স্বাস্থ্যবিধির আওতায় মাথায় পানি পরিমিত ঠান্ডা পানি দেয়া বাঞ্ছনীয়। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে বুকে যেন কোনভাবে ঠান্ডা না লাগে। আবার শ্বাসযন্ত্রেও কোন প্রদাহ যেন বিপত্তির কারণ না হয়। ত্বকের জন্য বাচ্চাদের শীতকালীন লোশন অত্যন্ত যত্নসহকারে মাখানো দরকার। অলিভওয়েল ও শিশুর ত্বকের পরিচর্যায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। শীতকালটা বাচ্চাদের খুব বিপদকাল। নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলো যেন কোনভাবেই তৈরি হতে না পারে সেদিকেও বিশেষ যত্নবান হওয়া উচিত। ঠান্ডা লেগে শিশুটি যদি অসুস্থ হয় তাহলে মা ও সুস্থ স্বাভাবিক থাকতে পারে না। তবে নিত্য কিছু নিয়মবিধি অনুসরণ করলে ঠান্ডার সময়ও শিশু ভাল থাকবে মাকেই অবশ্যই যত্নশীল হতে হয়। যাপিত জীবন প্রতিবেদক
×